ওসমানীনগরে নিষিদ্ধ রিং জালের অবাধ ব্যবহারে হুমকির মুখে মৎস্যসম্পদ
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ মে ২০২৫, ১১:১৭ অপরাহ্ণ
জুবেল আহমদ, স্টাফ রিপোর্টার:
বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সিলেটের ওসমানীনগরের বিভিন্ন হাওরে নতুন পানি ঢুকতে শুরু করেছে। সেই পানিতে শুরু হয়েছে মাছের প্রজনন মৌসুম। এ মৌসুমে নিষিদ্ধ চায়না ম্যাজিক জালের ফাঁদে ধরা পড়ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। অবৈধ এই জাল দিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু জেলেরা মা ও পোনা মাছ নিধন করলেও মৎস্য বিভাগসহ স্থানীয় প্রশাসনের নেই তেমন নজরদারি। স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসনের উচিত দ্রুত এ জাল ব্যবহার রোধে ব্যবস্থা নেওয়া। তবে, পানি কম থাকায় হাওরে গিয়ে অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে উপজেলা মৎস্য অফিস।
জানা যায়, চীন দেশের লোকজন তাদের ক্ষেত খামারে বিভিন্ন প্রজাতির পোকামাকড় নিধনের জন্য এ জাল তৈরি করে। এটিকে জাল হিসেবে বর্ণনা করা হলেও মৎস্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে চায়না দুয়ারী বা রিং জাল মূলত মাছ ধরার এক ধরণের বিশেষ ফাঁদ। কম দাম ও সহজলভ্যতার কারণে রিং জালটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। ব্যবহারবিধি সহজ হওয়ায় জেলেদের পাশাপাশি মৌসুমি মাছ শিকারি এবং সাধারণ মানুষও এ জালের ব্যবহার শুরু করেছে। তবে জালটির ব্যবহারে অচিরেই দেশীয় মাছ বিলুপ্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
উপজেলার বানাইয়া হাওর ঘুরে দেখা যায়, জালটি বাঁশের খুঁটির সঙ্গে জালের দু’মাথা বেঁধে ফাঁদ পেতে রাখা হয় খাল-বিল, নদী-নালা ও জলাশয়ের তলদেশ দিয়ে। জালের কাঠামোতে লোহা থাকায় জালটি পানির তলদেশে পৌঁছায়। ৫০ থেকে ১০০ ফুট লম্বা এ জালে রয়েছে অসংখ্য প্রবেশমুখ। ফলে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ যেমন পুঁটি, খলিশা, টাকি, চিংড়ি, ট্যাংরা, শিংসহ বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির ছোট-বড় অসংখ্য মাছ প্রতিনিয়ত ধরা পড়ছে। জালের ফাঁস অনেক ছোট হওয়ায় ছোট মাছও রেহাই পাচ্ছে না এ ফাঁদ থেকে। এমনকি এ জালের ফাঁদে পড়ে উজাড় হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের জলজ প্রাণী। এ ছাড়া প্রজনন মৌসুমে ধরা হচ্ছে ডিমওয়ালা মাছও। এর ফলে মাছের বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
স্থানীয় মৎস্যজীবীরা বলেছেন, প্রতিটি ম্যাজিক জালের দাম তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা হলেও প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। এতে লাভ থাকায় জালের টাকা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। ফলে জেলেরা এই জালে মাছ ধরায় ঝুঁকছেন বেশি।
এলাকাবাসী জানান, প্রশাসনের তৎপরতা বন্ধ থাকায় এ জাল ব্যবহারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে অসাধু মহল।প্রশাসনের উচিত এ জাল ব্যবহার রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। জাল বিক্রির দোকানগুলোতে নজরদারি বাড়িয়ে এ ধরনের জাল দ্রুত বিক্রি বন্ধ করা।
রিং জাল দিয়ে বিভিন্ন হাওরে মাছ ধরার বিষয়ে অবগত আছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাসরূপা তাছলিম।
তিনি বলেন, হাওরে পানি কম থাকায় নৌকা যাচ্ছে না তাই আমরা অভিযান পরিচালনা করতে পারছি না। শীগ্রই উপজেলা মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে রিং জালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।