মুম্বাই ঘেরাও অভিযানে ভারতের হাজারো মুসলমান, নেপথ্যের কারণ?
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬:৩৪ অপরাহ্ণ
মুম্বাই ঘেরাও অভিযানে ভারতে হঠাৎ করেই ফুঁসে উঠেছে ভারতের মুসলমানরা। মুম্বাই অভিমুখে বিশাল বিশাল বহর নিয়ে পদযাত্রা করেছে বিভিন্ন সংগঠন। মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরে সম্প্রতি মসজিদে ঢুকে মুসলিমদের মারার হুমকি দিয়েছিলেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিধায়ক নীতেশ নারায়ণ রানে। এর আগে মহানবী (সা.) সম্পর্কে অপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন ‘ধর্মগুরু’ রামগিরি মহারাজ। ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করায় এবার মুম্বাই অভিমুখে বিশাল পদযাত্রা করেছে অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন।
সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং ফ্রি প্রেস জার্নাল জানিয়েছে, ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে অন্যান্য রাজনৈতিক ও সামাজিক দলসহ এআইএমআইএম-এর সাবেক সাংসদ ইমতিয়াজ জলিলের নেতৃত্বে একটি বড় বিক্ষোভ হয়েছে। ঘৃণাত্মক বক্তৃতার জন্য বিজেপি বিধায়ক নীতেশ রানে এবং রামগিরি মহারাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভে মুসলিম সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষকে জড় হতে দেখা যায় বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের মুম্বাই ঘেরাও করতে এ রোডমার্চে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় শতাধিক গাড়ির এক বহর নিয়ে ছত্রপতি সম্ভাজিনগর থেকে মুম্বাইয়ের উদ্দেশে যাত্রা করে। বিজেপির নিতেশ রানে ও ধর্মগুরু রামগিরি মহারাজের বিরুদ্ধে ইসলাম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগেই এই যাত্রা বলে জানিয়েছে তারা। তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতেই মুম্বায় ঘেরাও কর্মসূচী নিয়েছেন বলে জানিয়েছে মুসল্লিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাজার হাজার মুসল্লির এ রোডমার্চ মুলুন্ড টোল প্লাজায় পৌঁছে জেলা কালেক্টর ও অন্যান্য প্রতিনিধিদের কাছে তারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানান। এরপর তারা ওই এলাকা থেকে চলে যান। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, সম্ভাজিনগর থেকে ‘তিরিঙ্গা সংবিধান র্যালি’ নামে এ রোডমার্চ শুরু হয়। এতে অংশ নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত গাড়ি সম্ভাজিনগরে আসে। এরপর তারা মুম্বাই অভিমুখে যাত্রা করেন। এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মুম্বাই অভিমুখে যাত্রার কারণে প্রথমবারের মতো সমৃদ্ধি এক্সপ্রেসওয়েতে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শত শত গাড়ি র্যালিতে অংশ নেওয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে। অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন দলের সাবেক সংসদ সদস্য ইমতিয়াজ জলিল এ রোডমার্চ থেকে রামগিরি মহারাজ এবং নিতেশ রানেকে গ্রেপ্তারের আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া ইসলাম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশি বাধার কারণে তারা মুম্বাই প্রবেশ করতে পারেননি। তাদের রোধে মুম্বাইয়ের প্রবেশদ্বারে প্রায় তিন হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার সত্যনারায়ন চৌধুরী বলেন, পরিস্থিতির ওপর কঠোর নজর রাখা হয়েছে। তারা সোমবার রাতে কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন জমা দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ বিক্ষোভে প্রায় ২ হাজার গাড়ি অংশ নেয়।