‘টাকার খনি’ সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই নজরুল
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৩৮:২২,অপরাহ্ন ৩১ জুলাই ২০১৬
সুরমা নিউজ : সিলেট কোতোয়ালি থানাধীন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই নজরুল ইসলাম বদলি করা হয়েছে। কয়েকবার এসআই নজরুল আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তার বদলি টেকালেও এবার আর পারেননি। অনেকটা নাটকীয়তার পর মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে তাকে ফাঁড়ি থেকে বদলি করে থানায় নেয়া হয়েছে।
এদিকে, পুলিশ নজরুল সিলেট মেট্রোপলিটনে পুলিশে চাকরির সুবাদে গড়েছেন সম্পদ। সিলেটের হকারদের কাছ থেকে ক্যাশিয়ার দিয়ে মাসোহারা ও নানা ধরণের অবৈধ বাণিজ্য করে নজরুল স্ত্রীর নামে সিলেট শহরতলীতে বাড়ির করার জায়গা ও কয়েকটি সিএনজি অটোরিকশাও ক্রয় করেছেন। এরমধ্যে কাগজপত্রবিহীন একটি অটোরিকশা নগরীতে অবৈধভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন নজরুল। এসব সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনেকেরই অজানা।
সূত্রে জানা যায়- সিলেট শহরতলীর ৬নং টুকেররবাজার ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের খুরুমখলা এলাকায় ২০১৫ সালে কানাডা প্রবাসী শফিকুর রহমান শফিকের কাছ থেকে বাড়ি করার জন্য ৫শতক জায়গা স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তারের নামে ২০ লাখ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন নজরুল। তার শ্বশুর বাড়িও ওই এলাকায় হওয়ায় ওই খানে বাড়ি করার জন্য জায়গা ক্রয় করেন নজরুল।
সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক থেকে প্রায় আড়াইশত গজ দূরে হাজী আব্দুস সাত্তার স্কুলের পাশেই জায়গাটি। এছড়াও তার রয়েছে দুটি সিএনজি অটোরিকশা। এর মধ্যে (সিলেট হ ১১ ৪২০৫) ও অপরটি (সিলেট হ ১৩ আবেদিত) এই অটোরিকশার পেছনে তার ছেলে ইফতি ও মেয়ে নিহার নাম রয়েছে। আবেদিত সিএনজি অটোরিকশার কোন ধরণের কাগজপত্র নেই। এই অনটেস্ট গাড়িটি এসআই নজরুল নগরিতে জেরপূবর্ক চালিয়ে যাচ্ছেন।
পুলিশ সূত্রে আরো জানা যায়- বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি ও থানা থেকে নজরুলকে অন্যত্র যাতে বদলি না-করা হয় সেজন্য নজরুল জোর তদবিরও চালিয়েছেন। তদবির চালিয়ে নজরুল ফাঁড়ি থেকে বদলী হলেও থানা থেকে বদলি হননি। ফাঁড়িতে থাকাকালীন সময়ে নজরুলের বেপরোয়া বাণিজ্যের চাহিদা পূরণ করতে হিমশিম খেতে হত এসআই, এএসআই ও কনস্টেবলদেরকে। তাকে বলা হত সিলেট কোতোয়ালি থানা পুলিশের ‘টাকার খনি’।
হকারদের কাছ থেকে নজরুল ফাঁড়ি এলাকা থেকে ক্যাশিয়ারের মাধ্যমে প্রতিমাসে মাসে ৩-৪ লাখ টাকা আদায় করে থাকেন। এমনকি বন্দরবাজার এলাকার ছিনতাইকারী, মোটরসাইকেল চোরচক্র, পতিতা সর্দারসহ সবাই তাকে ভয়ে টাকা দিতে হত। আর টকা দিতে কেউ ব্যর্থ হলে তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে আটকে রাখা হত। পরবর্তীতে টাকা পেয়ে তাকে আবার ছেড়ে দিতেন নজরুল। এমনকি প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বড় কর্তাদের ম্যানেজ করার কথা বহুবার সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন নজরুল।
সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহাম্মদ নজরুল ইসলামকে ফাঁড়ি থেকে বদলির বিষিয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন- তার বদলি একটি চলমান প্রক্রিয়ায় হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে নজরুল ইসলাম বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন থেকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ফায়াজ উদ্দিন ফয়েজ।