সিলেটে বোমা বিস্ফোরণে পুলিশের সন্দেহের তালিকায় হতাহতরা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ মার্চ ২০১৭, ১২:৪২ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলের কয়েকশ’ গজ দূরে সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কে পুলিশের একটি চেকপোস্টের কাছে দুই দফায় বোমা বিস্ফোরণে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের কেউ কেউ পুলিশের সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন। বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে এদের কেউ জড়িত কি না, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শনিবার সন্ধ্যায় ওই বোমা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ সর্বমোট ৬জন নিহত হন। ঘটনাস্থলেই মারা যান চার জন। বাকিরা ওসমানী হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান। আহত হন ৪৪ জন।
নিহতদের মধ্যে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা হলেন- নগরীর জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম ও আদালতে পুলিশের পরিদর্শক চৌধুরী মো. আবু কায়সার। অন্যরা হলেন- সিলেট মহানগর ছাত্রলীগ নেতা ওয়াহিদুল ইসলাম অপু ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জান্নাতুল ফাহিম, নেত্রকোনার শহীদুল ইসলাম ও সুনামগঞ্জের ছাতকের দয়ারবাজার এলাকার কাদিম শাহ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শহীদুল ইসলাম ও কাদিম শাহ সিলেট নগরীর দাড়িয়াপাড়ায় প্রাইম লাইটিং অ্যান্ড ডেকোরেটর নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালাতেন।
হামলায় নিহত ছয় জনের মধ্যে ওসমানী হাসপাতাল থেকে পুলিশের অনুমতি সাপেক্ষে চার জনের লাশ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি দুজনের ব্যাপারে তদন্ত করছে পুলিশ। এ দুজন বোমা হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত কি না, সে বিষয়টি নিশ্চিত হতে চাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এদিকে, হামলায় আহত কয়েকজনের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
বোমা বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে কাউকে সন্দেহ করা হচ্ছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এস এম রোকন উদ্দিন বলেন, ‘তদন্ত করে নিহতদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। নিহতদের স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সিলেটের বাইরের যে দুজন নিহত হয়েছেন, তাদের ব্যাপারেও অনুসন্ধান করা হচ্ছে। অনুসন্ধান শেষে তাদের লাশ হস্তান্তর করা হবে।’
ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আহতদের ব্যাপারেও খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। পুরো বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। আমরা হামলাকারীদের শনাক্ত করার ব্যাপারে আশাবাদী।’
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই ব্রিফিং শেষ হওয়ার কিছু পরই সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কে পুলিশের একটি চেকপোস্টের কাছে দুই দফায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এর আগে আতিয়া মহলের মালিক উস্তার মিয়ার ছেলে রিপন জানান, জানুয়ারি মাসে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দুজন ওই বাসার নিচতলায় ওঠেন। একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন বলে জানান তারা।
পুলিশ জানায়, কিছুদিন আগে এই এলাকায় বাড়ির মালিকের কাছে ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়। উস্তার মিয়া তার বাড়ির ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে থানায় যে তথ্য জমা দেন, সেগুলি যাচাই বাছাই করে পুলিশের সন্দেহ হয়। এই সন্দেহের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিশ তল্লাশিতে গেলে ভেতর থেকে তাদের উদ্দেশ্য করে বোমা নিক্ষেপ করা হয়।