ইতিহাসের পাতায় সিলেট: যেভাবে বিভাগ হিসেবে যাত্রা শুরু সিলেটের
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ আগস্ট ২০১৬, ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজঃ
সিলেট। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বের জনপদ। হাজার বছর ধরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ইতিহাসের পাতায়-পাতায় ছড়িয়ে আছে এর নাম। কখনও শ্রীহট্ট, কখনওবা সিলহেট আর প্রিয় আদুরে নাম ‘সিলট’। রূপের মায়ায় সবাইকে কাছে টানে বারবার। রবীন্দ্রনাথও প্রেমে পড়েছিলেন এই সিলেটের। তার চোখে সিলেট ধরা দিয়েছে ‘শ্রীভূমি’ হিসেবে। সাধক পুরুষ হযরত শাহজালালের (রাহ.) পদস্পর্শে ধন্য হয়েছে সিলেটের মাটি। পৌরাণিক উপাখ্যান মহাভারতেও মেলে সিলেটের সন্ধান। অশ্বমেধের যজ্ঞের ঘোড়া খুঁজতে অর্জুনের পা পড়েছিল এখানটাতেই। নদীয়ার নিমাই যাকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রীকৃষ্ণের অবতার মানেন সেই শ্রীচৈতন্য পৃথিবীতে আগমনেরও আগে যখন মায়ের গর্ভে এসেছিলেন তখন তার প্রথম আগমনধ্বনি শুনেছিলো এই সিলেটই।
সিলেট বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত হাজার বছরের ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এক জনপদ। ইতিহাসের পথ বেয়ে অনেক ভাঙা-গড়ার সাক্ষী এই জনপদ। অনেক কাটাঁছেড়া হয়েছে এর গায়ে। ব্রিটিশ শাসনামলেও এর সীমানা পাল্টেছে, কখনও এ জনপদ আসামের অংশ, কখনওবা বাংলার অংশ। ইতিহাসে এ অঞ্চলের প্রাচীন সীমানার যে উল্লেখ পাওয়া যায় সে অনুসারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বর্তমান সড়াইল উপজেলা, বৃহত্তর ময়মনসিংহের জোয়ানশাহী, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের অনেকাংশ শ্রীহট্টের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সময়ের পথ সে অংশগুলো হারাতে হয় সিলেটকে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় করিমগঞ্জ মহকুমার সাড়ে তিন থানাও (পাথারকান্দি, বদরপুর, রাতাবাড়ি থানা এবং করিমগঞ্জ থানার অধিকাংশ) হারাতে হয় সিলেটকে। অবশিষ্ট অংশটকু সিলেট নামে যুক্ত হয় পূর্ব পাকিস্তানের সাথে। মহান মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্মের পর ১৯৮৩-৮৪ সালে প্রশাসনিক পুনর্গঠন এর সময় সিলেট জেলাকে ভেঙে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ নামে ৪টি নতুন জেলায় বিভক্ত করা হয়। সেই ৪ জেলা আবার এক সূতোয় বাঁধা পড়ে ১৯৯৫ সালে সিলেট বিভাগ নামে। এর আগে জেলা ৪টি ছিলো চট্টগ্রামের অধীনে। ১৯৯৫ সালের ১ আগস্ট চট্টগ্রাম থেকে পৃথক হয়ে যাত্রা শুরু হয় নতুন বিভাগ সিলেটের।