খাবার সংকটে শাহজালাল (রহ.) মাজারের জালালী কবুতর
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ এপ্রিল ২০২১, ১২:৪৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
কঠোর লকডাউনের কারণে দর্শনার্থী না থাকায় খাবার সংকটে পড়েছে সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজারের হাজার হাজার জালালী কবুতর।
মাজার কর্তৃপক্ষ খাবার সরবরাহ করলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে উড়াউড়ি করছে কবুতরগুলো।
তবে মাজার কর্তৃপক্ষ বলছেন, কবুতরের খাবার পর্যটক নির্ভর নয়। আমাদের গুদামে পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে। সময় মতো কবুতরকে খাবার ছিটিয়ে দেয়া হয়।
সরেজমিনে শনিবার ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম হযরত শাহাজালাল (রহ.) মাজার ঘুরে দেখা গেছে, দরগাহ মসজিদের সামনে কবুতরের নির্ধারিত জায়গায় কোনো খাবার নেই। সামান্য কিছু ধান ছিলো তা খেতে গাদাগাদি করছে। আবার কিছু কবুতর খাবার না পেয়ে ছোটাছুটি করছে কবুতরের দল। অথচ পর্যটকরা থাকলে সেই জায়গায় ধানসহ বিভিন্ন ধরণের খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকতো। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা কবুতরের জন্য খাবার নিয়ে আসতেন এবং সেখানে ছিটিয়ে দিতেন। খাবার খেয়ে কবুতরগুলো বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করতো।
করোনা সংক্রমণ রোধে ১ এপ্রিল থেকে শাহজালালের মাজারসহ সিলেট জেলার সব পর্যটন স্পট বন্ধ রয়েছে। এরপর গত ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউনের কারণে মানুষের চলাচল প্রায় বন্ধ রয়েছে। কেবল পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় কিছু মুসল্লি আসেন দরগাহ মসজিদে। এর বাইরে কোনো পর্যটকের আনাগোনা নেই। পর্যটক না থাকার কারণে খাবার সংকটে পড়েছে শাহজালালের অসংখ্য জালালী কবুতর।
মাজার কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট সময়ে কবুতরের জন্য কিছু খাবার দেন। তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। ফলে সব সময় পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে না কবুতরগুলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাজারের এক নিরাপত্তারক্ষী বলেন, আমাদের গুদামে ধানসহ কবুতরের জন্য বিভিন্ন ধরণের খাবার রয়েছে। সময়মত আমরা ছিটিয়ে দেই। তবে পর্যটক থাকলে খাবার দিতে হয় না। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কবুতরের জন্য খাবার নিয়ে আসেন ভক্ত আশেকানরা। সেগুলো তারা নিজ হাতে কবুতরের জন্য ছিটিয়ে দেন। তবে করোনার কারণে আগের মতো খাবার পাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
পরিবেশ কর্মী আশরাফুল কবির বলেন, গত বছর করোনা মহামারির সময় এভাবে মাজারে জালালী কবুতরের খাদ্য সংকট ছিলো। পরে মাজার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন কবুতরের জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে। কিন্তু এখন কেনো আবার খাবার সংকট দেখা দিবে। শুধু কবুতর নয় মাজাররের সবকিছু দেখাশুনা তাদের দায়িত্ব। সামান্য খাবার নিয়ে গাফিলতি করলে তা খুবই দুঃখজনক।
৩৬০ আউলিয়া আশেকান পরিষদের সভাপতি শেখ মো. মখন মিয়া বলেন, দরগাহ আয়-ব্যয় সব দেখাশুনা করা জন্য একটি কমিটি আছে। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে মাজারের কবুতর না খেয়ে থাকবে এটা দুঃখজনক। দরগাহ থেকে যে আয় হয় সেখান থেকে কবুতর ও মাছের খাদ্যসহ সবকিছু ব্যয় করা হয়। সুতরাং কবুতরের খাবার নিয়ে যদি কারো উদাসীনতা থাকে তাহলে এর দায়ভার কেউ এড়াতে পারবেন না। বিষয়টি ভক্ত আশেকান হিসেবে মাজার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবো।