নেতাদের ‘হাত-পায়ে ধরা ও মলম মালিশ’ করেছেন সিলেট ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৫ অপরাহ্ণ
সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম সম্প্রতি সিলেট জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিলম্ব নিয়ে একটি আবেগঘন ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি গঠনের তিন বছর পূর্ণ হওয়ায় এই স্ট্যাটাস দেন তিনি।
২০২১ সালের এই দিনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেছিলেন। কমিটিতে মো. নাজমুল ইসলামকে সভাপতি ও রাহেল সিরাজকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়।
সেই সময় কেন্দ্রীয় কমিটিতে সিলেট জেলা থেকে চারজন সদস্য স্থান পান- জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খান, বিপ্লব কান্তি দাস, মুহিবুর রহমান মুহিব এবং কনক পাল অরূপ। এক বছরের জন্য ঘোষিত এ কমিটি তিন বছর পার করলেও এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
গতকাল, দায়িত্বের তিন বছর পূর্ণ হওয়ার প্রাক্কালে নাজমুল তার স্ট্যাটাসে কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য তিনি চারবার আবেদন করেছেন এবং চেষ্টা, তদবির, হাত-পায়ে ধরা এমনকি মলম মালিশ পর্যন্ত করেছেন। তবে, কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের কিছু নেতার কারণে তার এই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। তিনি তাদের নাম উল্লেখ না করলেও আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়েছেন যে, সিলেটের কিছু আওয়ামী লীগ নেতারও এতে অংশ রয়েছে। তার মতে, তাদের কিছু নেতার সমর্থন না থাকায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন পায়নি।
নাজমুল আরও উল্লেখ করেন যে, দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, দলীয় ঐক্য রক্ষার্থে তিনি এর বেশি কিছু বলতে চান না। তবে, তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বহীনতার কারণে শুধু সিলেট নয়, বরং পুরো দেশের ছাত্রলীগ শাখাগুলোও স্থবির হয়ে পড়েছে।
নাজমুলের এই স্ট্যাটাস ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, এবং তারা এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির পদক্ষেপের অপেক্ষায় রয়েছেন।
নাজমুল ইসলামের ফেসবুক স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ,সিলেট জেলা শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের আগামীকাল ০৩বছর পূর্ণ করবো,এই দায়িত্ব পালন কালীন সময়ে ব্যার্থতা আক্ষেপ একটাই তা হলো পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করতে না পারা,তবে আমি আমার বিবেকের কাছে সবসময় পরিস্কার ,কেননা এই তিন বছরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে সর্বমোট চার (০৪) বার পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দিয়েছি,চেষ্টা তদবির হাতে ধরা পায়ে ধরা মালিশ করা মলম দেয়া এমন কিছু বাদ রাখি নাই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য,দিনের পর দিন ঢাকা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন না করাতে পারার এই আক্ষেপ সবসময় থাকবে।
প্রশ্ন আসবে কেন অনুমোদন হয়নি ,কারা বাধা দিলেন ,সমস্যা কি ছিলো?উত্তর একটাই দলের এখন দুর্দিন,দুঃসময়ে এইসব বলে সংগঠনের অভ্যন্তরে আর বিভক্তি তৈরি করতে চাইনা,তবে মোটা দাগে যদি দায় দিতে হয় তবে অবশ্যই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি /সাধারণ সম্পাদক কে দিতে হবে,তাদের খামখেয়ালি ,তাদের অবহেলা,স্বেচ্ছাচারিতার আর জবাবদিহিতা না থাকার কারণে শুধু সিলেট জেলা ও মহানগর নয় বরং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রায় সকল সুপার ইউনিট একধরণের স্থবির হয়ে গিয়েছিলো ,আর স্থানীয় পর্যায়ে এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট আওয়ামীলীগের সাথে আমাদের দূরত্ব ছিলো যেহেতু আমরা তাদের বলয়ের বাইরে ছিলাম এবং সেই কারণে সিলেটের আওয়ামীলীগের অনেকেই চাননি জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ পূর্ণাঙ্গ হোক,কেননা আমাদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়ে গেলে সফল দের কাতারে আমাদের নাম অগ্রভাগে চলে আসবে এটা অনেকেই মেনে নিতে পারেননি বা মেনে নেয়া সম্ভব ছিলোনা ‘