আত্মহত্যা এবং ইসলামে এর শাস্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ আগস্ট ২০১৭, ৭:৪১ অপরাহ্ণ
শাহরিয়ার রশিদ কয়ছর:
আত্মহত্যা একটি মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি। মানুষের মৃত্যুর কয়েকটি সাধারণ কারণের মধ্যে আত্মহত্যা একটি।আত্মহত্যা হচ্ছে -স্বেচ্ছায় নিজেকে নিধন করা কিংবা নেজেই মেরে ফেলা।আত্মহত্যা একটি অপরাধমূলক পাপ বা নৈতিকভাবে ভূল কাজ।বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি রাষ্ট্রে প্রতিটি লোকালয়ে আত্মহত্যার প্রবণতা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।আত্মহত্যা পরিবার সমাজ রাষ্টের উপর দারুণভাবে প্রভাব ফেলে।অনেক ক্ষেত্রে এই পরিবার সমাজ রাষ্ট্র আত্মহত্যার জন্য দায়ী থাকে।
পৃথিবীর অপরাপর প্রান্তের মত বাংলাদেশও আত্মহত্যার প্রবণতা যথেষ্ট উদ্বেগের।জাতীয় মানুষিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও পুলিশ সদর দফতরের তথ্য মতে দেশে প্রতি বছর গড়ে ১০হাজারে এবং প্রতিদিন গড়ে ২৮জন মানুষ আত্মহত্যা করছে যাদের একটি বড় অংশের বয়স ২১থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
আত্মহত্যা জনপ্রিয় পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে,গলায় ফাঁস দিয়ে,বিষাক্ত কীটনাশক পান করে,এবং আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে আত্মহত্যা করা।আর এই আত্মহত্যার পিছনে বেশিরভাগ কারণ প্রেম ঘটিত অথবা পরীক্ষায় প্রত্যাশিত ফল না হওয়া না হয় পারিবারিক সমস্যা।গবেষণায় দেখা গেছে,মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে ৮৭% থেকে ৯৮% মানুষ আত্মহত্যাকর্ম সংঘটিত হয়।
পৃথিবীর প্রায় বেশির ভাগ দেশেই আত্মহত্যা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচিত হয়।তারপরও সামাজিক নিয়ম-নীতি না মেনে, আইনের তোয়াক্কা না করে, প্রতিদিন আমাদের আশেপাশে কেউ না কেউ স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা কে আলিঙ্গন করছে।এর কারণ,আমাদের আইন কিংবা সামাজিক নিয়ম নীতির সাথে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা নৈতিকতার সমন্বয় সাধন হয়নি।
সমাজব্যবস্থায় ধর্মীয় কিংবা নৈতিকতার চর্চা আত্মহত্যার প্রবণতা অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পারে।ইসলাম ধর্ম, হিন্দুধর্ম, খ্রিষ্টধর্মসহ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ধর্মগুলোর কোনোটিই আত্মহত্যার অনুমতি দেয় না।
ইসলামে আত্মহত্যা মহাপাপ ও অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ হওয়া সত্ত্বেও এমন অনেক লোক আছে, যারা জীবনযাপনের কঠিন দুঃখ-দুর্দশা ও ব্যর্থতার গ্লানি থেকে পরিত্রাণের জন্য অথবা জেদের বশবর্তী হয়ে বেছে নেয় আত্মহননের পথ। কিন্তু ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহর ওপর ভরসা ও দৃঢ় আস্থা থাকলে কারও আত্মহত্যার মতো ক্লেশকর পথে পা বাড়াতে হয় না। আত্মহত্যা থেকে বিরত থাকতে আল্লাহ তাআলা বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন এবং আত্মহত্যার পরিণামে কঠোর শাস্তির বর্ণনা দিয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা নিজেদের হত্যা কোরো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু এবং যে কেউ সীমা লঙ্ঘন করে অন্যায়ভাবে তা (আত্মহত্যা) করবে, তাকে অগ্নিতে দগ্ধ করব; এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ২৯-৩০)