পেটে কাঁচি রেখে সেলাই, ২০ বছর ধরে বয়ে বেড়াচ্ছেন গৃহবধূ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ৮:০৪ অপরাহ্ণ
২০ বছর আগে মেহেরপুরের গাংনীর রাজা ক্লিনিকে ক্লিনিকে পিত্তথলির পাথর অপারেশন করিয়েছিলেন বাচেনা খাতুন। ৫০ বছর বয়সের এই নারী এতদিন মোটামুটি ভালোই ছিলেন।
তবে গত এক সপ্তাহ ধরে তার পেটের ব্যথা অনুভূত হতে শুরু হয়। পরে রাজশাহীতে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে এক্স-রে করার পর তিনি জানতে পারেন, তার পেটের ভেতরে একটি কাঁচি রয়েছে।
বাচেনা খাতুন চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ঢিৎলা ইউনিয়নের নওদাহাপানিয়া গ্রামের আবদুল হামিদের স্ত্রী।
এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিতি একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বাচেনা খাতুন।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বাচেনা খাতুন জানান, এতদিন ধরে পেটে মাঝেমধ্যে যন্ত্রণা হতো। এতে স্থানীয় ওষুধের দোকান থেকে গ্যাসের ও ব্যথার ওষুধ কিনে খেয়েছেন। কয়েক দিন আগে পেটে অসহনীয় ব্যথা শুরু হলে গত রবিবার রাজশাহীর একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসার জন্য যান। পরে সেখানে এক্স-রে করে চিকিৎসক দেখতে পান, পেটের মধ্যে কাঁচি রয়েছে।
বাচেনা খাতুনের স্বামী আবদুল আজিজ বলেন, ‘পাথরের জন্য অস্ত্রোপচার করে তারা কাঁচি রেখে সেলাই করে দিয়েছেন। এখন আবারও অপারেশন করতে হবে। আমরা গরিব মানুষ। এত টাকা কোথায় পাব?’
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুর রেজা বলেন, বাচেনা খাতুন তার কাছে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, তার পেটের ভেতরে অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত কাঁচি রয়েছে। তাকে দ্রুত অস্ত্রোপচার করে কাঁচিটি অপসারণ করতে হবে। আপাতত তাকে ওষুধ দেওয়া হয়েছে।
গণমাধ্যমকে রাজা ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা বলেন, আমি বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারি না। আমিও ওই অপারেশনের সময় সহকারী হিসেবে ছিলাম। মানুষমাত্রই ভুল হতে পারে। তার পরও ডা. মিজানুর রহমান একজন সার্জারি বিভাগের ভালো চিকিৎসক। তিনি ওই সময় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চাকরি করতেন। তখন আমার ক্লিনিকে সব অপারেশনই তিনি করতেন। তিনিই ভুলটা করতে পারেন। তবে তার পরিচয় জানি না। মেহেরপুরে চাকরির সুবাদে তার সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। হয়তোবা এটি তার অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল। তবু কুড়ি বছর বাচেনাকে কষ্ট পেতে হয়েছে। আমি এখন জানতে পারলাম ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার সব দায়িত্ব আমি নেব।
গাংনী ইউএনও মৌসুমি খানম বলেন, এ ধরনের অভিযোগ এখনো হাতে পাননি তিনি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্য ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।