বিশ্বনাথে জীবনের ঝুকি নিয়ে স্কুল ভবনের ভেতরে পাঠদান
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ অক্টোবর ২০১৬, ৫:০১ অপরাহ্ণ
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি:
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার প্রাচীনতম একটি প্রাথমিক বিদ্যাপীঠ হচ্ছে সদলপুর-তাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর ওই বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু করে অনেক শিক্ষার্থী দেশ-বিদেশে বেশ সুনামের সাথে কাজ করে আসছেন। কিন্তু বর্তমানে ওই বিদ্যালয়টি একটিমাত্র ভবনের অভাবে শিক্ষক আর শিক্ষার্থীরা মানবেতর জীবন নিয়ে পড়া-লেখা করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে এক অজানা আতংকের মধ্য দিয়ে ওই বিদ্যালয়ের ঝুকিপূর্ণ ভবনের ভেতরে জীবনের ঝুকি নিয়ে চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান। বৃষ্টি হলে ভবনের ভেতরেই দাড়িয়ে থাকার বিন্দুমাত্র জায়গা পাওয়া যায়না। অফিস কক্ষের ভেতরে জরুরি কাগজপত্র নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছেন শিক্ষকরা। বৃষ্টির পানিতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার পুরাতন পেপারে মুয়া ওঠে গেছে। পাশাপাশি বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা পায়নি বঙ্গবন্ধু আর প্রধানমন্ত্রীর ছবিগুলো পর্যন্ত। ছবিগুলো পানিতে ভিজে নষ্ট হওয়ায় প্রধান শিক্ষক আরও নতুন দুটি ছবি দেয়ালে লাগিয়েছেন। এমন করুন অবস্থায় জীবনের ঝুকি নিয়ে একটি ঝুকিপূর্ণ ভবনে পড়া-লেখা করছেন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
জানাযায়, ১৯৩৪সালে ওই বিদ্যালয়টি বেসরকারিভাবে স্থাপিত হয়। প্রায় ৩৯বছর পর ১৯৭৩সালে ওই বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ করা হয়। এর পূর্বে দালানের তৈরী টিনসেডের একটি স্কুলঘর নির্মাণ করেন স্থানীয় জনসাধারণ। বর্তমানে ওই স্কুলঘরটির ওপরে কোনো ছাদ নেই। অনেক আগে ওই স্কুলঘরটিকে পরিত্যাক্ত করা হয়েছে। ওই স্কুলটি সরকারিকরণ হওয়ার প্রায় ৩০বছর পর গত ২০০৩-২০০৪অর্থবছরে ভাগ্যক্রমে সরকারিভাবে নির্মাণ করা হয় পূর্ণপাঁকা একটি ভবন। নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী আর অনিয়মের ফলে ভবনটি নির্মাণের মাত্র ১২বছরের ভেতরেই ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ভবনের দেয়াল আর বিভিন্ন পায়া-লিন্ডারে ভয়াবহ ফাঁটল ধরেছে। বৃষ্টি হলেই ভবনের ছাদ দিয়ে ভেতরে পানি ঝরে। মেজেতে প্রায় ৫থেকে ৬ইঞ্চি পরিমান বৃষ্টির পানি জমে থাকে। অফিসের জরুরী কাগজপত্র নিয়ে বিপাকে রয়েছেন প্রধান শিক্ষক। ওই ভবনটিও অনেক আগে ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের ওপর ভেঙ্গে পড়ার ভয় তাকলেও শিক্ষকরা অনেকটা নিরুপায় হয়ে শিক্ষার্থীদের ওই ভবনেই ক্লাস করাতে বাধ্য হয়েছেন। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানে চরম ব্যঘাত ঘটে পড়া-লেখার শুরুতেই অমনযোগী হয়ে পড়ছে। ভবনটি যেকোনো সময় ধসে পড়ে বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশংকা করা হচ্ছে।
এছাড়াও ওই বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপনা টয়লেট ও ওয়াসরুক নেই। এতে শিক্ষক-শিক্ষর্থীরা অনেকটা বিপাকে রয়েছেন। বিশেষ করে সরকারের শিক্ষানীতি ২০১০বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিদ্যালয়টিকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত উত্তীর্ণ করতে হলে ওই বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা অতিব জরুরী বলে মনে করছেন অনেকেই।
এব্যাপারে নব-নিযুক্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন- তিনি নতুন এসছেন সবকিছু এখনো জানাতে পারেন নি। তবে এবিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে যদি কোনো আবেদন না করা হয় তিনি সেই আবেদন করবেন বলে জানান।