শ্রীমঙ্গলে ত্রাসের আরেক নাম ‘স্টেপ সাগর’
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ জুলাই ২০১৯, ৩:৪৬ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইমানী হোসেন অন্তর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তার বন্ধুদের নিয়ে শ্রীমঙ্গল শহরের কলেজ রোড দিয়ে হাটছিলো। রেবতী টি স্টলের সামনে হঠাৎ ৭/৮ জন কিশোর ধারালো অস্ত্র দিয়ে অন্তরের উপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে অন্তরের বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানেও আঘাত করে এবং তার বাম হাতের রগ কেটে দেয়।
আহত ঈমানী হোসেন অন্তর সদ্য এসএসসি পরীক্ষা পাশ করে ঢাকার নটরডেম কলেজে চান্স পেয়েছে। সে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার জালালিয়া সড়কের জরিফ মিয়ার ছেলে ও শ্রীমঙ্গল পৌরসভার বর্তমান মেয়র মো. মহসীন মিয়া মধুর ভাতিজা। সহপাঠিকে নাম ধরে ডাকায় অন্তরের উপর এই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। হামলাকারীদের নেতৃত্বে ছিলো শহরের শ্যামলী আবাসিক এলাকার মৃত মিনাই মিয়ার ছেলে সাগর মিয়া।
১৬বছরের কিশোর সাগর মিয়া ইতোমধ্যে শ্রীমঙ্গল শহরের ত্রাস হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। একের পর এক হামলার ঘটনায় তার নাম উঠে এসেছে। কারো সাথে পান থেকে চুন খসলেই সে রক্ত ঝরাচ্ছে। রক্ত নেশায় উন্মত্ত এই কিশোরকে অনেকে ‘স্টেপ সাগর’ নামেও চিনেন।
ইতোমধ্যে ৫/৬ রক্তাক্ত হামলার ঘটনায় কিশোর সাগরের নাম উঠে এসেছে। হামলায় আক্রান্তদের অনেকেই তার সাথে আপোষ করতে বাধ্য হয়েছেন। আবার কয়েকটি মামলা আদালতে বিচারাধীন। অন্তর মারাত্মক আহত হবার পর আবারও আলোচনায় এসেছে সাগরের নাম। প্রকাশ্যে অন্তরকে রক্তাক্ত করার ছবিও ভাইরাল।
ঘটনার ৩দিন পেরিয়ে গেলেও ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসারত অন্তরের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন তারা বাবা আতিকুর রহমান জরিফ। তিনি জানান, সোমবার পর্যন্ত তার ছেলের ৪টি অপারেশন হয়েছে। বাম হাতের কোপে তার সবকটি রগ কেটে গেছে। এখনো জ্ঞান ফেরেনি।
অন্তরের উপর হামলার ঘটনায় তার বড় ভাই মোশারফ হোসেন রাজ ওইদিন রাতে শহরের সাগর মিয়া, শহরতলীর বিরাইমপুর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হামিদের ছেলে ইমন মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬ কে আসামি করে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এর পর থেকে তারা পলাতক আছে।
একাধিক সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে ১১ নভেম্বর একই স্থানে রেবতী স্টলের সামনে সন্ধ্যা ৬টায় কলেজ সড়কের বাসিন্দা সৈয়দ মুর্শেদ সালেহীন নাবিল রিক্সা যোগে বাসায় ফেরার পথে সাগর তার গতিরোধ করে রামদা দিয়ে কুপিয়ে বাম পা ও হাতের কবজি কেটে রক্তাক্ত জখম করে। সে বর্তমানে পঙ্গু। ওই মামলটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। এ ঘটনার কিছুদিন পর পৌর কমিশনার আলকাছ মিয়ার ছেলে বদরুজ্জমান নাইমকে কোর্ট সড়কে আটকিয়ে সাগর একই কায়দায় মারধর করে। এক পর্যায়ে তার হাতে থাকা দা দিয়ে কোপ দিলে কোনোমতে পালিয়ে বেঁছে সে প্রাণে রক্ষা পায়। এ ছাড়াও শহরে একাধিক সন্ত্রাসীক ঘটনায় সাগরের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে।
শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আব্দুছ ছালেক বলেন, ‘ অন্তরের উপর হামলার পরপরই সন্ত্রাসীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। মামলা নেওয়া হয়েছে। সাগর ও তার সহযোগীদের ধরতে বিভিন্ন স্থানে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।