সেই আরিফ
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জুন ২০১৬, ৬:২৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজঃ সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের ১৫ জুন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে পেছনে ফেলে বিজয়মাল্য পড়েন বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী। ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়রের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন আরিফ। সিসিক’র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার তিন বছর পেরিয়েছে গত ১৫ জুন। নির্বাচিত হওয়ার দেড় বছরের মাথায় কারান্তরীণ এবং মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হন আরিফুল হক চৌধুরী। তবে এখনো সিলেট সিটি করপোরেশনে ‘মেয়র’ হিসেবে আলোচনায় আরিফুল হক চৌধুরী।
জন রায় নিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে সিসিক মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হন আরিফুল হক চৌধুরী। ওই মামলার সম্পূরক চার্জশিটভুক্ত আসামি হয়ে ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর আত্মসমপর্ণ করে কারান্তরীণ হন তিনি। কারাগারে যাওয়ার পর, ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি আরিফকে মেয়র পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর প্রায় দেড় বছর দায়িত্ব পালন করেছেন আরিফুল হক চৌধুরী। ওই সময়ে ছড়া-খাল উদ্ধার, ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদসহ বেশ কয়েকটি জনগুরুত্বপূর্ণ কাজে হাত দিয়ে প্রশংসিত হন তিনি। এরপর তিনি কারান্তরীণ ও বরখাস্ত হওয়ার আরো দেড় বছর পেরিয়ে গেছে। এ দীর্ঘ সময়েও সিলেটে ‘মেয়র’ হিসেবে আলোচনায় ঘুরপাক খাচ্ছেন তিনি। আরিফ মেয়রের পদ থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর সিসিক’র প্যানেল মেয়র-১ ও প্যানেল মেয়র-২ এর মধ্যে শুরু হয় রশি টানাটানি। ভারপ্রাপ্ত মেয়রের পদ নিয়ে তাদের ঠাণ্ডা লড়াই গড়ায় আদালতের কাঠগড়ায়। কিন্তু আইনী মারপ্যাঁচে এখনো সমাধান হয়নি ভারপ্রাপ্ত মেয়রের পদে কে বসবেন, সে বিষয়টি।
মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হলেও এখনো সিলেট নগর ভবনে মেয়রের নামফলকে লেখা রয়েছে আরিফুল হক চৌধুরীর নাম। মেয়রের জন্য নির্ধারিত ওই কার্যালয়ে এখনো বসেন না অন্য কেউ। আইনী মারপ্যাঁচে মধ্যখানে একবার সিসিক’র প্যানেল মেয়র-২ সালেহ আহমদ চৌধুরী ওই কার্যালয়ে বসেছিলেন। তবে তার সেই বসা স্থায়ীত্ব পায় নি। এদিকে গত ১৭ জুন সিলেট নগরীর কুমারপাড়াস্থ আরিফের বাসায় লাগানো হয়েছে নতুন নেমপ্লেট। যেখানে লেখা হয়েছে ‘মেয়র হাউজ / আরিফুল হক চৌধুরী / সিলেট সিটি করপোরেশন’।
এদিকে নির্বাচিত মেয়র আরিফ কারান্তরীণ হওয়ায় এবং ভারপ্রাপ্ত কোনো মেয়র না থাকায় উন্নয়নের ক্ষেত্রে নগরবাসীর আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটছে না। নগরীতে যখনই বড় ধরনের কোনো দুর্ভোগ দেখা দেয়, তখনই নগরবাসীর মুখে ওঠে আসে আরিফের নাম।
সবমিলিয়ে বরখাস্ত হওয়ার প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো সিলেট সিটি করপোরেশনে ‘মেয়র’ হিসেবে আলোচনার পাদপ্রদীপে রয়েছেন আরিফুল হক চৌধুরী।