সিলেট বিভাগের বিএনপিকে ঢেলে সাজানোর নির্দেশ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ
ওয়েছ খছরুঃ
সিলেট বিভাগে বিএনপিকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনকে কেন্দ্রের তরফ থেকে এই নির্দেশনা দেয়া হয়। সোমবার দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে; সিলেট বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা, থানা কমিটি থেকে শুরু করে মহানগর ও জেলা কমিটির সম্মেলন ও কাউন্সিলের মাধ্যমে আগামী ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি সমাপ্ত করতে হবে। এ চিঠির অনুলিপি বিএনপি’র সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন ও মিফতাহ সিদ্দিকীর কাছে পাঠানো হয়েছে।
পত্রের নির্দেশনায় আরও জানানো হয়েছে; পত্র প্রাপ্তির পর দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদ্বয়, মহানগর ও জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের বৈঠক করে অতিসত্বর কার্যক্রম শুরু করতে হবে। চিঠি প্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করেছেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী। তিনি জানিয়েছেন- ‘আজই (গতকাল) তারা পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে আলোচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।’ সিলেট অঞ্চলে বিএনপি’র শক্তিশালী ভিত রয়েছে। বিশেষ করে সিলেট জেলা ও নগর বিএনপি’র কমিটি গঠনে ২০১৬ সাল থেকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি গ্রহণ করা হচ্ছে। অর্থাৎ জেলা ও নগর বিএনপি’র সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক ভোটের মাধ্যমেই নির্বাচন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দুই টার্ম এ প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠন করা হচ্ছে। পরবর্তীতে জেলা ও নগর যুবদলের কমিটি গঠনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। বিরোধী দলে থাকার সময় সিলেটে দমন-পীড়নের মুখে ছিলেন সিলেট বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। হাজার হাজার নেতাকর্মী ছিলেন মামলার আসামি। কঠিন অবস্থায়ও সিলেট বিএনপি’র কাউন্সিল রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এতে করে দলও তৃণমূল পর্যন্ত গোছানো সম্ভব হয়। কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন- এবারো কেন্দ্রের তরফ থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দল গোছানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রথমে জেলায় ইউনিয়ন ও নগরে ওয়ার্ড পর্যায় থেকে দল গোছানোর কার্যক্রম শুরু করতে হবে। এতে সম্ভব হলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া গ্রহণ করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। আর এই প্রক্রিয়া তৃণমূল পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারলে দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সর্বাত্মক ভাবে শুরু হবে বলে মনে করেন নেতারা। সিলেটের নেতারা জানিয়েছেন- ২০২২ সালের ২৯শে মার্চ ঢাকঢোল পিটিয়ে সিলেট জেলা বিএনপি’র সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই সম্মেলনের আগে আহ্বায়ক কমিটির নেতারা করোনার মধ্যেও ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত দল গুছিয়ে নিয়ে আসেন। এরপর তারা একটি সফল সম্মেলন ও কাউন্সিল উপহার দেন। ওই সম্মেলনে জেলা বিএনপি’র সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী। এরপর ২০২৩ সালের ২১শে মার্চ কেন্দ্রের তরফ থেকে জেলা বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। সিলেট জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন- কয়েকদিন আগে তারা সিলেট জেলা বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সভা করেছেন। এই সভার পর তারা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত গিয়ে দলীয় কার্যক্রম গতিশীল করার তাগিদ অনুভব করেছেন। এরপর থেকে জেলার নেতারা তৃণমূল পর্যন্ত যাওয়া শুরু করেছেন। এদিকে জেলা বিএনপি’র সম্মেলনের পরের বছর ২০২৩ সালের ১০ই মার্চ মহানগর বিএনপি’র সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এ কাউন্সিলও সিলেটের রাজনীতিতে ব্যাপক সাড়া ফেলে। সম্মেলন শেষে কাউন্সিলে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন নাসিম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হন এমদাদ হোসেন চৌধুরী। আংশিক কমিটি গঠনের ২০ মাসের মাথায় ৫ই নভেম্বর নগর বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সময় নগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন সাবেক সহ-সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। এর আগে কয়েক মাস ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী।