বিশ্বনাথে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ : বিচার চাওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম মকবুল
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ মে ২০২৩, ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ
নাজমুল ইসলাম মকবুলঃ
বিশ্বনাথে রিকশাচালকের পঞ্চম শ্রেণিপড়ুয়া মেয়েকে স্কুল থেকে ফেরার পর ধর্ষণ। বিচার চাওয়ায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম মকবুল। এ ব্যাপারে নাজমুল ইসলাম মকবুলের বক্তব্য।
গত ১ জুলাই ২০১৯ দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার ৬ নং পৃষ্টার ৬ ও ৭ নং কলামে বিশ্বনাথে ছাত্রী ধর্ষণের বিচার চায় স্কুল কমিটি, শিরোনামে একটি সংবাদ আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়।
সংবাদে উল্লেখ করা হয়, সিলেটের বিশ^নাথে মুফতিরগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার নিন্দা ও ধর্ষক আবুল কাহারের শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং ও পিটিএ কমিটি। গত শনিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের অফিসে অনুষ্ঠিত দুই কমিটির এক জরুরি সভায় এই নিন্দা ও শাস্তির দাবি জানানো হয়।
সভায় বক্তারা ধর্ষক আবুল কাহারকে একজন চিহ্নিত বখাটে দাবি করে বলেন, অনতিবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে এলাকার ছাত্র-জনতা মাঠে নামতে বাধ্য হবে…….।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার বিকেলে উপজেলার সদর ইউনিয়নের চৌধুরীগাও গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবদুস শুকুরের বাসায় থাকা ভাড়াটে এ রিকশাচালকের পঞ্চম শ্রেণিপড়–য়া মেয়েকে ধর্ষণ করে একই গ্রামের মৃত মরম আলীর ছেলে অটোরিকশা চালক আবুল কাহার। স্থানীয় মুফতিরগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর থেকে এটা ধামাচাপা দিতে তৎপরতা শুরু করে এলাকার কতিপয় মাতব্বররা। আত্মগোপনে চলে যায় অভিযুক্ত আবুল কাহার।
এর পূর্বে ২৯ জুন ২০১৯ দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় শেষ পৃষ্ঠার ৪র্থ কলামে, দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকার ৩নং পৃষ্ঠার ৫,৬,৭ ও ৮ নং কলামে, দৈনিক সিলেট মিরর পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠার ৩নং কলামে, দৈনিক শুভ প্রতিদিন পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠার ২নং কলামে, দৈনিক সবুজ সিলেট পত্রিকার ৫নং পৃষ্ঠার ২নং কলামে প্রকাশিত সংবাদসমুহে ধর্ষণকারী আবুল কাহারের নাম উল্লেখসহ ফলাও করে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্র পত্রিকায় ধর্ষণকারী হিসেবে আবুল কাহারের নাম উল্লেখসহ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণসংবলিত সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর আবুল কাহারকে গ্রেফতারের দাবীতে স্বোচ্ছার হয়ে উঠেন বিশ^নাথের সচেতন মহল।
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ সিরাজুল হক বিশ্বনাথ সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রথমে লেকচারার ও পরে প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করেন টানা ৩৩ বছর। এলাকায় বসবাসরতো একজন স্কুল পড়–য়া পঞ্চম শ্রেণীর নিস্পাপ ছাত্রী তাও আবার গরিব রিকশাওয়ালার মেয়ে, বিদ্যালয় থেকে বাড়ী যাওয়ার পর ধর্ষিতা হওয়ার মর্মান্তিক সংবাদ জানতে পেরে একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে তিনি ধর্ষণকারীর গ্রেফতারের দাবিতে স্বোচ্ছার হন।
এদিকে গত ৩ জুলাই ২০১৯ এ প্রকাশিত দৈনিক সিলেটের ডাকের শেষ পৃষ্টার ২নং কলামে, বিশ^নাথে স্কুল ছাত্রীকে পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়ের, অভিযুক্ত কাহার র্যাবের হাতে গ্রেফতার শিরোনামে এবং দৈনিক সিলেট মিরর পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠার ৮নং কলামে ও দৈনিক একাত্তরের কথা পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠার ১নং কলামে এ ব্যাপারে প্রায় একই ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হয়।
ধর্ষিতার মায়ের দায়েরকৃত মামলায় পলাতক একমাত্র আসামী অটোরিকসা চালক আবুল কাহার ছাতক উপজেলার ছৈলা এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়ার সংবাদ আমরা এসব পত্র পত্রিকায় দেখতে পাই।
মর্মান্তিক এ ঘটনার প্রতিবাদ এবং দায়ীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করার কারনেই প্রায় সাড়ে সাত মাস জেল খেটে বের হওয়ার পর থেকে প্রতিশোধপরায়ন হয়ে প্রতিবাদকারী বিভিন্ন নীরিহ সম্মানিতজনদের ক্ষতি করার জন্য উঠেপড়ে লেগে যায় পত্র পত্রিকায় উল্লেখিত এবং ধর্ষিতার মায়ের দায়ের করা মামলার আসামী কাহার, তার ভাই ও তার পরিবারের লোকজনসহ কতিপয় সাঙ্গপাঙ্গরা।
মামলা তদন্তাধীন থাকা অবস্থায় গত ২০ মে বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে বিশ^নাথ সরকারি ডিগ্রি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ সিরাজুল হকসহ বিভিন্নজনের নাম উল্লেখ করে নানান ধরনের কল্পকাহিনী পরিবেশন করে।
সেসময় উক্ত ধর্ষনের ঘটনায় দায়ীদের বিচার চেয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করায় প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আমার নামও উল্লেখ করে আমাকে উদ্বেগ প্রকাশ করার কারনে দায়ী করছে আসামীপক্ষ।
উল্লেখ্য সেসময় বিশ্বনাথের প্রায় সকল সাংবাদিক নিজ নিজ পত্রিকায় সেই মর্মান্তিক ঘটনার সংবাদ ও ফলোআপ সংবাদ পরিবেশন করেন। যার কপিগুলো আমাদের হাতে আছে।
শুধু তাই নয়, আদালতে বিচারাধীন এ বিষয় নিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার ওসি তদন্ত আব্দুস সালামের বিরুদ্ধেও অপবাদ দেয়।
মুলত: আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ছাতকের ছৈলা এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিণীর হাতে গ্রেফতার হয়ে সাড়ে সাত মাস জেল খেটে বের হয়ে আমিসহ বিশিষ্টজনদের বিরুদ্ধে নানান ধরনের আবুল তাবুল কথা বলে সে ও তার ভাই। সম্প্রতি আদালতে হাজিরা দিতে গেলে বিজ্ঞ আদালত আবারও তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করার সংবাদ আমরা পত্র পত্রিকায় দেখতে পাই।
অতএব, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি আমার ও আমার পরিবারের জানমালের নিরাপত্তায় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানাচ্ছি।