ক্ষুব্ধ জগন্নাথপুরবাসী : নেপথ্যে মুকুটের বক্তব্য
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ আগস্ট ২০১৬, ৪:৫২ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি আজিজ পাশার বাড়ি জগন্নাথপুর উপজেলার কুবাজপুর গ্রামে জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা মুকুটের এমন বক্তব্যকে কেন্দ্র জগন্নাথপুরে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে। ১৫ ই আগষ্টের আলোচনা সভায় সুনামগঞ্জে জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা মুকুট জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ব্যারিষ্টার এম এনামুল কবির ইমনের মামা জগন্নাথপুরের কুবাজপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মুকিত চৌধুরী পাশাকে বঙ্গবন্ধুর খুনি আজিজ পাশা উল্লেখ করে ভূল তথ্য উপস্থাপন করে বক্তব্য দেয়ার পর থেকে গতকাল দিনভর জগন্নাথপুরে সর্বত্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইতে শুরু করে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠে। জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা বলেন, শুধু মাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বর্নাঢ্য জীবনের অধিকারী অবসর প্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা আব্দুল মুকিত চৌধুরী কে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে নিম্নরুচির গর্হিত কাজ করেছেন। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর খুনিকে জগন্নাথপুরের বাসিন্দা বানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ জগন্নাথপুর উপজেলাবাসীকে হেয় প্রতিপন্ন করায় আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি তাঁর প্রতিক্রিয়ায় আরো বলেন, স্বনামধন্য সাবেক সামরিক কর্মকর্তা আব্দুল মুকিত চৌধুরী
রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের কুবাজপুর গ্রামের সন্তান। মুকিত চৌধুরীর দুই বোন সফিকা চৌধুরী ও রফিকা চৌধুরী। দুই বোন জামাইর দুজনই মহান মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। দুজনই আমাদের জগন্নাথপুর উপজেলার কৃতি সন্তান। বড়বোন সফিকা চৌধুরীর স্বামী মরহুম আব্দুল হান্নান চৌধুরী যিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের আইন সচিব ও (অবঃ)জেলা জজ ছিলেন। তিনি জগন্নাথপুরের হবিবপুর গ্রামের সন্তান। ছোট বোন রফিকা চৌধুরীর স্বামী মরহুম আব্দুর রইছ, যিনি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক,সংসদ সদস্য,বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর কারা নির্যাতিত এবং আমৃত্যু সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাঁর জন্ম জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামে। রফিকা চৌধুরী নিজেও একজন খ্যাতিমান সমাজসেবিকা ও সুনামগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ছিলেন।মরহুম আব্দুর রইছ ও মরহুমা রফিকা চৌধুরীর কনিষ্ট সন্তান ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন শুধু সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নন,সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদেরও প্রশাসক। ব্যারিস্টার ইমনের মামা হওয়ার সুবাদে আজ একজন আপাদমস্তক ভদ্রলোক প্রবীন ব্যক্তিত্বকে যেভাবে নোংরা রাজনৈতিক খেলায় অপদস্ত করা ঠিক হয়নি।
রানীগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সহিদুল ইসলাম রানা বলেন, এধরনের মিথ্যাচারের জন্য নুরুল হুদা মুকুটকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
আব্দুল মুকিত চৌধুরীর পরিবারের সাথে ঘনিষ্টভাবে পরিচিত জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষকে বঙ্গবন্ধুর খুনি বানানোর ঘটনায় আমরা মর্মাহত হয়েছি।
জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কলকলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা মুকুটের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যা পর মিষ্টি বিতরণকারীরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ব্যারিষ্টার এম এনামুল কবির ইমনের মামার নামে মিথ্যাচার করায় আমরা ধিক্কার জানাই। এধরনের মিথ্যাচার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই। জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক রেজা্উল করিম রিজু বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি নিয়ে বিভ্রান্তিকর এমন অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানাই।
জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আকমল হোসেনবলেন, আজিজ পাশা নামে বঙ্গবন্ধুর কোন খুনি কুবাজপুর তথা জগন্নাথপুরে নেই। এধরনের বিভ্রান্তিমুলক তথ্যে জগন্নাথপুরবাসী ক্ষুব্ধ।