সিলেটীদের ‘ফুরির বাড়ি ইফতারি’ প্রথা, গরিব পিতা-মাতার গলার কাটা
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ মে ২০১৯, ১:১২ পূর্বাহ্ণ
সাত্তার আজাদ:
সিলেটে ইফতারি প্রথা। স্থানীয়ভাবে ‘ইস্তারি’ বলা হয়। এই প্রথার সার বিষয় হল, মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর রমজান মাসে কনের শশুরালয়ে হাক-ডাক আয়োজনে ইফতারি নিয়ে যাওয়া। কনের বিয়ের প্রথম বছর হলে রোজার শুরুতে একবার পরে ঘটা করে আরেকবার মোট দুইবার ইস্তারি দেওয়া হয়। এই ইস্তারি দিতে মিষ্টি, জিলাপি, চানা, খেজুর, পোলাও, দই, ফলমূল আরো কত কি লাগে।
একবার কি ভেবে দেখেছেন, এই ইস্তারি দিতে কনের গরিব পিতার-মাতার উপর কি পরিমাণ চাপ যাচ্ছে। একেকটি ইস্তারি দিতে ন্যুনতম চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মিষ্টি-মাষ্টি লাগে। পিতার পাঁচ কন্যা থাকলে সকলের বাড়িতে ইস্তারি দিতে কি যে অসুবিধায় পড়তে হয়, তা কি চিন্তা করেছেন। আপনি জানেন কি এই ইস্তারি দিতে কেউ কেউ ঘরের গরু-ছাগল বিক্রি করে। কেউ ধার-কর্জ করে। বর্তমানে ইস্তারি যেন ‘ফরজ’ হয়ে আছে। দিতেই হবে – এমন অবস্থা। ইস্তারি দেওয়ার বিষয় ধর্মভুক্ত নয়।
আসুন অপ্রয়োজনীয় এই ইস্তারি প্রথা বন্ধ করি। এটা সামাজিক অপসংস্কৃতি। আর এই অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হলে কনের পিত্রালয় থেকে নয়, শুরু হোক প্রতিবাদ বরের বাড়ি থেকে। বর পক্ষ বললেই হল, ইস্তারির প্রতি আমাদের ‘না’। যেমন আমরা যৌতুককে ‘না’ বলি। কেননা ঘুরেফিরে এটাও যৌতুকের অংশ।
লেখক- সাংবাদিক ও কলামিস্ট।