মৌলভীবাজারে ছাত্রী মেসে যৌন হয়রানী : ৪ যুবক আটক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ মে ২০১৯, ৫:৫০ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজার সরকারী কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের দুই শিক্ষার্থী ও মৌলভীবাজার সরকারী মহিলা কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানি ও যৌন হয়রানীর অভিযোগে ৪ যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) মৌলভীবাজার মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্যে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম এ তথ্য জানান। এসময় মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আলমগীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন্।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় বুধবার (১৫ মে) দিবাগত রাতে মৌলভীবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। আটকৃতরা হলেন, নাভেদ (১৮), সায়েম (২৪), মুন্না (২২) ও লোকমান (২৪)। গত সোমবার রাতে মৌলভীবাজার মডেল থানায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধীত) ২০০৩ এর ১০/৩০ এই ধারায় মামলা দায়ের করেন শিক্ষক সুমন কান্তি দেব নাথ। মামলা নং-১৭।
থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মৌলভীবাজার শহরের সোনাপুর বড়বাড়ি শফিকুর রহামান শফিকের বাড়িতে ভাড়াটিয়া (মেস) থাকতেন মৌলভীবাজার সরকারী মহিলা কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী জাহানারা আক্তার জুলি, সরকারী কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সুইটি রাণী দেব ও বিউটি রাণী দেব। দীর্ঘদিন থেকে কলেজে আসা যাওয়ার পথে গতিপথ রোধ করে প্রেম প্রস্তাব, নানা অশ্লীল কথা ও অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তাদের উত্ত্যক্ত করত ওই সন্ত্রাসীরা।
গত সোমবার বিকেলে সুইটি রাণী দেবী কলেজের ইনকোর্স পরীক্ষা দিয়ে শহরের সোনাপুর বড়বাড়ি এলাকার ছাত্রী মেসের প্রবেশের পূর্বে বাসার ওঠানে বসে থাকা নাভেদ আহমদ তার সহযোগী সায়েম,মুন্না ও লোকমান তাকে উদ্দেশ্য করে নানা অশ্লীল কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলতে থাকে। এসময় সুইটি বাসায় থাকা তার অন্য দুই সহপাঠী জুলি ও বিউটিকে ঘটনাটি বলে। তারা ৩ জন ঘর থেকে বের হয়ে একসাথে এঘটনার প্রতিবাদ জানালে নাভেদ ও তার সহযোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে জুলি আক্তারের চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে তাকে যৌন নিপীড়ন করে।
এ সময় জুলির সহপাঠী সুইটি ও বিউটি প্রতিবাদ জানালে সায়েম, লোকমান ও মুন্নাসহ আরো ২-৩ জন তাদের দু’জনকে কিল ঘুষি ও লাথি মেরে জখম করে। ওই যুবকরা মিলিতভাবে তাদের যৌন নিপীড়ন করে। এরপর তারা ঘটনাটি মুঠোফোনে কাশিনাথ আলা উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক সুমন কান্তি দেব নাথকে জানালে তিনি তার কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বাড়ির মালিক ও নাভেদ আহমদের চাচা শফিকুর রহমানের কাছে বিচার প্রার্থী হন।
এই খবর শোনে নাভেদ আহমদসহ তার অন্যান্য সহযোগিরা যৌন হয়রানীর শিকার ওই ৩ জন মেয়ে শিক্ষার্থীসহ উপস্থিত সকলকে গালিগালাজ করে হেনেস্তা করে। তারা হুঁশিয়ারী দিয়ে বলে এনিয়ে মামলা মোকদ্দমা ও বাড়াবাড়ি করলে সবাইকে খুন ও জখমের ভয়ভীতি দেয়। এই ঘটনার পর সুমন কান্তি দেবসহ উপস্থিত সকলেই আহত জুলি,সুইটি ও বিউটি কে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ওখানেই তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ বিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের ইকোপার্ক এলাকা থেকে মামলার এজহারভুক্ত চার আমামী নাভেদ, সায়েম, মুন্না ও লোকমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।