মৌলভীবাজারে শ্যালিকাকে হত্যার পর স্ত্রী-সন্তানকে খুনের চেষ্টা!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ মে ২০১৭, ৬:৪৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে ছুরিকাঘাতে শ্যালিকাকে হত্যার পর স্ত্রী ও শিশু সন্তানকেও খুনের চেষ্টা করেছেন সালাউদ্দীন নামে এক ব্যক্তি। পরে ওই ব্যক্তি নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন, বলে জানিয়েছেন স্বজনেরা। মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের পাবই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গ্রামবাসী ওই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
আটক ব্যক্তির নাম মো. সালাউদ্দীন (৩২)। তিনি একই জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া গ্রামের মো. আলাউদ্দীনের ছেলে। নিহত শ্যালিকার নাম মণি বেগম (১৬)। সে পাবই গ্রামের মৃত মছলু মিয়ার ছোট মেয়ে। তারা দুই বোন, তিন ভাই। ১০নং হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল বাছিত এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হতাহতদের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বছর খানেক আগে মৃত মছলু মিয়ার বড় মেয়ে রায়না বেগমকে (২২) বিয়ে করেন সালাউদ্দীন। এটি তাঁর দ্বিতীয় বিয়ে, এই দম্পতির ছয় মাস বয়সী মাসুম নামে এক পুত্র সন্তান রয়েছে। কয়েক দিন আগে পারিবারিক কলহের জের ধরে রায়না বেগম শিশুপুত্রকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। গত রবিবার শ্বশুর আলাউদ্দীন তাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে এলে তিনি যাননি। এরপর সোমবার সন্ধ্যায় সালাউদ্দীন নিজে স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে শ্বশুরবাড়ি যনি। স্ত্রী রায়না এতে রাজি না হওয়ায় দুজনের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়।
স্বজনরা আরও জানান, ওই সময় শ্যালিকা মণি বেগম নিজেও এই ঝগড়ায় অংশ নেয়। একপর্যায়ে সালাউদ্দীন হাতে থাকা ছুরি দিয়ে শ্যালিকাকে উপর্যুপরি আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এসময় ছুরিকাঘাতে স্ত্রী রায়না ও সন্তান মাসুমকেও খুনের চেষ্টা করে সে। আশপাশের লোকজন তখন ‘ধর ধর’ বলে চিৎকার করলে সালাউদ্দীন বাড়ির উঠান থেকে দৌড়ে আরেক ঘরে ঢুকতে গেলে দরজার চৌকাঠে তার মাথা ফেটে যায়। পরে তিনি মুখের ভেতর কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
রায়না বেগমের বড় ভাই মজিদ মিয়া বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে তার বোনকে মারধরসহ নির্যাতন করা হতো। এ ঘটনায় এক সপ্তাহ আগে তিনি বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। মঙ্গলবার সকালে সালাউদ্দীন ঝগড়ার একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করে মণিকে হত্যা করে এবং রায়না ও শিশুপুত্র মাসুমকে আহত করে। পরে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।’ রায়না ও মাসুমকে প্রথমে কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামছুদ্দোহা বলেন, ‘থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) সাব্বির আহমদ ঘটনাস্থলে গিয়ে সালাউদ্দীনকে আটক করেছে। ছুরিটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরর প্রস্তুতি চলছে।’