সুনামগঞ্জে বিএনপি-যুবলীগ নেতার দ্বন্দ্ব: সেনাবাহিনীর সাথে গোলাগুলি, রাজমিস্ত্রির লাশ উদ্ধার
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুন ২০২৫, ৪:৪৫ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্কঃ
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সেনাবাহিনীর অভিযানকালে সন্ত্রাসীদের সাথে গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। গোলাগুলির পর ঘটনাস্থলে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত আবু সাঈদ (৩১) পেশায় রাজমিস্ত্রি বলে জানা গেছে।
রোববার রাতে উপজেলার গাদালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভুঞা বলেন, গোলাগুলিতে একটা নিরীহ লোক মারা গেছে। তবে তিনি কার গুলিতে মারা গেছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নিহত আবু সাঈদ পার্শ্ববর্তী দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের তারাপাশা গ্রামের তাজ মিয়ার ছেলে। তিনি ওই গ্রামে একটি নতুন বাড়ি নির্মাণের কাজে এসেছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা বর্তমান চেয়ারম্যান যুবলীগের নেতা একরার হোসেন ও একই গ্রামের বাসিন্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আতিকুর রহমানের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। এর জেরে দুদিন ধরে গ্রামে উত্তেজনা চলছিল। উভয় পক্ষের মধ্যে গত শুক্রবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন ও গুলির ঘটনা ঘটে। এর আগেও দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্র প্রদর্শনও হয়েছে প্রকাশ্যে।
রোববার বিকেলে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের ধরতে ওই গ্রামে অভিযান চালায়। খবর পেয়ে হাতিয়া গ্রাম থেকে সন্ত্রাসীরা নৌকায় করে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী জগন্নাথপুর উপজেলার গাদালিয়া গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেয়। সেনাবাহিনী সেখানে গিয়ে ওই গ্রাম ঘেরাও করলে সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় সেনাবাহিনীও গুলি করে। পরে ওই এলাকায় রাজমিস্ত্রি আবু সাঈদের লাশ পাওয়া যায়।
জগন্নাথপুর থানার ওসি মাহফুজ ইমতিয়াজ ভুঞা বলেন, যেখানে ঘটনা ঘটেছে, সেটি হাওরের দুর্গম এলাকা। ওই এলাকায় যেতে নৌকায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে।
এ ব্যাপারে সিলেটে সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, শুক্রবার একরার হোসেনের লোকজনের সঙ্গে আতিকুর রহমানের লোকজনের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে এবং একজন গুলিবিদ্ধ হন। একরার হোসেন ও তার অনুসারীরা প্রায়ই ওই এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে আসছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সুনামগঞ্জ থেকে রোববার সেনাবাহিনীর একটি টহল দল অস্ত্রধারীদের ধরতে হাতিয়া গ্রামে অভিযান চালায়। বিকেলে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি দেখে একরার পক্ষ সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনীও গুলি চালায়। পরে একরার বাহিনীর সন্ত্রাসীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালাতে শুরু করে।
তিনি বলেন, টহল দল ওই স্থানে গিয়ে একজনের মরদেহ দেখতে পায়। ওই ব্যক্তি কার গুলিতে মারা গেছেন, সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যৌথ বাহিনী সেখানকার অস্ত্রধারীদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।