বালাগঞ্জে সন্ত্রাসী হামলায় চোখ হারালেন তিন সন্তানের জনক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ মে ২০২২, ৭:২৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেটের বালাগঞ্জে বর্বর হামলা চালিয়ে তিন সন্তানের জনকের চোখ উপড়ে ফেলেছে সন্ত্রাসীরা। কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে তার মাথা ও শরীরের অন্যান্য স্থানে। বর্তমানে ওই ব্যক্তি ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
এ ঘটনায় থানায় মামলা হলেও অজ্ঞাতকারণে গ্রেফতার হচ্ছে না সন্ত্রাসীরা। ফলে তিনটি অবুঝ সন্তান নিয়ে তার স্ত্রী মানবেতর জীবন যাপন করছেন। গত ৩০ এপ্রিল বালাগঞ্জ থানার পশ্চিম গৌরিপুর ইউনিয়নের খুজকিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে খুজকিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল বারিক খাজুরের পুত্র আসুক মিয়ার নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী একই গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র আব্দুল হামিদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপিয়ে কপালে ও মাথায় গুরুতর ও গভীরতর জখম করে এবং তার একটি চোখ উপড়ে ফেলে ও একটি চোখ গলিয়ে দেয়। তার আর্ত চিৎকারে স্বজনরা এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা আব্দুল হামিদের ভাই জাকির ও আত্মীয় জুনেদকে গুরুতর জখম করে।
এসময় সন্ত্রাসীরা আব্দুল হামিদের স্ত্রী ও সন্তানদের টানাহেঁচড়া করে মাটিতে ফেলে বেদম মারপিট করে। আশংকাজনক অবস্থায় আব্দুল হামিদ, জাকির ও জুনেদকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গুরুতর আহত আব্দুল হামিদের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
আব্দুল হামিদ বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন এবং তার দুটি চোখ একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি জীবনের জন্য অন্ধ হয়ে গেছেন বলে ডাক্তাররা জনিয়েছেন।
এ ঘটনায় আব্দুল হামিদের ভাই আব্দুর রকিব বাদী হয়ে ৮ জনকে এজাহারভুক্ত আসামী করে অজ্ঞাতনামাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে বালাগঞ্জ থানায় একটি মামলা (নং-০১/১/৫/২২) দায়ের করেন।
মামলার এজাহারনামীয় আসামীরা হচ্ছেন-বালাগঞ্জ থানার পশ্চিম গৌরিপুর ইউনিয়নের খুজকিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল বারিক খাজুরের পুত্র আসুক মিয়া, জামাল মিয়া ও হায়দর রাজা এমরান, একই গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের পুত্র আব্দুস সত্তার লেবু ও আব্দুল কুদ্দুস এহিয়া, গ্রামের নুনু মিয়ার পুত্র নিরু মিয়া, মৃত রূপা মিয়ার পুত্র সুজন মিয়া, মৃত পঙ্কী মিয়ার পুত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মামলার পর থেকে অজ্ঞাত কারণে সন্ত্রাসী আসুক ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে পারছে না পুলিশ। আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং আহতদের স্বজনদের হত্যা অপহরণ ও গুম করার প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে। ফলে আব্দুল হামিদের স্বজনসহ গ্রামের সাধারণ মানুষজন চরম নিরাপত্তহীন। আসামীরা গ্রামে সশস্ত্র মহড়া দিতে থাকায় গ্রামের লোকজন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। শিশু-কিশোরদের স্কুল-মাদ্রাসায় যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। আহতদের স্বজনসহ গ্রামবাসী অবিলম্বে সন্ত্রাসী আসুক ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ রমা প্রসাদ চক্রবর্তী জানান, ঘটনার পর থেকে মামলার মূল আসামীরা আত্মগোপনে চলে গেছে। তাদের গ্রেফতারে পুলিশের তল্লাশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।