বিয়ানীবাজারে সড়ক সংস্কারে ঠিকাদার পাচ্ছে না এলজিইডি !
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ মে ২০১৯, ১২:১৪ পূর্বাহ্ণ
শহিদুল ইসলাম সাজু:
গত তিন বছর ধরে বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়কের গর্ত-খানাখন্দের কারণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কয়েক উপজেলার মানুষ। অথচ সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার সংস্কার কাজের জন্য ঠিকাদার পাচ্ছে না এলজিইডি। এর মধ্যে দু’বার টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। কোনো ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সাড়া না দেওয়ায় তৃতীয়বারের মতো টেন্ডার আহ্বানের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সংশ্নিষ্ট দপ্তরের অনুমোদন চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে উপজেলা প্রকৌশল অফিস।
সড়ক সংস্কার কাজে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের আগ্রহ না থাকা এবং স্থানীয়ভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তৈরি না হওয়াকে দায়ী করেছে উপজেলা প্রকৌশল অফিস। একই সঙ্গে নির্মাণ শ্রমিকের স্বল্পতা ও পারিশ্রমিক বেশি থাকায় ঠিকাদাররা সংস্কার কাজে আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
তবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, সংস্কার কাজের ‘রেট সিডিউল’ বাজার দরের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়াই মূল কারণ। উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, সড়কের প্রথম সাড়ে ৪ কিলোমিটার সংস্কার কাজের জন্য গত ১৪ মার্চ প্রথমবার এবং ১৫ এপ্রিল দ্বিতীয়বার ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টেন্ডার সিডিউল ক্রয় না করায় তৃতীয়বারের মতো টেন্ডার আহ্বান করতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, সড়ক সংস্কার কাজের জন্য রেট সিডিউলে ১৫০ লিটারের একটি বিটুমিন ড্রামের দাম ধরা হয়েছে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। গত মার্চে এক ড্রাম বিটুমিনের বাজার দর ছিল ১০ হাজার টাকার বেশি। সিডিউলে উল্লিখিত রেটের চেয়ে প্রায় ২৫০০ টাকা বেশি। একইভাবে ইট, বালু, পাথরসহ নির্মাণসামগ্রীর দর বাজারের বর্তমান দরের চেয়ে ‘রেট সিডিউলে’ কম থাকায় ঠিকাদাররা সড়কের সংস্কার কাজে অনাগ্রহী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক ঠিকাদার বলেন, আগের চেয়ে এখন সব কাজে ব্যয় বেড়েছে। নির্মাণসামগ্রীর পাশাপাশি বেড়েছে সংশ্নিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের রেটও (উৎকোচ)। যার কারণে আমরা ঠিকাদাররা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছি না। ঠিকাদার শফিউর রহমান বলেন, রেট সিডিউল বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়। এ ছাড়া প্রতিকূল আবহাওয়া এবং সড়কের পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা নাজুক। সব কিছু বিবেচনা করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো ঝুঁকি নিতে চাইছে না।
উপজেলা প্রকৌশলী রামেন্দ্র হোম চৌধুরী বলেন, ‘বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়কের রেট সিডিউলের সঙ্গে বাজার দরের গড় তেমন একটা পার্থক্য নেই। তবুও কেন ঠিকাদাররা সংস্কার কাজে আগ্রহী না, সেটি বুঝতে পারছি না। তিনি বলেন, তৃতীয়বার টেন্ডার আহ্বানের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি- আশা করি এবার ঠিকাদার পাওয়া যাবে। নির্মাণ সামগ্রীর বাজার দর আগের চেয়ে কমেছে।’