ওসমানীনগরে দুস্কৃতিকারীদের হামলার শিকার প্রতিবন্ধি পরিবারের মানবেতর জীবন-যাপন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ জুন ২০১৬, ১২:৪৪ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ জেলার ওসমানীনগরে দুস্কৃতিকারীরা এক প্রতিবন্ধি পরিবারের ওপর হামলা চালিয়ে মালামালসহ বসতঘর ভেঙ্গে তছনছ করে দেয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে এই পরিবারটি। মাথা গোঁজার কোন ঠাই না থাকায় গত তিন ধরে স্থানীয় এক বিদ্যালয় বারান্দায় আশ্রিত তারা। ঘটনার পর কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ঘটনাটি প্রকাশ পেলে নিন্দার ঝড় উঠে এবং প্রতিবাদী হয়ে উঠেন এলাকাবাসী। একই সাথে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন তৎপর হয়। পুলিশ এ পর্যন্ত এজাহারভূক্ত দুই মহিলাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
জানা যায়, গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় তাজপুর ইউপির সাবেক মেম্বার রঙ্গিয়া গ্রামের জিলু মিয়া ও তার সহযোগী কথিত সাংবাদিক আবদুল হাফিজ সোহেল ২০/২৫জন লোক নিয়ে প্রতিবন্ধি গিয়াস উদ্দিনে বসতভিটা দখলে নিতে তার বাড়িতে হামলায় চালায়। এ সময় তাদের হামলায় প্রতিবন্ধি গিয়াস উদ্দিন (৩৮), তার মা রংফুল বিবি (৬০), বোন লাকি বেগম (২৩), সাহেরা বেগম (২০) ও হেপি বেগম (১৮) আহত হন। হামলাকারিরা মুহুর্তের মধ্যে গিয়াস উদ্দিনের বসত ঘরসহ ঘরে থাকা আসবাবপত্র ও অন্যান্য মালামাল ভেঙ্গে তছনছ করে দেয়। প্রভাবশালী সন্ত্রাসীদের ভয়ে অসহায় পরিবারটির পাশে এসে দাড়ানো সাহস করতে পারেনি কেউ। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ফেইসবুকে প্রকাশ পেলে গ্রামবাসীরাও প্রতিবাদে সরব হন। এ সময় পরিবারটিকে স্থানীয় স্কুলে সাময়িক ভাবে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।
শনিবার বিকেলে নেক্কারজনক এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে প্রতিবাদী মানুষগুলো নেমে আসেন রাজপথে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে প্রায় আধাঘন্টা ব্যাপী সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের তাজপুর এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করেন প্রতিবাদীরা। এ ঘটনায় গিয়াস উদ্দিনের ছোট বোন হেপী বেগমের দায়েরকৃত মামলায় এখন পর্যন্ত মহিলাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। মামলায় আব্দুল হাফিজ সোহেলসহ ৮ জনকে আসামী করা হয়েছে।
প্রতিবন্ধি গিয়াস উদ্দিন জানান, ৫৫ বছর ধরে আমরা মৌরসী ও খরিদা সত্বে মালিক হয়ে বাড়িতে বসবাস করে আসছি। জিলু মেম্বার ও সোহেলসহ একদল সন্ত্রাসীরা আমার বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটতরাজ চালিয়ে দখল করে নেয়। দখলবাজ হামলাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উল্লেখ করে বলেন, ঘটনাটি নেক্কারজনক। এলাকাবাসীর সহযোগীতায় পরিবারটিকে পুণর্বাসনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।