উপদেষ্টার আগমনে তড়িঘড়ি করে চলছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক মেরামত
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ৬:২১ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্কঃ
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে দীর্ঘদিনের যানজট নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। মহাসড়কের সরাইল বিশ্বরোড এলাকায় ভাঙন অংশ সমতল করতে তিন স্তরে ইট বিছানো হচ্ছে।
আগামীকাল বুধবার এ এলাকা পরিদর্শনে আসছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। স্থানীয় লোকজন বলছেন, উপদেষ্টার আগমন উপলক্ষে তড়িঘড়ি করে সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। উপদেষ্টা চলে গেলে আবার ইট তুলে ফেলা হবে। তারা মনে করছেন, এটি অর্থের অপচয়। তবে সওজ কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি সংস্কার নয়, মেরামতকাজ, ইট সরানো হবে না, বরং স্থায়ী সমাধানের অংশ হিসেবেই কাজটি চলছে।
সওজের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা কার্যালয়সহ স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে দীর্ঘ যানজট নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে গত শনিবার নির্দেশ আসে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরাইল বিশ্বরোড অংশে যানজট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। এরপর শনিবার বিকেল থেকেই সরাইল বিশ্বরোড গোলচত্বর এলাকায় সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করে সওজ। সেখানে তিন স্তরে ইট বিছানোর কাজ চলছে। গোলচত্বর অংশে ১২ মিটার প্রস্থ ও ১৮৫ মিটার দৈর্ঘ্য, আর গোলচত্বর থেকে সিলেটমুখী সরাইল কুট্টাপাড়া খেলার মাঠ পর্যন্ত ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থে তিন স্তরে ইট ও বালু বিছানো হচ্ছে। ঢাকা, কুমিল্লা, মুন্সিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে তৈরি ইট আনা হচ্ছে। এখানে মোট চার লাখ ইট বিছানো হবে।
সওজের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বুধবার সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ঢাকা থেকে ট্রেনে ভৈরবে এসে সড়কপথে সরাইল বিশ্বরোডে যাবেন। তিনি সেখানে গোলচত্বরের ভাঙন, যানজট এলাকা ও মেরামতকাজ পরিদর্শন করবেন।
এ বছরই সমাবর্তন ও ছাত্রসংসদ নির্বাচন পাচ্ছে বেরোবিএ বছরই সমাবর্তন ও ছাত্রসংসদ নির্বাচন পাচ্ছে বেরোবি
প্রকল্প ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ বলেন, কিছু স্থানীয় সড়ক বিভাগ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক কর্তৃপক্ষকে দিয়ে সড়কের ৬০০ থেকে ৭০০ মিটার অংশের মেরামতকাজ চলছে। চার লেন প্রকল্প এখানে কিছুই করছে না।
সওজ, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ আট বছর ধরে ধীরগতিতে চলছে। ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশীয় অর্থ ও ভারতীয় ঋণে চলমান প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ভারতীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা কাজ ফেলে দেশে ফিরে যান। প্রায় তিন মাস পর তারা ফিরে এসে কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে তাদের অনেক মালামাল খোয়া যায়। ৫ আগস্টের পর প্রকল্পের কাজের গতি আরও কমে যায়। প্রতিষ্ঠানটির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত মাসের শেষে বাংলাদেশ সরকার অতিরিক্ত ১৬৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়।
এ বিষয়ে প্রকল্পের ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ বলেন, প্রকল্পের সমস্যা সমাধানে ১৬৩ কোটি টাকা নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশা করি, আগামী দুই মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
দীর্ঘদিন ধরে চলমান জনদুর্ভোগের মধ্যে এত দিন কেন কাজ শুরু করা হয়নি- এ বিষয়ে জানতে চাইলে সওজের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এটি কোনো সংস্কারকাজ নয়, বড় একটি কাজ। আমরা নির্দেশনার অপেক্ষায় ছিলাম। নিজেরা বড় উদ্যোগ নিলে প্রশ্ন উঠত। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পরই স্থায়ী সমাধানের অংশ হিসেবে আমরা কাজে হাত দিয়েছি।
সওজের কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মোহাম্মদ তারেক ইকবাল বলেন, জরুরি ভিত্তিতে জনদুর্ভোগ লাঘবে সওজের উদ্যোগে কাজ শুরু হয়েছে। এখান থেকে ইট সরানো হবে না। তিন স্তরের ইট বিছানো হলে যানজট সৃষ্টি হবে না








