সিলেটে যুবদল নেতার নেতৃত্বে ৩০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি দখলের চেষ্টার অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জুলাই ২০২৫, ৪:৪০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেট নগরীর কদমতলী এলাকায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের ৮৪ শতক পারিবারিক সম্পত্তি জবরদখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। সিলেট মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি বেলাল আহমদের নেতৃত্বে এ অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
সোমবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন স্থানীয় কদমতলী এলাকার মৃত আফরোজ বক্সের স্ত্রী মোছা. সুনারা বেগম।
তিনি সিলেট মহানগর ২৬ ওয়ার্ড বিএনপির নির্বাহী সদস্য তাজুল ইসলাম টিপুর মা। সংবাদ সম্মেলনে বৃদ্ধা মোছা. সুনারা বেগমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফারজানা আক্তার বাবলী।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সুনারা বেগম তার স্বামী মরহুম মো. আফরোজ বক্সের নামে থাকা দক্ষিণ সুরমার মোমিনখলা মৌজায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের ৮৪ শতক ভূ-সম্পত্তি ৩৫ বছর ধরে ভোগদখল করছেন। সেখানে ‘আফরোজ ম্যানশন’ নামে একটি বহুতল মার্কেটও রয়েছে। ওই মার্কেট থেকে প্রতি মাসে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, সিলেট বিএনপির সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি বেলাল আহমদ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এ সম্পত্তি দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
২০১৪ ও ২০২৩ সালে বেলাল আহমদের আত্মীয় মোছা. হাওয়ারুন নেছা গং আদালতে স্বত্ব বাটোয়ারার দুটি মামলা করেন এবং ওই জায়গায় নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করেন; কিন্তু আদালত তাদের দাবি নামঞ্জুর করে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর ২৭ মার্চ তাজুল ইসলাম টিপুকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যায়িত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে ধরিয়ে দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৮ মার্চ বেলাল ও তার সহযোগীরা আফরোজ মার্কেট ও জমি দখলের চেষ্টা চালায়। এ ব্যাপারে তাজুল ইসলাম টিপু আদালতে একটি মামলা করেন। মামলায় বেলাল আহমদসহ মদিনা মার্কেট এলাকার নিবাস সি-২০নং বাসার মৃত মাহমদ আলীর ছেলে আবদুল মনির ও আবদুল মুমিনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীনও রয়েছে।
বেলাল ও তার সহযোগীদের একের পর এক হুমকি ও জায়গা দখলের অপচেষ্টার পরও পুলিশ নীরব ভূমিকায় রয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাজনৈতিক প্রভাবে বেলালের নেতৃত্বে ২৪ জুন ফের আফরোজ মার্কেট দখলের চেষ্টা করা হয় এবং তাজুল ইসলাম টিপুর ওপর হামলা চালানো হয়। অথচ হামলার শিকার হওয়ার পরও পুলিশ এ বিষয়ে মামলা নেয়নি। উল্টো টিপুসহ ১৫ জনের নামে মামলা করা হয়।
দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকার কারণে সুনারা বেগমের পরিবারের লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেফতার আতঙ্কে তাজুল ইসলাম টিপু এখন বাসা-বাড়িতে থাকতে পারছেন না। আর আদালত যখন মামলাগুলো দেখছেন, তখন কেন বারবার ওই সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনের খবরে অনেকটা বিস্মিত হয়ে অভিযুক্ত বেলাল আহমদ বলেন, তাদের বাহিনীর হামলায় গুরুতর আহত হয়ে আমি এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অথচ তারাই আমাকে অভিযুক্ত করে সংবাদ সম্মেলন করছে।
তিনি দাবি করেন, সম্পত্তিতে তাদের কোনো অধিকার নেই। সেনাক্যাম্পে তারাই অভিযোগ করেছিলেন। এরপর প্রায় তিন মাস মালিকানার তথ্য, প্রমাণাদি উপস্থাপন শেষে ওখান থেকেই লিখিতভাবে দখলের কাগজ দেওয়া হয়। এখন সেটা তারা মেনে না নিয়ে সাইনবোর্ড উপড়ে ফেলে, আমাদের ওপর হামলা করে এখন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মিথ্যাচার করছে।