নির্বিচারে বনাঞ্চল ধ্বংস করাই মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের পাদদেশে টিলা ও ভূমিধ্বসের কারণ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ জুন ২০১৬, ১২:৩৯ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দু’দফা টিলা ও ভূমিধ্বসের ঘটনা ঘটেছে দেশের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক জলপ্রপাত মৌলভীবাজারের বড়লেখায় অবস্থিত মাধবকুণ্ডে। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেলো নির্বিচারে বনাঞ্চল ধ্বংস করাই মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের পাদদেশে টিলা ও ভূমিধ্বস ঘটেছে।
নতুন করে এবার জলপ্রপাতের পাদদেশে ভূমিধ্বস হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জুন) মূল জলপ্রপাতের ডানদিকের টিলার উপরের বেশ কিছু শিলাপাথর নীচে ধ্বসে পড়ে। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। খবর পেয়ে বনবিভাগ, এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ধসে পড়া স্থান পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন শেষে তারা জানিয়েছেন, আপাতত আর ধ্বসে পড়ার কোনো আশংকা নাই।
বনবিভাগ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, গত ১৮ মে রাতের বর্ষণে জলপ্রপাতের পানি পড়ার স্থানে অর্থাৎ জলপ্রপাতের পাদদেশে একটি টিলায় ফাটলের সৃষ্টি হয়। এতে জলপ্রপাতে যাওয়ার রাস্তার বেশকিছু অংশ নীচের দিকে দেবে যায়। ভমিধ্বসের কারণে পর্যটকদের বিশ্রাম নেওয়ার ছাউনি, পর্যটক পুলিশের চৌকি ও একটি শিবমন্দির ভেঙে পড়ে। জলপ্রপাতের পাদদেশ থেকে বড় বড় পাথর খসে পড়ে। আশংকা রয়েছে, আরও পাথর ধ্বসে পড়লে ওপর থেকে নেমে আসা পরীকুণ্ড ও মাধবকুÐের পানি প্রবাহের মুখ বন্ধ হয়ে যাবে। এতে জলপ্রপাতের নিচে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে আরও ভূমিধ্বস হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার রাতের বৃষ্টিপাতে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের পানি পড়ার স্থানের কাছে প্রায় ২’শ ফুট উঁচু টিলার একপাশ থেকে কঠিন শিলা ধ্বসের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বুধবার (১৫ জুন) সকালে সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, বড়লেখা উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ ভূষণ পাল, মৌলভীবাজার পাউবো’র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ ইমান আলী, জুড়ী রেঞ্জ-২ কর্মকর্তা কামরুল মোজাহিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নির্বিচারে মাধবকুণ্ড সংলগ্ন মাধবছড়া বনবিট ও পাথারিয়া বনাঞ্চল ধ্বংস করায় পাহাড়ের টিলায় ছোট ছোট নালিপথ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে হঠাৎ বৃষ্টিপাত হলে সেটা ভূমিধ্বসের কারণ হয়ে হয়ে দাঁড়ায়। মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতসহ ইকোপার্কটি অক্ষত রাখতে হলে ভূতত্ত¡বিদের পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত জরুরী। নতুবা সরকারের রাজস্ব আয় হ্রাস ও পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে।
এ বিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, পর্যটকদের আতঙ্কিত হবার কিছু নাই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে জানিয়েছেন-আপাতত আর ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা নেই। এর আগে জলপ্রপাতে যাওয়ার রাস্তায় ফাটল দেখা দেয়ায় তা অস্থায়ীভাবে মেরামত করা হয়েছে। আগামী জুলাই মাসে ধ্বসে পড়া স্থানে স্থায়ীভাবে মেরামত কাজ করা হবে।