বিদেশে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ৬:৫৬ অপরাহ্ণ
উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে প্রথমে লং ডিসট্যান্স স্পেশালাইজড এয়ার এম্বুলেন্সে করে লন্ডন নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর সেখানে থেকে তাকে তৃতীয় একটি দেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টারে নেয়া হবে। ইতিমধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও চিঠি দেয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামের শারীরিক সুস্থতার ওপর নির্ভর করে আমরা যাতে অতি দ্রুত উনাকে বিদেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারি আমরা সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছি। তার অংশ হিসেবে আমরা ‘লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার এম্বুলেন্সে’র ভাড়া করার জন্য কাজ শুরু করেছি, যোগাযোগ চলছে। প্রথমে ম্যাডামকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে স্টেওভারের পরে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টার যে দেশে আছে, সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। আমরা আশা করছি, সব কাজগুলো সম্পন্ন করেই অতিদ্রুতই ম্যাডামকে বিদেশে নিয়ে যেতে পারবো।
বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কেমন জানতে চাইলে ডা. জাহিদ বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। ম্যাডাম গুলশানের বাসায় আগের মতোই মেডিকেল বোর্ডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধায়নে আছেন। বলতে পারেন উনার অবস্থা স্থিতিশীল।
তিনি জানান, বেগম খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিমধ্যে তার বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাবেন, সে বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও তার কার্যালয় থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। কারণ ম্যাডামের সঙ্গে চিকিৎসক-নার্সসহ আত্মীয়স্বজন যারা যাবেন, তা জানানো হয়েছে।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের লিভার ট্রান্সপারেন্ট করতে হবে। এটি করতে যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র দুই-একটি সেন্টার রয়েছে। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানান, খালেদা জিয়াকে এমন এয়ার এম্বুলেন্সে বিদেশে নেয়া হবে, সেখানে সব ধরনের চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বর্তমান শর্ট ডিসটেন্সে চার ঘণ্টার যাওয়ার এয়ার এম্বুলেন্স রয়েছে যা সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডে রোগী নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু লন্ডন যেতে ১৪ ঘণ্টার লং ডিসটেন্স এয়ার এম্বুলেন্স পৃথিবীর কয়েকটি দেশে রয়েছে, সেসব দেশের সঙ্গে চিকিৎসকরা আলোচনাও করেছেন।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে আইসিইউতে রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে দীর্ঘ সময়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পরে সর্বশেষ ২১শে আগস্ট এভারকেয়ার হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন থেকে বাসায় ফেরেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। এই টিমে দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াও লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী কার্ডিওলজিস্ট ডা. জোবাইদা রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়ার কয়েকজন চিকিৎসকও রয়েছেন।