সৌদি আরবের মর্গে পড়ে আছে অনেক প্রবাসীর লাশ, দেশে পাঠানোর সম্ভাবনা নেই
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ মে ২০২০, ২:৩৫ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
মহামারী করোনায় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সৌদি আরবে দীর্ঘদিন ধরে বিমান চলাচল বন্ধ। স্থানীয় অফিস-আদালতও বন্ধ থাকায় লাশ সংরক্ষণকারী হিমঘরে স্থান সংকুলান না হওয়াসহ নানা কারণে মৃত প্রবাসীর লাশ বাংলাদেশে প্রেরণের সম্ভাবনা নেই।
সৌদি কর্তৃপক্ষ অনুরোধ জানিয়েছে– স্থানীয়ভাবে সৌদি আরবেই প্রবাসীদের লাশ দাফনের অনুমতির জন্য। দেশটির নিয়মানুযায়ী, হাসপাতালের মর্গে একটি লাশ সর্বোচ্চ ৬০ দিন পর্যন্ত রাখা যায়। এই সময়ের মধ্যে লাশের কোনো সুরাহা না হলে তা দাফনের বিধান রয়েছে। বেওয়ারিশ লাশের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।
বাংলাদেশ মিশন সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন কারণে মৃত্যুবরণকারী অনেক প্রবাসী বাংলাদেশির লাশ দীর্ঘদিন ধরে হিমঘরে পড়ে আছে।
প্রত্যেক হাসপাতালেই একই অবস্থা। বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় প্রবাসীদের লাশ নিজ দেশে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই হিমঘরে আর লাশ রাখার জায়গা নেই। বাধ্য হয়েই দাফন করতে হবে পুরনো লাশ।
একটি সূত্র জানিয়েছে, শুধু রিয়াদের সিমুশি হাসপাতালের হিমঘরেই বাংলাদেশি ৩৫টি লাশ পড়ে আছে।
এভাবে দেশটির অন্য শহরের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আনুমানিক দুই শতাধিক প্রবাসীর লাশ পড়ে আছে। স্বাভাবিক মৃত্যু, হৃদরোগে মৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু এবং হালের করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।
জুবাইল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে নতুন নির্দেশনা মোতাবেক প্রতি এলাকার পুলিশ/ট্রাফিক, হাসপাতাল এবং গভর্নর অফিসের সমন্বয়ে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা ৩-৭ দিনের মধ্যে পুরনো যে কোনো লাশ দাফন করতে পারবে।
মৃতের পরিবার দাফনের অনুমতি না দিলে দূতাবাস এনওসি (অনাপত্তিপত্র) ইস্যু করে না। আর এনওসি ইস্যু না হলে মৃত্যুসনদসহ অন্য কাগজপত্রও ইস্যু হয় না।
এনওসি ও অন্য কাগজপত্র ঢাকায় প্রবাসীকল্যাণ বোর্ডে জমা দিতে না পারলে এককালীন সাহায্য তিন লাখ টাকা পাওয়া যাবে এমন নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না।
পূর্বাঞ্চলের দাম্মাম, আহসা, জুবাইল ও ক্বাতিফ শহরে প্রবাসীদের ৯টি লাশ আছে, যাদের পরিবার সিদ্ধান্ত না দেয়ায় মৃতদেহগুলো পড়ে আছে, হয়তো বেওয়ারিশ হিসেবেই লাশগুলো দাফন হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে জানতে ফোন করতে হবে রিয়াদস্থ দূতাবাসে ০০৯৬৬৫৭০২১২১৮০ এবং জেদ্দাস্থ কনস্যুলেটে ০০৯৬৬৫৩৩১৪৭৯১২-এ নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এ ছাড়া দূতাবাস বরাবর আবেদন আকারেও মতামত পাঠানো যাবে, তবে নির্ভরযোগ্য সত্যায়ন থাকতে হবে বলে জানিয়েছে দূতাবাস।