বিশেষজ্ঞদের মতে প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় বাঁচাতে হবে বন
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ মার্চ ২০২২, ৯:৪৭ অপরাহ্ণ
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দূর্ঘটনায় প্রতিদিনই মৃত্যু হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণীর। বনের ভেতর বিদ্যুৎ লাইন, সড়কপথ ও রেলপথের কারণে বারবার বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হলেও মৃত্যু ঠেকাতে পারছে না বনবিভাগ। তাই পরিবেশ কর্মি ও বিশেষজ্ঞদের মতে প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় বাঁচাতে হবে বন।
তাছাড়া লাউয়াছড়া ও জেলার অন্যান্য বন পাহাড় টিলা এবং হাওরে অবাধে নিধন করা হচ্ছে গাছ। ফলে ধ্বংস হচ্ছে বন, হুমকির মুখে বন্যপ্রাণী এবং প্রকৃতি হারাচ্ছে তার ভারসাম্য। গত ৩ মার্চ লাউয়াছড়ায় বনবিভাগ যখন বিশ্ব বন্যপ্রাণি দিবসের নানা কর্মসূচি পালন করছিলেন, ওই দিনই লাউয়াছড়া প্রাণ গেলো দুটি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণির। লাউয়াছড়া উদ্যানে এক বছরে প্রাণ গেছে লজ্জাবতী বানর, মুখপোড়া ও চশমাপরা হনুমান সহ ১০ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর।
মৌলভীবাজার বনবিভাগ জানান, সংরক্ষিত বনের ভেতর ৩৩ হাজার ভোল্টের খোলা তারের পল্লিবিদ্যুৎ লাইন টানা রয়েছে। এসব তারে ঝুলতে গিয়ে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে মারা যাচ্ছে এসব প্রাণী।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান- লাউয়াছড়া একটা সমৃদ্ধ বন। বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর বসবাস এখানে। অথচ বিদ্যুৎ এর তার,রেল ও সড়কপথে প্রায়ই বন্য প্রাণী মারা যাচ্ছে। গাছ কাটার ফলে খাদ্য সংকট রয়েছে বন্যপ্রাণী সমৃদ্ধ এই আবাসস্থল।
মৌলভীবাজার বাপা সমন্বয়ক আসম সালেহ সোহেল বলেন, বন যারা পরিচালনা করেন তাদের আন্তরিকতা ঘাটতি রয়েছে। সম্প্রতি জুড়ি উপজেলায় আগুন লাগিয়ে বনের পাতা পুরানো হয়েছে, এতে করে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয়। মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া, রাজকান্দি ফরেস্ট, পাথারিয়া বন এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও বন্যপ্রাণীর জন্য নিরাপদ করতে পারছে না সরকার। অথচ হাজার কোটি ব্যয়ে সাফারি পার্ক হচ্ছে। আমরা চাই প্রকল্প গ্রহণ করা হোক বন ও বন্যপ্রাণীর স্বার্থে।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ১৬৭ প্রজাতির বৃক্ষ, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৯ প্রজাতির সাপ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ১৮ প্রজাতির টিকটিকি, ২ প্রজাতির কচ্ছপ, ৫৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ২২ প্রজাতির উভচর সহ অনেক বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণীর আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র।
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমি আসার পর পল্লিবিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দিয়েছি, মৌখিক বলেছি, কোন কাজ হয় নাই। এই বিদ্যুৎ এর লাইনগুলোকে রাবার প্রটেক্ট করে দিলে বন্যপ্রাণী মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসবে। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে জানানো হলে সেখান থেকে নির্দেশনা এসেছে তার ঢেকে দেওয়ার জন্য। পাশাপাশি গাছ কাটা রোধে পদক্ষেপ নিচ্ছি। যারা গাছ কাটার সাথে জড়িত, ইতিমধ্যে অনেককে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।