সিলেটে ২০ দলীয় জোটের মধ্যে ১৩টির দলের অস্তিত্বই নেই
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুলাই ২০১৬, ৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিশ দলীয় জোটে একমাত্র জামায়াত ছাড়া আর কোনো দল রাজনীতিতে সক্রিয় নয়। এর মধ্যে ১৩ দলের সিলেটে কোনো অস্তিত্বই নেই । মামলা-মোকদ্দমায় জর্জরিত জামায়াত নেতাকর্মীরাও মাঠছাড়া। এছাড়া স্থানীয় রাজনীতিতে ৩টি দলের কিছুটা রাজনৈতিক কার্যক্রম রয়েছে। ২টি দল হয়ে পড়েছে ব্যক্তিনির্ভর। সিলেটে ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (ওয়াক্কাস), খেলাফত মজলিসের (ইসহাক) কিছুটা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড রয়েছে।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), জাতীয় লেবার পার্টি ও বিজেপি ব্যক্তি নির্ভর থাকায় মহানগর বা জেলা কমিটি গঠনের মতো কর্মীও নেই এসব দলের। বাকি শরিকদের কোনো অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। অস্তিত্বহীন দলগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয় পার্টি (জাফর), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), সাম্যবাদী দল (সাঈদ), কল্যাণ পার্টি, ন্যাপ ভাসানী, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, মুসলিম লীগ, ডেমোক্রেটিক লীগ, ইসলামিক পার্টি ও পিপলস লীগ। অনেকটা ঢাকা কেন্দ্রিক এসব দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সিলেট বিভাগে নেই। এমনকি মহানগর বা জেলা কমিটি গঠনের মতো প্রয়োজনীয় জনবলও নেই এসব সংগঠনের। নামসর্বস্ব এসব রাজনৈতিক দলের কোনো জনবল না থাকায় সিলেটে বিএনপিকে জামায়াতের উপর ভর করেই আন্দোলন করতে হয়।
এদিকে, যুদ্ধাপরাধীর বিচার ইস্যুতে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে জামায়াত শিবির। তাদের সঙ্গে বিএনপির দূরত্বও সৃষ্টি হচ্ছে। ২০ দলীয় জোট থাকলেও এই দুটি দল রাজপথের আন্দোলনে এখন আর ঐক্যবদ্ধ নয়। পৃথকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে উভয় দল। নিকট অতীতে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা মাঠ সরব করে রাখলেও এখন দলটির নেতাকর্মীরা মাঠ ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছে। এছাড়া জোটের শরিক অন্যান্য দলের নেতাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্কই নেই জামায়াত-শিবিরের। যদিও সিলেটে ২০ দলীয় জোট থাকলেও ১৩টি দল একেবারেই নামসর্বস্ব। এ কারণে আন্দোলন-কর্মসূচিতে জামায়াত-শিবিরই বেশি তৎপর থাকে। ফলে বিএনপি ছাড়া অন্যান্য শরীকদের এসবের দায় নিতে হয়নি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, জোটে থাকার কারণে প্রকাশ্যে জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলা যাচ্ছে না। তাদের অভিযোগ, বর্তমান অবৈধ সরকারের পদত্যাগ এবং নতুন করে নির্বাচন বিএনপির আন্দোলনের লক্ষ্য হলেও জামায়াতের আন্দোলনের উদ্দেশ্য মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বানচাল করে তাদের আটক নেতাদের মুক্তি। তাই আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামে স্থানীয় বিএনপি এককভাবে রাজপথ উত্তপ্ত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সম্প্রতি গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার পর জোটসঙ্গী জামায়াত ছাড়াই বৃহত্তর ঐক্য গড়তে চায় বিএনপি। জোটের শীর্ষ নেতারা এমন ইঙ্গিতই দিচ্ছেন। জাতীয় ঐক্য নিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির জোটের বৈঠকেও আভাস মিলেছে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার। বৈঠকে জোটের এক নেতা বলেন, জামায়াত ২০দলীয় জোট ত্যাগ করলেই বৃহত্তর ঐক্য সম্ভব।