বন্যায় কানাইঘাটের সুরমা ডাইকে ভাঙন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জুন ২০২৪, ১২:৩৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজঃ
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় এখনো বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রত্যন্ত এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এখনো গাছবাড়ী থেকে হরিপুর রাস্তা বন্যার পানি রয়েছে। বন্যার পানিতে উপজেলার ছোট-বড় সড়ক। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এসব সড়ক থেকে পানি নেমে গেলেও নদী ভাঙন ও খানাখন্দে ব্যাপক ক্ষতি হয় রাস্তা-ঘাট। গত কয়েক বছরেও সংস্কার হয়নি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো। ফলে প্রতিদিন সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে উপজেলার সাধারণ মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, বন্যার সময় সড়কগুলোতে অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে একাকার হয়ে যায়। এসব স্থানে সংস্কার কাজ না হওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
গাজী বোরহান উদ্দিন সড়কটি দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে সংস্কার করা হয় না। ২০২২ সালে বন্যা পেরিয়ে যায় কোনো মেরামত করা হয় না। পাহাড়ি ঢলের কারণে সুরমা ও লোভা নদীর একাধিক সুরমা ডাইকের স্থান বীরদল থেকে কোনাগ্রাম, ফাইলজুর থেকে হরিশিংমাটি, দলইমাটি থেকে পাত্রমাটি, চলিতা বাড়ি থেকে গাছবাড়ী বাজার, সুরমা ও লোভা নদীর একাধিক সুরমা ডাইকের স্থান ভেঙে যাওয়ায় গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট, বসত ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। হাজার হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি, সুরমার ভাঙনের মুখে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপর ঝিংগাবাড়ী দলইমাটি গ্রামের নদীর তীরবর্তী দুইটি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এতে করে ঝিংগাবাড়ী দারুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও ঝিংগাবাড়ী পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এভাবে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মৎস্য খামারে কয়েক কোটি টাকার মাছ ভেসে যায়। বিভিন্ন এলাকার সবজি বাগানগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাজী বোরহান উদ্দিন সড়ক ও কানাইঘাট সুরইঘাট সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পিচ উঠে গিয়েছে গ্রামীণ অঞ্চলের পাকা রাস্তাগুলোর। এতে করে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ব্যাপকহারে ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ঢোকার কারণে বিশেষ করে লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব, লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম, দীঘিরপাড়, পূর্ব সাতবাঁক, কানাইঘাট সদর, বড়চতুল ইউপি, কানাইঘাট পৌরসভা, ঝিংগাবাড়ী ইউপি, রাজাগঞ্জ ইউপিসহ বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ গ্রামের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো নিম্নাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। এসব এলাকার গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে রয়েছে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চারদিকে বন্যার পানি বিরাজ করছে। ভেঙে যাওয়া সুরমা ডাইকগুলো দ্রুত মেরামত করা না হলে আবারো বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলে কানাইঘাট উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। সবমিলিয়ে এবারের ভয়াবহ বন্যায় বিভিন্ন সেক্টরের কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সচেতন মহল মনে করেন বন্যার হাত থেকে কানাইঘাট উপজেলাকে রক্ষা করতে হলে সুরমা ও লোভা নদীর গুরুত্বপূর্ণ ডাইকগুলো উঁচু বেড়িবাঁধসহ ব্লক ফেলে টেকসই কাজ করা না হলে বন্যার হাত থেকে এ অঞ্চলের মানুষ পরিত্রাণ কখনো পাবে না।