প্রচন্ড তাপে পুড়ছে সিলেট : অতিষ্ট জনজীবন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ আগস্ট ২০১৬, ৯:৫৯ পূর্বাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
বৃষ্টি-বাদলের সময়ে তীব্র তাপমাত্রা। গরম বাতাস শরীরে লাগছে আগুনের হুলকার মতো। সঙ্গে ভাপসা গরম, অস্বস্তিতে আছে জনজীবন।আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে গতকাল মঙ্গলবার তাপমাত্রা ছিল সিলেটে মাস দুয়েকের মধ্যে সর্বোচ্চ। ঘরে-বাইরে কোথাও সামান্য স্বস্তিটুকুও নেই। নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও পথচারীরা গরমে কাবু ছিল সবচেয়ে বেশি। কাজ ও জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হয়ে প্রচণ্ড রোদ, উত্তাপে বাতাসেও তীব্র গরমের স্পর্শ।
ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই! শিশুরা ছাড়াও গরমে সবচেয়ে বেশি কাবু হয়ে পড়ছেন বৃদ্ধরা। নেতিয়ে পড়ছে গাছ-গুল্ম-লতা। প্রাণিকুলও বিপর্যস্ত। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শুরু হয়েছে অসহনীয় লোডশেডিং। তীব্র গরম আর অসহনীয় তাপমাত্রার কারণে দিনের বেলা লোকজনের চলাচল অন্য সময়ের চেয়ে অনেকটাই কম। কর্মজীবী মানুষ বাইরে বের হলেই অতিরিক্ত ঘামে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। ক্লান্তি দূর করতে কেউ পান করছেন ডাবের পানি, কেউবা খাচ্ছেন শসা, ক্ষীরা। তাই প্রচন্ড গরমে আনারস, ঠান্ডা পানীয় আর ডাবের পানি বিক্রি বেড়ে গেছে বহুগুণ। লাচ্ছি জুস আর কোমল পানীয়ের ব্যবসাও বেশ জমজমাট। পিপাসায় কাতর মানুষ রাস্তার ধারের এসব খাবার খেয়ে আবার অসুস্থও হয়ে পড়ছেন কেউ কেউ।
গরমে এর সাথে যোগ হয়েছে ডায়রিয়া। হাসপাতালে প্রতিদিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। এমনকি তাপমাত্রা আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। এছাড়াও কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ার কারণেই তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বৃষ্টি হলেই গরম কমে যাবে। এদিকে অতিরিক্ত গরমের কারণে সর্দি-কাশি, জ্বর, ডায়রিয়া হচ্ছে। এমন অবস্থা যে, ঘরে ঘরে জ্বরের রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। প্রতিদিনই হাসপাতালগুলোতে পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
একজন চিকিৎসক বলেন, ঘরের পরিবেশ যতটা সম্ভব ঠান্ডা রাখা গেলে ডায়রিয়া ও শ্বাসজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকবে। এ ছাড়া গরমে শিশুদের বেশ সাবধানে রাখতে হবে। রোদে যাতে বেশি ঘোরাঘুরি না করে তা দেখতে হবে। ঘেমে গেলে শরীর মুছে দিতে হবে। অধিক ঠান্ডা পানির পরিবর্তে স্বাভাবিক তাপমাত্রার অথবা হালকা ঠান্ডা পানি পান করতে হবে। পাশাপাশি সুতির হালকা কাপড় পরতে হবে। প্রচণ্ড এই গরমে সবাইকে প্রচুর পানি ও খাওয়ার স্যালাইন গ্রহণের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘সুস্থ থাকতে হলে রাস্তার ধারে ফুটপাতে খোলা জায়গায় বিক্রি করা শসা, আখের রস, আনারস, লেবুব শরবতসহ সব ধরনের খোলা পানীয় পান থেকে বিরত থাকতে হবে। গরমে বাইরের খাবার খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।’
সিলেট আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান- গতকাল বিগত মাস দুয়েকের মধ্যে তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ। জুন মাসে তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশকিম ৭, জুলাইয়ে ছিল ৩৫ দশমিক ৫, আর গতকাল বিকেল ৩টায় তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৪। তিনি বলেন- সাধারণত এখন বৃষ্টি-বাদলের সময়। এসময় এ ধরণের তাপমাত্রা থাকার কথা না। প্রকৃতিতে অস্বাভাবিক রকমে পরিবর্তন ঘটছে ।