নৈশ প্রহরী ভুট্টো হত্যা : প্রতিবাদে ওসমানীনগরে মানববন্ধন
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ অক্টোবর ২০১৬, ১১:৫৯ অপরাহ্ণ
শামীম আহমদ: বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর এই দুই উপজেলার সীমান্তে ঘেঁষা একটি জনপদ। প্রাচীন এই জনপদের ওসমানীনগর অংশের নাম নতুন বাজার। আর বিশ্বনাথ অংশের নাম কাইয়া কাইড় বাজার। বলা বাহুল্য দুই উপজেলার দুই অংশ নিয়ে একটি পরিপূর্ণ বাজার। এই বাজারের ব্যবসায়ীদের বিশ্বস্থ ছিলেন নৈশ প্রহরী আছদর আলী ভুট্টো। অতন্ত্র প্রহরী এই ভুট্টোকে পাষন্ড দুবৃত্তরা নির্মম ভাবে খুন করেছে। এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছেন। হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে সোমবার বিকেলে নতুন বাজারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। মানববন্ধন স্থলে প্রতিবাদী মানুষের ঢল নামে। এতে নতুন বাজারের ব্যবসায়ী সহ এলাকার সর্বস্থরের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। তারা ব্যানার, ফেস্টুন, প্লেকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে একাত্বতা পোষন করেন। এলাকার সচেতন নাগরিক সমাজের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ওসমানীনগর শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অরবিট ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্টাতা পরিচালক মো: সাজু মিয়া। মানববন্ধন পরবর্তী প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, নৈশ প্রহরী ভুট্টো ছিলেন সর্বজন প্রিয়। তিনি খুন হওয়ার পর ১৮-১৯ দিন পেরিয়ে গেছে, কিন্তু কোনো ক্লু উদঘাটন হচ্ছেনা। বিশ্বনাথ থানার পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে কাল বিলম্ব করছে। পুলিশ প্রশাসন অদৃশ্য পেশী শক্তির ইশারায় নিরব ভুমিকা পালন করছে।
বক্তারা জোর দাবী জানিয়ে বলেন, আগামী দশ দিনের মধ্যে খুনিদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে, অন্যতায় এলাকাবাসী দুর্বার আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষনা করতে বাধ্য হবে। তবে-কোনো নিরিহ মানুষকে অযথা হয়রানী না করার জন্য মানববন্ধন স্থল থেকে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহবান জানানো হয়। ধারাভাষ্যকার মোদাব্বির হোসেন জামালের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন, দয়ামীর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী ফারুক মিয়া, আল ইহসান ওয়েল ফেয়ার এর চেয়ারম্যান মুক্তার হোসেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বালাগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি সাংবাদিক শামীম আহমেদ, জমির আহমদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল হান্নান, জিনিয়াস চাইল্ড একাডেমির প্রিন্সিপাল আব্দুর রকিব, এমসি কলেজর শিক্ষার্থী রুয়েল মিয়া, ব্যবসায়ী নুরুল হক, মানিক আলী, শামীম আহমদ ও এলাকাবাসির পক্ষে গোলাম হোসেন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, নিহত নৈশ প্রহরী আছদর আলী ভুট্টোর (৭০) বাড়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার গন্না গ্রামে। তিনি দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে কাইয়া কাইড় বাজার (বিশ্বনাথ অংশ) এবং নতুন বাজার (ওসমানীনগর অংশে) নৈশ প্রহরীর দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনির সপরিবারে লোকজনও বিশ্বনাথে বসবাস করতেন। ১৪ অক্টোবর ভোরে কাইয়া কাইড়-নতুন বাজার (বাজারের বিশ্বনাথ অংশে) মসজিদে ফজরের নামাজ পড়তে আসা মুসল্লীগন মসজিদের অযু খানায় আছদর আলী ভুট্টোর মৃত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় নিহতের ছেলে আবদুল হাকিম বাদি হয়ে ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিশ্বনাথ থানার মামলা নং-০৯। এদিকে-ভুট্টো হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে ১৬ অক্টোবর সন্ধায় খাইয়া খাইড় বাজার (বিশ্বনাথ অংশ) এলাকা থেকে ওসমানীনগর উপজেলার খাতিপুর গ্রামের জয়ফর আলী ছেলে জামাল আহমদকে গ্রেফতার করে বিশ্বনাথ থানার পুলিশ। তবে-এই হত্যাকান্ডের সাথে সে জড়িত কি না এবিষয়ে এখনো মুখ খোলেনি পুলিশ।