বিশ্বনাথে ৫ ইউপিতেই ডুবল নৌকা, উপজেলা জুড়ে জল্পনা-কল্পনা
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:১৫:৪৫,অপরাহ্ন ১৮ জুলাই ২০২৩
সুরমা নিউজঃ
সিলেটের বিশ্বনাথে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৫ ইউনিয়নের মধ্যে ১টিতেও বিজয়ী হতে পারেননি নৌকার প্রার্থী।
উপজেলার অলংকারী, রামপাশা, দৌলতপুর, বিশ্বনাথ, দেওকলস ইউনিয়ন পরিষদের বহুল কাঙ্খিত নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের চরম ভরাডুবি উপজেলা জুড়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে দেওকলস ইউনিয়নে প্রায় ১২ বছর পর, আর বাকি ৪টি ইউনিয়নে প্রায় ৭ বছর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে ভোট প্রয়োগে ভোটাররা ছিলেন সরব। আর তাই ভোট কেন্দ্রগুলোতে সকাল থেকে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। তবে প্রায় সবকটি কেন্দ্রেই পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল বেশি।
প্রাথমিকভাবে পাওয়া ফলাফলে জানা গেছে, উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নে ঘোড়া প্রতীকে ৪ হাজার ৭২৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (বিএনপির বিদ্রোহী) উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি আতিকুর রহমান লিটন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সদ্য বহিস্কৃত উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি নাজমুল ইসলাম রুহেল চশমা প্রতীকে ৩ হাজার ৯৪১ ভোট, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শাহ তাজুল ইসলাম মাইকেল নৌকা প্রতীকে পেয়েছে ৭৩৪ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারী কামাল উদ্দিন আনারস প্রতীকে ৬৭৪ ভোট ও সংগঠক চেরাগ আলী মোটরসাইকেল প্রতীকে ৪৬ ভোট পেয়েছেন।
রামাপাশা ইউনিয়নে আনারস প্রতীকে ৫ হাজার ৮৮৬ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি (সদ্য বহিস্কৃত) ইমাম উদ্দিন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সদ্য বহিস্কৃত পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বশির আহমদ চশমা প্রতীকে ৫ হাজার ৭৮০ ভোট, সদ্য বহিস্কৃত উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী) আজিজুর রহমান ঘোড়া ৩ হাজার ৪৫৬ ভোট ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরব আলী নৌকা প্রতীকে ১ হাজার ৫০৫ ভোট পেয়েছেন।
দৌলতপুর ইউনিয়নে চশমা প্রতীকে ৮ হাজার ৮৬৭ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (বিএনপির বিদ্রোহী) সদ্য বহিস্কৃত ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আরব খান। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ওয়াহাব আলী নৌকা প্রতীকে ২ হাজার ৪১১ ভোট পেয়েছেন।
বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নে আনারস প্রতীকে ৩ হাজার ৮৩৪ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ক্রীড়া সংগঠক দয়াল উদ্দিন তালুকদার। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুল জলিল হিরন মিয়া নৌকা প্রতীকে ১ হাজার ২৮০ ভোট ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মুহি উদ্দিন পলাশ মোটরসাইকেল প্রতীকে ৮৪২ ভোট পেয়েছেন।
দেওকলস ইউনিয়নে আনারস প্রতীকে ২ হাজার ৭০৩ ভোট চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী) উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি (সদ্য বহিস্কৃত) ফখরুল ইসলাম মতসিন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী পৌর জামায়াতের নায়েবে আমীর হোসাইন মোহাম্মদ আক্তার ফারুক চশমা প্রতীকে ২ হাজার ১৬ ভোট, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম জুয়েলের নৌকা প্রতীকে ১ হাজার ৯৫৭ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক (সদ্য বহিস্কৃত) খায়রুল আমিন আজাদ মেম্বার অটোরিকশা প্রতীকে ১ হাজার ৩৩৩ ভোট, খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী উপজেলা খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান দেওয়াল ঘড়ি প্রতীকে ৩৫৩ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাংবাদিক এমআর টুনু তালুকদার ঘোড়া প্রতীকে ৩২৫ ভোট, প্রবাসী আলতাব আলী মোটরসাইকেল প্রতীকে ৯০ ভোট, ফখরুল ইসলাম মতছিনের স্ত্রী মোছা. মমতাজ বেগম রজনীগন্ধা প্রতীকে ১২ ভোট পেয়েছেন।
সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এসব ইউনিয়নে টানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ভোট কেন্দ্রগুলোতে এসে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট প্রয়োগ করেছেন প্রায় ৬৫ শতাংশ ভোটার।