বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরে বিদ্যুৎ বিল প্রদানে গ্রাহকদের হয়রানি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জুলাই ২০১৬, ১২:৪১ অপরাহ্ণ
বালাগঞ্জ সংবাদদাতা: ওসমানীনগর বালাগঞ্জ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের বিল প্রদান করতে গ্রাহকরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। অনলাইনে বিল পরিশোধ করার পর গ্রাহকদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা এবং সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১এর ওসমানীনগর উপজেলাধীন কাশিকাপনস্থ জোনাল অফিসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে গিয়ে গ্রাহকরা নানাভাবে হেনস্তারও শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, ঘন্টার পর ঘন্টা লোকজনকে সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে ক্যাশ কাউন্টারে বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। শুধু একটি কাউন্টারে একজন মহিলা কর্মকর্তাকে দিয়ে বিল নেয়া হচ্ছে। আবার বিল গ্রহনকারী মহিলা কর্মকর্তা প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে ক্যাশ কাউন্টার থেকে উঠে গিয়ে দির্ঘ সময় বিলম্ব করছেন। এদিকে মিটারবাণিজ্যে ব্যস্ত রয়েছে অফিস কর্তৃপক্ষ। টাকার বিনিময়ে আগের আবেদন পেছনে রেখে পরের আবেদনের মিটার লাগানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। চলতি জুন মাসে বকেয়া বিল পরিশোধ করতে গ্রাহকদেরকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। কিন্তু অফিসে বিল গ্রহণের দায়িত্বহীনতার কারণে বিল পরিশোধকারী রোজাদার লোকজনের সীমাহীন ভোগান্তি হচ্ছে। সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১এর কাশিকাপনস্থ বালাগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) জহিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সারা বছর এরকম ঝামেলা থাকেনা, জুন মাসের পর তা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এদিকে অনলাইনে বিল পরিশোধ করার পরও ফরহাদ মিয়া নামে রিফাতপুর গ্রামের এক গ্রাহকের সংযোগ বুধবার বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সংযোগ বিচ্ছিন্নকারী লোকজনকে অনলাইনে বিল পরিশোধের প্রমানধি দেখালেও তারা কর্ণপাত করেননি।
ফরহাদ মিয়া বলেন, বালাগঞ্জ এরিয়া অফিসের ইনচার্জের কাছে গিয়ে অনলাইনে বিল পরিশোধের প্রমানাধি দেখানোর পর তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য অনুরোধ করেন। অপর দিকে বালাগঞ্জ উপজেলার গালিমপুর গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নামে এক ইউপি সদস্য গ্রামবাসীদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় করে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার পুর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার রঞ্জিত বৈদ্য গ্রামবাসীকে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কথা বলে প্রায় অর্ধ শতাধিক লোকজনের কাছ থেকে জন প্রতি ৪হাজার ২শ টাকা আদায় করে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ পাওয়ার কথা থাকলেও সহজ-সরল গ্রামবাসীকে ভুল বুঝিয়ে তাদের কাছ থেকে এক দফা টাকা নেয়ার পরও আরো টাকা নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন বলে এলাকার লোকজন অভিযোগ করেছেন। এবিষয়ে গ্রামবাসীরা সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ ১-এর জেনারেল ম্যানেজারের (জিএম) নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েও এখন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছেনা পল্লীবিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টরা।
ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারের ব্যবসায়ী ঝন্টু পাল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ব্যাংকে বিল দেয়ার পরও পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে দুই দুইবার আমার লাইন কাটা হয়েছে। এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ কাশিকাপন জোনাল অফিসের ডিজিএমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে বিচার দিয়ে লাভ হয়নি।
বিদ্যুৎতের একাধিক গ্রাহক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কাশিকাপন জোনাল অফিসসহ সাদীপুর, উমরপুর, মাদার বাজার অভিযোগ কেন্দ্রে কর্মরত কর্মকর্তাদের হাতে প্রতিদিন সাধারণ গ্রাহকরা হয়রানির স্বীকার হচ্ছে। এসব নিয়ে একাধিক অভিযোগ দেয়ার পরও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দায়সারা ভাব প্রকাশ করে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ-১ এর ওসমানীনগরে কাশিকাপন জোনাল অফিসের ডিজিএম জহিরুল ইসলাম বলেন গ্রাহকরা যাতে কোনো প্রকার হয়রানির স্বীকার না হয় সে জন্য আমাদের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। এরপর কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি সেবার নামে গ্রাহকদের হয়রানি করে থাকেন তাহলে তদন্তপূর্বক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।