মুক্তিযুদ্ধ : দেশ-বিদেশে সিলেটবাসীর গৌরবগাথা
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:২১:৩৮,অপরাহ্ন ২৬ মার্চ ২০২১
মিলু কাশেম:
আজ থেকে ৫০ বছর আগে ১৯৭১ সালের অগ্নি ঝরা মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তি পাগল বাংলার মানুষ যার যা কিছু ছিল তা নিয়ে স্বাধিনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন।নয় মাস ব্যাপি রক্তক্ষয়ি যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর আমাদের প্রত্যাশিত বিজয় আসে।এই যুদ্ধ জয়ের মধ্য দিয়েই বিশ্ব মানচিত্রে একটি আলাদা জাতিসত্বা হিসাবে বাংলাদেশের অস্তিত্ব স্বীকৃতি লাভ করে।মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের মানুষ কে দান করেছে ঐতিহ্যবাহী বীরত্ব পূর্ণ ইতিহাস ও রাষ্ট্রিয় পরিচিতি।
সিলেটের মানুষ তাদের সংগ্রামী ইতিহাস ঐতিহ্যের হাত ধরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এই চুড়ান্ত সশস্ত সংগ্রামে সর্বোতভাবে অংশ গ্রহন করেন।১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের রাত থেকেই প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুত ছিল সিলেট।
২৫ মার্চ সকাল থেকে সিলেটে লাঠি হাতে জনতার ঢল নামে। সিলেট আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই মিছিল ছিল স্মরন কালের বৃহত্তম মিছিল।শহরতলীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল এসে সমবেত হয় রেজিস্টারি মাঠে।সবচেয়ে বড় লাঠি মিছিল আসে শহরতলীর টুকেরবাজার থেকে।আম্বরখানা পয়েন্টে দাড়িয়ে সেই মিছিল অবলোকন করার স্মৃতি আজও আমার মনে আছে।সেই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন সাদা পাঞ্জাবি আর লুঙ্গি পরিহিত টুকেরবাজারের আওয়ামীলীগ নেতা ছমির উদ্দিন। যিনি পরবর্তি তে টুকেরবাজার ইউ পি চেয়ারমান ছিলেন।
ঐদিন বিকালে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রেজিস্টারি মাঠে তখনকার সময়ের সবচেয়ে বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।এই সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য ডাঃ আব্দুল মালিক।সভা পরিচালনা করেন যুবনেতা আখতার আহমদ।সভায় বক্তব্য রাখেন এম এন এ দেওয়ান ফরিদ গাজী,ডাঃ নুরুল হোসেন চঞ্চল, সিরাজ উদ্দিন আহমদ, শাহ মোদাব্বির আলী, মোঃ আশরাফ আলী,ইনামুল হক চৌধুরী, সদর উদ্দিন চৌধুরী, মকসুদ ইবনে আজিজ লামা,রফিকুল হক,সোয়েব আহমদ চৌধুরী প্রমুখ। জনসভা শেষে সেদিন রাত থেকেই সিলেটে তৎকালীন নেতৃবৃন্দ বৈঠকে বসে পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রস্তুতি শুরু করেন।
সেদিন রাতে দেওয়ান ফরিদ গাজী ও সিরাজ উদ্দিন আহমদ গোপনে আশ্রয় নেন হাওয়াপাড়ার নাহার মঞ্জিলে।পরে আওয়ামীলীগ নেতা এম এ মুনিমও আসেন সেখানে।সেদিন রাতেই সিলেট শহর ক্র্যাকডাউন হয়।শুরু হয়ে যায় পাক বাহিনীর গনহত্যা আর বাঙালীর মুক্তিযুদ্ধ। তার পরের ইতিহাস সবার জানা। ২৫ মার্চ দিবাগত রাত থেকে ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় পর্যন্ত দেশে বিদেশে সিলেটবাসীর অবদান ছিল এক অনন্য ঐতিহাসিক।
মুক্তিযুদ্ধের অানুষ্ঠানিক পরিকল্পনা সিলেট অঞ্চলেই শুরু হয়েছিল।মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মুজিবনগর সরকার গঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সিলেটের কৃতি সন্তানরা বিভিন্ন অঞ্চলে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেন।
এ বিষয়ে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো ৪ এপ্রিল সিলেটের তেলিয়াপাড়ায় কর্নেল ওসমানী, লে.কর্নেল আব্দুর রব,লে.কর্নেল সালেহ উদ্দিন মোহাম্মদ রেজা,মেজর কাজী নূরুজ্জামান, মেজর খালেদ মোশারফ,মেজর নূরুল ইসলাম, মেজর সাফায়াত জামিল,মেজর মইনুল হোসেন চৌধুরী,এবং অন্যন্যা সেনা অফিসাররা একত্র হয়ে কর্নেল এম এ জি ওসমানীর সভাপতিত্বে সর্বসম্মতি ক্রমে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগঠিত ভাবে সশস্ত্র যুদ্ধের জন্য মুক্তিবাহিনী গঠন করা হয়।এর ছয় দিন পর আগরতলায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠনের কথা ছিল।সেদিন তেলিয়াপাড়ার সেই সভায়
চার জন আঞ্চলিক কমান্ডার ও নিযুক্ত করা হয়।তারা ছিলেন মেজর কে এম সফিউল্লাহ, মেজর জিয়াউর রহমান,মেজর খালেদ মোশারফ ও মেজর আবু ওসমান চৌধুরী।
কিন্তু পরে এই সরকার গঠিত হয় ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথ তলায়।পরে বৈদ্যনাথতলার নাম করন হয় মুজিবনগর।এবং প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার তখন মুজিব নগর সরকার নামেই পরিচিতি পায়।অস্থায়ি মুজিব নগর সরকারের প্রধান সেনাপতি হিসাবে নিয়োগ লাভ করেন সিলেটের কৃতিসন্তান কর্নেল এম এ জি ওসমানী।পরবর্তিতে চিফ অব আর্মী স্টাফ হিসাবে নিয়োগ লাভ করেন সিলেটের আরেক কৃতি সন্তান কর্নেল এম এ রব।সহকারী চিফ অব স্টাফ হন কর্নেল এ আর চৌধুরী।
তাছাড়া সিলেটের কৃতি সন্তান মেজর চিত্ত রঞ্জন দত্ত,মেজর মইনুল হোসেন চৌধুরী, মেজর আবদুল ফাত্তাহ চৌধুরী, ক্যাপ্টেন আজিজুর রহমান,ক্যাপ্টেন এজাজ আহমদ চৌধুরী কর্নেল এম কে জেড জালালাবাদী,মেজর জেনারেল হারুন আহমদ চৌধুরী,ক্যাপ্টেন এম এ মোতালিব, লেফটেন্যান্ট ইমাম উজ জামান, লেফটেন্যান্ট শমসের মুবিন চৌধুরী সহ আরো অনেক সিলেটি সেনা ইপিআর পুলিশ বাহিনীর সদস্যও মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন।সশস্ত বাহিনী ছাড়াও অনেক সিলেটি বেসামরিক কর্মকর্তা কুটনীতিবিদ মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, আবুল মাল আবদুল মুহিত,তৌফিক ই এলাহী চৌধুরী, আবদুল হান্নান চৌধুরী, খসরুজ্জামান চৌধুরী প্রমুখ।
তাছাড়া ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বৃহত্তর সিলেট থেকে নির্বাচিত সকল জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন।শুধু একজন হবিগঞ্জের ডাঃ আব্দুল হাসিম পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেন।এর মধ্যে সিলেটের এম এন এ দেওয়ান ফরিদ গাজী ছিলেন মুজিবনগর প্রশাসনের নর্থ ইস্ট জোনের চেয়ারমান। তিনি ৪ ও ৫ নাম্বার সেক্টরের অধিনায়কের রাজনৈতিক উপদেস্টা এবং বৃহত্তর সিলেট ও কিশোরগঞ্জের মুক্তাঞ্চলের প্রশাসকের ও দায়িত্ব পালন করেন।
সিলেটের আব্দুস সামাদ আজাদ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশের পক্ষে ভ্রম্যমান প্রতিনিধি হিসাবে পূর্ব ইউরোপ সোভিয়েত ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন দেশের সমর্থন আদায়ে নিরলস কাজ করেন।এবং হাঙ্গেররীতে বুদাপেস্ট শান্তি সম্মেলনে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কথা বিশ্ববাসীকে অবহিত করেন।সিলেটের সন্তান হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী ভারতের নয়া দিল্লীতে মুজিবনগর সরকারের কুটনৈতিক প্রতিনিধির দায়িত্ব কৃতিত্বের সাথে পালন করে ভারতের জোড়ালো সমর্থন আদায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ত্বরান্বিত করতে অসামান্য ভূমিকা রাখেন।প্রবাসী সরকারে আইন সচিবের দায়িত্ব পালন করেন সিলেটের সন্তান আবদুল হান্নান চৌধুরী।
এর বাহিরেও দলমত নির্বিশেষে সিলেটে আরো অনেক রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বের অবদান রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন অক্ষয় কুমার দাশ, এ এইচ সাদত খান,বরুন রায়,ইসমত চৌধুরী,মানিক চৌধুরী,ইকবাল আহমদ চৌধুরী,সিরাজ উদ্দিন আহমদ,গুলজার আহমদ,বিজন বিহারী দাশ, মাহবুবুর রব সাদি,আকাদ্দস সিরাজুল ইসলাম,পীর হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
আমাদের মুক্তি সংগ্রামে সিলেটের ছাত্র ও যুব সমাজের রয়েছে ঐতিহাসিক ভূমিকা।অনেকেরই রয়েছে অসামান্য অবদান।তাদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলেন দেওয়ান নুরুল হোসেন চঞ্চল, আখতার আহমদ,ইনামুল হক চৌধুরী,ইলিয়াস আহমদ চৌধুরী, এম এ মুনিম,সদর উদ্দিন চৌধুরী, আশরাফ আলী, শাহ আজিজুর রহমান,মকসুদ ইবনে আজিজ লামা,বাবরুল হোসেন বাবুল,সাইদুর রহমান খান মাহতাব,ইফতেখার হোসেন শামীম, সোয়েব আহমদ চৌধুরী,সৈয়দ মহসিন আলী,নুরুল ইসলাম নাহিদ,রফিকুল হক, আব্দুল বাছিত,বেদানন্দ ভট্রাচার্য্য,মাসুক উদ্দিন আহমদ,ইয়ামিন চৌধুরি, শওকত আলী,এ টি এম মাসুদ টিপু,পুরঞ্জয় চক্রবর্তি,নিজাম উদ্দিন লস্কর, সোলেমান হোসেন(শহীদ সোলেমান)ওয়েসুর রহমান,ম,আ,মুক্তাদির প্রমুখ।
রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রাম ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের রনাঙ্গনে ও সিলেটের সাধারন মুক্তিযুদ্ধা ও সেনাবাহিনী, ইপিআর, পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত সিলেটিরা রেখেছেন গৌরবময় ভূমিকা।স্বাধীনতার জন্য শহীদ হয়েছেন সিলেটের অনেক ছাত্র শ্রমিক কৃষক সাধারন জনতা। মুক্তিযুদ্ধের এসব শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধা ,সৈনিকদের জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সহিত স্মরণ রাখবে।
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য সারাদেশে ৭৭৬ জন বিভিন্ন খেতাবে ভূষিত হন। এর মধ্যে সিলেটের ছিলেন ৪৭ জন।
তাদের মধ্যে বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন সিলেটের ৬ জন।এরা হলেন মেজর জেনারেল এম এ রব, মেজর জেনারেল সি আর দত্ত,ক্যাপ্টেন হারুন আহমদ চৌধুরী, ক্যাপ্টেন হারুন আহমদ চৌধুরী,ক্যাপ্টেন আজিজুর রহমান,সুবেদার আফতাব আলী,শহীদ নায়েক শফিক উদ্দিন চৌধুরী।
বীর বিক্রম খেতাব পেয়েছেন সিলেটের ১৯ জন।তারা হলেন মেজর মইনুল হোসেন চৌধুরী,
লেফটেনেন্ট শমমসের মুবিন চৌধুরী,তৌফিক এলাহি চৌধুরী, ক্যাপ্টেন বদরুননূর চৌধুরী, সুবেদার মেজর ফখর উদ্দিন চৌধুরী, ইয়ামিন চৌধুরী,শহীদ হাবিলদার জুম্মা মিয়া,শহীদ মাহমুদ হোসেন,শহীদ নীলমনি সরকার,শহীদ জগৎ জ্যোতি দাশ, শহীদ কনস্টেবল তৌহিদ,শহীদ মোজাহেদ, সিপাই রমিজ উদ্দিন,আব্দুল মালেক চৌধুরী,তাহের আলী,আব্দুর রহমান,আব্দুল হক,আব্দুল খালেক, আরব আলী।
বীর প্রতীক খেতাব লাভ করেন সিলেটের ২২জন বীর যোদ্ধা। তারা হলেন ক্যাপ্টেন আব্দুল মতিন,শহিদ রফিক উদ্দিন,মাহবুবুর রব সাদি,শহিদ নূর উদ্দিন আহমদ,মোহাম্মদ ইদ্রিস,ইনামুল হক চৌধুরী,আব্দুল হালিম,ফখর উদ্দিন চৌধুরী,আব্দুল মজিদ,সিরাজুল ইসলাম,শহিদ নায়েক রাশেদ আলী,শহিদ নায়েক আব্দুল মালিক,আতিকুল ইসলাম,মইনুল ইসলাম,মকবুল আলী,আবদুস সালাম,নান্নু মিয়া,আবদুল ওয়াহিদ, ফজলুল হক,সৈয়দ মঈন উদ্দিন আহমদ,আব্দুল কুদ্দুস,গোলাম মোস্তফা।
তাছাড়া সুবেদার আফতাব আলী একই সাথে বীর উত্তম ও বীর প্রতীক এবং আব্দুল মালেক চৌধুরী বীর বিক্রম ও বীর প্রতীক খেতাব অর্থাৎ ডাবল খেতাবে ভূষিত হন।
দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত সংগ্রাম আর ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর হাজার হাজার মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় আমাদের বিজয়।’৭১ এর মার্চ থেকে ডিসেম্বর অবরুদ্ধ এই নয় মাসে সারাদেশের ন্যায় আল বদর রাজাকার আল শামস দের সহযোগীতায় হানাদার পাক বাহিনী হত্যা করেছে নীরিহ মুক্তিকামী মানুষকে।হত্যা করেছে দেশের বুদ্ধিজীবিদের।এই শহীদ বুদ্ধিজীবিদের তালিকায় রয়েছে সিলেটের অনেক কৃতি সন্তানের নাম।
সিলেটি শহীদ বুদ্ধিজীবিদের মধ্যে আছেন ড.জি সি দেব,ডাঃ শামসুদ্দীন আহমদ, ডাঃ শ্যামল কান্তি লালা,অধ্যাপক আবদুল মুক্তাদির, নির্মল চৌধুরী,কর্নেল মুজিবুর রহমান চৌধুরী,ডাঃ সালেহ আহমদ,ডাঃ আবদুন নূর,এডভোকেট আবদুল হাফিজ,এডঃ সোনাহর আলী,এডঃ রাম বন্ধন ভট্রাচার্য,সৈয়দ সিরাজুল আবদাল,সাইদুল হাসান,ফয়জুর রব প্রমূখ।
মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বাঙালিদের রয়েছে অপরিসীম অবদান।বিদেশে কর্মরত প্রবাসীদের সংখ্যা এ সময় ব্রিটেনেই ছিল সবচেয়ে বেশী।আর ব্রিটেন প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে সিলেটিদের সংখ্যাই ছিল বেশী।তাই মুক্তিযুদ্ধের সূচনা লগ্ন থেকেই ব্রিটেন প্রবাসীরা শুরু করেন কর্ম তৎপরতা।অর্থ দিয়ে, সভা সমাবেশ বিক্ষোভ এর মাধ্যমে জনমত গড়ে,এমন কি ভারতে শরনার্থিদের জন্য খাবার চিকিৎসা সরঞ্জাম মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সরবরাহের ভেতর দিয়ে প্রবাসী সিলেটিরা উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা রাখেন।
এভাবে ইউরোপ আমেরিকা সহ পৃথিবির বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান রত সিলেটিরা দেশ মাতৃকার মুক্তি সংগ্রামে বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখেন।
সিলেটের সন্তান আবুল মাল আবদুল মুহিত সেই সময় আমেরিকায় পাকিস্তান দূতাবাসের ইকনোমিক মিনিস্টার ছিলেন।বিদেশে দায়িত্বশীল বাঙালি কর্মকর্তাদের মধ্যে তিনিই প্রথম বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন।তখন সিংগাপুরে কর্মরত সিলেটি সাংবাদিক এস এম আলীও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সিলেট অঞ্চলের মানুষ এক গৌরবময় ভূমিিকা পালন করেছেন।স্ব স্ব অবস্থান থেকে সিলেটের মানুষ রেখেছেন জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে অনন্য অবদান।যা জাতীয় ইতিহাসে দখল করে আছে উল্লেখ যোগ্য অধ্যায়।
আজ ৫০ বছর পেরিয়ে এসে স্বাধীনতার রজত জয়ন্তীতে স্মরন করছি শ্রদ্ধা ভরে মুক্তি সংগ্রামে নিহত সকল শহীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ,নির্যাতিত মা বোন সহ স্বাধীনতার মহানায়ক জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।যারা অমর হয়ে থাকবেন বাঙালি জাতীর ইতিহাসে।