ওসমানীনগরে বন্যার আশঙ্কা, প্রস্তুত ৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্র
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জুন ২০২৫, ১২:১০ অপরাহ্ণ
জুবেল আহমদ, স্টাফ রিপোর্টার:
টানাবৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে কুশিয়ারার পানি বিপদ সীমার নিকট দিয়ে অতিবাহিত হওয়ায় সিলেটের ওসমানীনগরে বন্যার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে অনেকের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে দুর্ভোগ তৈরি করেছে। নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ির আঙ্গিনায় পানি চলে আসায় সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। বন্যার আশঙ্কা সৃষ্টি হওয়ায় প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে তিনটি পরিবার দয়ামীরের সদরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
জানা যায়, টানাবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের খাল-বিল নদী নালা ভরাট ও দখলের কারণে বৃষ্টির পানিতে নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে।
জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে এবং পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সাদীপুর ইউনিয়নের খসরুপুর বাজার ও বিভিন্ন গ্রামের মানুষের ঘর বাড়ির আঙ্গিনায় পানি উঠেছে। কুশিয়ারার পানিবৃদ্ধি পেলে খসরুপুর, লামা তাজপুর, সুন্দিখলা, চর তাজপুরসহ কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উসমানপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। পানিবৃদ্ধি পেলে মানুষের ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে বৃষ্টির পানি জমে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বন্যার আশঙ্কা সৃষ্টি হওয়ায় ৭৩টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত দয়ামীর ইউনিয়নের সদরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনটি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। পরিবার গুলোকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবার সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ১৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ২০ মেট্রিক টন চাল রির্জাভ রাখা হয়েছে।
খসরুপুর গ্রামের জাকির খান বলেন, প্রতিনিয়ত কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের বাজার ও বাড়িঘরে পানি উঠা-নামা করছে। পানিবৃদ্ধি পেলে বাড়ি ঘর তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উসমানপুর ইউনিয়নের ধনপুর গ্রামের সাইস্তা মিয়া বলেন, অনেক রাস্তা ঘাটে কিছু পানি রয়েছে। বাড়িঘরে এখনো পানি উঠেনি তবে আশঙ্কা রয়েছে।
দয়ামীর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসটিএম ফখর উদ্দিন বলেন, আমারই ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত তিনটি পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।
ওসমানীনগর উপজেলা ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, বন্যার আশঙ্কা সৃষ্টি হওয়ায় ৭৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।শুকনো খাবার ও চাল মজুত রাখা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহ অব্যাহত রয়েছে। মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।