সিলেটে বোরো চাষে ব্যস্ত কৃষকরা, লক্ষ্যমাত্রা ১৮ লাখ টন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জানুয়ারি ২০১৭, ৪:৩৬ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
আমনের ধান ঘরে উঠেছে। বিদায় নিয়েছে অগ্রহায়ণ। পৌষের শুরুতে বীজতলায় গজিয়েছে সবুজ চারা, শেষ দিকে জমিতে রোপন করা চলছে। দম ফেলার ফুরসত নেই চাষিদের। বোরো ফসল চাষে শুরু হয়েছে তোড়জোড়। বোরো ধান চাষে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে কৃষকরা। এমন ব্যস্ততা সিলেট অঞ্চলের কৃষক পরিবারগুলোতে। এবারের বোরো মৌসুমে সিলেট থেকে প্রায় ১৮ লাখ মেট্রিকটন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সিলেট কৃষি সম্প্রদারণ অধিদপ্তর।
পৌষ মাসের শেষ দিকে জমিতে ধানের চারা পুষ্ট হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। কারণ সিলেটের হাওরের পানি দেরিতে নামায় ধানের চারা লাগাতে বিলম্ব হচ্ছে।
হাওরাঞ্চলের কৃষকদের অনেকে এখনও জমি চাষাবাদের জন্য প্রস্তুত করছেন। যে কারণে ধান রোপন শেষ করতেই বিদায় নেবে পৌষ।
বিশেষ করে বৃহত্তর সিলেটের হাকালুকি হাওর, টাঙ্গুয়া, শনির হাওর, দেখার হাওর, হাইল হাওরে জমিগুলোতে এখন ধানের চারা রোপন চলছে পুরোদমে।
ধানের চারা লাগাতে বিলম্ব হওয়ায় এখন কৃষকরা চড়াদামে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ ও শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে চারা রোপন করাচ্ছেন। চলতি বছর বোরো মৌসুমে বৃহত্তর সিলেটে বোরো ধান থেকে প্রায় ১৮ লাখ মেট্রিকটন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে সিলেট কৃষি সম্প্রদারণ অধিদপ্তর।
সিলেট কৃষি সম্প্রদারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবার সিলেটের চার জেলায় ৪লাখ ৫৬ হাজার ৭১৪ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরমধ্যে সিলেটে ৭৬ হাজার ৮৩৩ হেক্টর, মৌলভীবাজারে ৫০ হাজার ৪৬৪ হেক্টর, হবিগঞ্জে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬শ’ হেক্টর, সুনামগঞ্জ ২লাখ ১৫ হাজার ৮১৭ হেক্টর জমিতে বোরো জমি প্রস্তুত করা হচ্ছে।
বিভাগে কৃষকের সংখ্যা ১১লাখ ৮১ হাজার ১১৩ জন কৃষক এবার বোরো চাষাবদ করছেন। এরমধ্যে সিলেটে ৩ লাখ ২৮ হাজার ৬৪ জন, মৌলভীবাজার ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯ জন, হবিগঞ্জ ২লাখ ৮৫ হাজার ২২৫ জন এবং সুনামগঞ্জে ৩লাখ ২০ হাজার ৮৪৫ জন কৃষক রয়েছেন।
এসব কৃষকের মাধ্যমে এবার ১৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭১ মেট্রিকটন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে, জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের উপ পরিচালক কৃষ্ণ চন্দ্র হুড়।
তিনি বলেন, এবার দেরিতে বোরো চাষাবাদ শুরু হলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ অর্জন সম্ভব মনে করেন তিনি।
ফেঞ্চুগঞ্জের ঘিলাছড়া ইউনিয়নের হাকালুকি পাড়ের কৃষক কামরান আহমদ মামুন বলেন, এবার হাকালুকির পানি নেমেছে দেরিতে। তাই দেরিতে বোরো ধানের চারা রোপন করা চলছে।
দেরিতে জমিতে চাষাবাদ শুরু করলেও ফলন ঘরে তোলার আশাবাদ ব্যক্ত করে একই এলাকার চাষী শামীম আহমদ বলেন, প্রকৃতির বিরূপ প্রভাব না পড়লে ফলন ভালো হবে। এ বছর ৩ বিঘা জমিতে চাষ করছেন তিনি।
জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের তেলিকোণা গ্রামের কৃষক লোকমান হুসাইন বলেন- আমরা বেশ কয়েক কেদার জমি রোপন করেছি। এবার ভালো আবহাওয়া থাকায় রোপণ কাজ এগুচ্ছে।
ওসমানীনগর উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের কৃষক দবির মিয়া জানান- বীজতলায় আশানুরূপ বীজ হয়েছে তাই আমরা স্বাচ্ছন্দে জমিতে রোপণ করতে পারছি।