ওসমানীনগরে জেলা প্রশাসক নির্বাচনের পূবাল হাওয়া : সম্ভাব্য প্রার্থীদের সরব প্রচারনা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ নভেম্বর ২০১৬, ১:১৪ পূর্বাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
জেলা প্রশাসক নির্বাচনের পূবাল হাওয়া লাগতে শুরু করেছে ওসমানীনগরের বিভিন্ন এলাকায়। চেয়ারম্যান ও সম্ভাব্য সদস্য প্রার্থীরা ৮ টি ইউনিয়নে তাদের অবিরাম প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিমধ্যে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।সদস্য পদে একাধিক প্রার্থী প্রতিদন্ধিতা করবেন প্রবাসী অধ্যুষিত ওসমানীনগর থেকে। যদিও এতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন শুধুই জনপ্রতিনিধিরা তারপরও নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পরেছে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্ধ ছাড়াও নির্দলীয় অনেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন। ইতিপুর্বেই তারা এলাকায় তাদের প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে তাদের সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ না করতে পারলেও অনেকেই তাদের পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারনা অব্যাহত রেখেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি সংবলিত পোস্টার লাগিয়ে ভোটার ও সাধারণ মানুষের কাছে পৌছে দিচ্ছেন তাদের আগমনী বার্তা। ব্যক্তিগত সততার ইমেজে উজ্জ্বল ব্যক্তিদের উপর দৃষ্টি রয়েছে ওসমানীনগরের জনপ্রতিনিধিদের।
বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা যায়, আসন্ন জেলা প্রশাসক নির্বাচনে ৮ নং ওয়ার্ড ওসমানীনগর থেকে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন,জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডঃ লুৎফুর রহমান। ডক্টর এনামুল হক সরদার স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। সদস্য প্রার্থী হিসেবে স্বতন্ত্র থেকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হাই মোশাহিদ, আওয়ামী লীগ নেতা সাইয়্যিদ আহমদ বহলুল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি পংকজ পুরকায়স্থ এবং উপজেলা জাতীয় পার্টি নেতা পীর এনাম মাঠে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। মহিলা সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন সুষমা সুলতানা রুহি, রহিমা বেগম রব্বানী ও চামেলী রানী দে।
বর্তমান জেলা প্রশাসক অ্যাডঃ লুৎফুর রহমান ১৯৬২ সালে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে পা রাখেন। গণপরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান বর্তমানে সিলেট জেলা পরিষদের শীর্ষ পদে আছেন প্রশাসক হিসেবে। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ভারটিও সামলাচ্ছেন। তার ওপর আছে বয়সের ভার। তবে কোনো ভারই তার রাজনৈতিক পথচলায় বাধা হতে পারেনি। নির্বাচনের মাধ্যমে এবার বসতে চান জেলা পরিষদের শীর্ষ চেয়ারে। অপর প্রার্থী ডক্টর এনামুল হক সরদার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদন্ধিতা করবেন। সদস্য পদে দয়ামীর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লেখক গবেষক আব্দুল হাই মোশাহিদ এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে বিরামহীন প্রচারনা অব্যাহত রেখেছেন। দলীয় ভাবে এই নির্বাচন না হওয়ায় তিনি আশাবাদী নির্বাচনে ভালো ফলাফলের। তিনি বলেন,মহান আল্লাহ তায়ালার কৃপায় আমার জীবনে আমি অনেক প্রতিষ্টান বা সংগঠনের শীর্ষ দায়ীত্ব পালন করেছি, কিন্তু কোনোটারই পদ আঁকড়ে ধরে পড়ে থাকিনি। পদের লোভ আমার কোনো দিনই ছিলোনা, এখনো নেই। জেলা পরিষদ নির্বাচন করতে চাই শুধু জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কাজ করার জন্য।পাঁচটা বৎসরে ওসমানীনগরটাকে সাজাবার জন্য। আপনারা আমার সাথী থাকবেন প্রত্যাশা রইলো ।
উসমানপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সাইয়্যিদ আহমেদ বহলুল ওসমানীনগর উপজেলা বাস্তবায়নসহ এলাকার নানা দাবী দাওয়া আদায়ে অগ্রনী ভুমিকা পালন করে থাকেন। নিজেকে এলাকার উন্নয়নে সম্পৃক্ত রাখতে এ নির্বাচনে তিনি অংশ নিচ্ছেন বলে জানা যায় ।
মহিলা সদস্য পদে তাজপুর ডিগ্রি কলেজের ভূমিদাতা ও প্রতিষ্টাতা বিশিষ্ট সমাজ সেবক মরহুম আজহার আলীর মেয়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমেদের সহধর্মীনি তৃণমূল নারী উদ্যেক্তা সিলেট জেলা শাখার সভাপতি সুষমা সুলতানা রুহী প্রচারনা শুরু করেছেন পুরোদমে। তার পক্ষে একাধিক রাজনৈতিক নেতাকর্মী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে প্রচারনা অব্যাহত রেখেছেন। অনেকেই মনে করেন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হিসাবে তার সকল যোগ্যতাই রয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামী ২৮ ডিসেম্বরে দেশের ৬১ টি জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রস্তুতি গুটিয়ে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ১৯৮৯ সালে তিন পার্বত্য জেলায় একবারই সরাসরি নির্বাচন হয়েছিল। আর কোন জেলায় নির্বাচন হয়নি। পাঁচ বছর মেয়াদী জেলা পরিষদগুলোতে বর্তমানে অনির্বাচিত প্রশাসক দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর ৬১ জেলায় আওয়ামীলীগের জেলা পর্যায়ের নেতাদের নিয়োগ দেয় সরকার।