শিশু জাতির স্থপতি
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৪৭:০৬,অপরাহ্ন ৩০ মার্চ ২০২৩
মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান:
আজকের শিশু জাতির আগামী দিনের স্থপতি। সুন্দর ও সভ্য জাতি গঠনের জন্য প্রয়োজন এমন সুন্দর পরিবেশ যেখানে জাতির ভবিষ্যৎ স্থপতিগণ সকল সম্ভাবনাসহ সুস্থ, স্বাভাবিক ও স্বাধীন মর্যাদা নিয়ে শারীরিক ও মানসিক, নৈতিক, আধ্যাত্মিক এবং সামাজিকভাবে পূর্ণ বিকাশ লাভ করতে পারে। আল্লাহ তা’আলা মানব জাতিকে অগণিত নিয়ামত দান করেছেন। এসব নিয়ামতের মধ্যে শিশু-সন্তান অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে- ‘‘আল্লাহ তোমাদের জন্য তোমাদের নিজস্ব প্রজাতি থেকেই জুড়ি সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের সে জুড়ি থেকে তোমাদের জন্য সন্তান-সন্ততি ও পৌত্র-পৌত্রী সৃষ্টি করেছেন। আর তোমাদের দিয়েছেন উত্তম জীবনোপকরণ। তবুও কি তারা মিথ্যাতে বিশ্বাস করবে এবং তারা কি আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
একজন নারী এবং পুরুষের বৈধ দাম্পত্য জীবনের আবেগ উচ্ছাসপূর্ণ প্রেম-ভালবাসা পরিপূর্ণতা লাভ করে মানব শিশুর মাধ্যমেই। তাই শিশু-সন্তান হচ্ছে দাম্পত্য জীবনের পুত:পবিত্র পুষ্প বিশেষ। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে সন্তান আল্লাহ তাআলার সেরা উপহার। সন্তান ঘরের শোভা, খায়ের ও বরকত এবং দীন-দুনিয়ার কল্যাণে বাহন। শিশু-সন্তান পার্থিব জীবনের মান-মর্যাদা বৃদ্ধি করে এবং জীবনের সাহায্যকারী হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই শিশুর মর্যাদা ও মূল্য মানবজীবনের সীমাহীন। পবিত্র কুরআনে ব্যাপারটি এভাবে বলা হয়েছে- ‘‘ধন-সম্পদ ও সন্তান- সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য ও সুখ-সমৃদ্ধির বাহন।
শিশুর অস্তিত্বের সঠিক মুল্য দিতে না পারলে অন্যান্য অধিকার কখনই আদায় করা যাবে না অথবা অন্যান্য অধিকার আদায়ের সুযোগই পাওয়া যাবে না। কিংবা সুযোগ এলেও তার অধিকার আদায়ে সফল হওয়া যাবে না। কাজেই শিশুর সঙ্গে সঠিক আচরণের জন্য তার যথার্থ মর্যাদা অবগত হওয়া অত্যাবশ্যকীয় বিষয়। পৃথিবীতে অগণিত মানুষ রয়েছে যাদের সম্পদের অভাব নেই, কিন্তু তা ভোগ করার জন্য কোন সন্তান নেই। হাজার চেষ্টা-সাধনা এবং কামনা না করেও বহু সন্তানের পিতা-মাতা, কিন্তু তাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ নেই। কাজেই কারো সন্তান হওয়া না হওয়া একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারণ হয়। এ প্রসঙ্গে কুরআনের ঘোষণা- ‘‘নভোজগত ও ভূ-জগতের আধিপত্য কেবলমাত্র আল্লাহরই। তিনি যা ইচ্ছা তাই সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা দান করেন পুত্র ও কন্যা শিশু উভয়ই। আর যাকে ইচ্ছে তাকে করে দেন বন্ধ্যা। তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।’’
মানুষ যত বিত্ত বৈভব ও বৈষয়িক শক্তি-ক্ষমতার অধিকারীই হোক না কেন, অন্যদের সন্তান দান তো দুরের কথা তার ইচ্ছায় নিজ সন্তান জন্মদানের ক্ষমতাও তার নেই। এরপরও যদি কেই আল্লাহ ছাড়া অপর কোন মক্তি বা সত্তার সন্তান কামনা করে কিংবা তাকে সন্তানদাতা বলে বিশ্বাস করে, তার মত হতভাগ্য ও অপরিণামদর্শী আর কেউ নেই।
সন্তানই দীনি কাজের সাহায্যকারী ও উত্তরাধিকারী। দীনের প্রচার-প্রসার ও সংরক্ষণের সন্তানই উত্তরসূরী। এজন্যই নবী-রসূলগণ আল্লাহর দরবারে কামনা করতেন- ‘‘হে আমার রব! তুমি তোমার নিকট থেকে আমাকে একজন উত্তরাধিকারী দান কর। এ উত্তরাধিকার আমার ওয়ারিসও হবে এবং ইয়াকুবের পরিবারের মিরাসও পাবে। আর হে প্রভু! তাকে একজন পছন্দীয় মর্যাদাবান মানুষ বানাও।’’
অর্থাৎ, ইয়াকুব আ.-এর পরিবার থেকে দীনের যে আলো বিচ্ছুরিত হয়েছিল তার ওয়ারিস হবে এবং সে আলো কখনো নির্বাপিত হতে দেবে না। সন্তান কামনায় আরও একটি প্রার্থনা থেকে সন্তানের মর্যাদা ও মূল্য যে কত বেশি তা স্পষ্ট হয়ে যায়। কুরআনে বর্ণিত হয়েছে- ‘‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের জন্য এমন জুড়ি ও সন্তান-সন্ততি দান কর, যারা হবে আমাদের জন্য নয়ন শীতলকারী এবং আমাদেরকে কর মুমিন-মুত্তাকিদের জন্য অনুসরণযোগ্য নেতা।’’ আরও একটি প্রার্থনা- ‘‘হে আমার প্রভু! তুমি তোমার নিকট থেকে আমাকে পবিত্র সন্তান দান কর। অবশ্যই তুমি প্রার্থনা শ্রবণকারী। সু-সন্তান দুনিয়াতে যেমন মান-মর্যাদার মাধ্যমে তেমনি পরকালীন জীবনেও অফুরন্ত সওয়াব ও পুরষ্কারের মাধ্যম হয়ে থাকে। কারো জীবদ্দশায় যদি শিশু-সন্তানের মৃত্যু হয় এবং সে ইহলোকে যদি সবর ও ধৈর্যের সাথে শোক সহ্য করে, তাহলে ঐ শিশু-সন্তান আখেরাতের প্রত্যাশিত জান্নাতের ওসিলা এবং বিপুল সম্মানের অধিকারী হবে। তার জন্য জান্নাতে এক বিশেষ মহল তৈরি হবে এবং ঐ মহলের নাম হবে ‘শোকরের মহল’ বায়তুল হামদ। আবু মূসা আল-আশআরী রা. বলেন, নবী স. বলেছেন- ‘‘যখন কোন বান্দার শিশু-সন্তান মারা যায়, তখন আল্লাহ ফিরিশতাদের জিজ্ঞেস করেন, তোমরা আমার বান্দার শিশু সন্তানের রূহ কবয করে নিয়েছো? ফিরিশতারা জবাব দেন, জী-হাঁ, কবয করে নিয়েছি। আল্লাহ বলেন, তখন আমার বান্দা কি বলেছে? ফিরিশতারা জবাব দেন, প্রভূ! তোমার বান্দা তোমার প্রশংসা করেছে।’’ এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা বলেন- ‘‘আমরা তো আল্লাহরই এবং নিশ্চিতভাবে তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী’’ পড়েছে। একথা শুনে আল্লাহ ফিরিশতাদেরকে তাঁর বান্দার জন্য জান্নাতে একটি মহল তৈরির এবং সে মহলের নাম ‘শোকরের মহল’ রাখার নির্দেশ দেন।’’
হাদীসের অন্যান্য বর্ণনা থেকে জানা যায়, শিশু-সন্তান পিতা-মাতার জন্য জান্নাতের সুপারিশকারী হবে। পিতা-মাতার মৃত্যুর পরও সু-সন্তানের আমল এমন এক সাদকা হিসেবে পরিগণিত হবে, যার সওয়াব দুনিয়ায় থাকা পর্যন্ত তাদের আমলনামায় লেখা হতে থাকবে। হাদীস থেকে জানা যায় মৃত্যুবরণ করার সাথে সাথে মানুষের আমলের সুযোগ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু সে যদি সু-সন্তান রেখে যায় তাহলে তা এমন এক নেক আমল হবে যার সওয়াব লেখা হতে থাকে অনন্তকাল।
উপরোক্ত কুরআন ও হাদীসের বর্ণনা থেকে এটা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়, ইসলামের দৃষ্টিতে শিশু-সন্তানের মর্যাদা ও মূল্য অপরিসীম।
ইসলাম যে শিশু-সন্তানের প্রতি কত বেশি গুরুত্বারোপ করেছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় আল্লাহ তাআলার শিশুর নামে শপথের মধ্যে। আল্লাহ নিজেই শিশুর নামে শপথ করেছেন এভাবে- ‘‘না, আমি এ নগরীর নামে শপথ করে বলেছি, যখন তুমি এ নগরীতে অবস্থান করছো। আর শপথ করছি জন্মদাতার নামে এবং তার ঔরসে জন্মপ্রাপ্ত শিশু-সন্তানের নামে।
শিশুদের অপরিসীম গুরুত্বের কারণে মহানবী স.-এর হৃদয় জুড়ে ছিল শিশুদের প্রতি প্রবল ভালবাসা ও স্নেহ-মমতা। তিনি বলেন- ‘‘তোমরা শিশুদের ভালবাসো এবং তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করো।’’ তিনি আরো বলেন- ‘‘যে ব্যক্তি আমাদের ছোটদের প্রতি স্নেহ প্রদর্শন করে না এবং বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে না, সে আমাদের কেউ নয়।’’ মক্কা বিজয়ের পর রসূলুল্লাহ স. যখন বিজয়ী বেশে মক্কানগরীতে প্রবেশ করেন, তখন উটের উপর তাঁর সাথে ছিল একজন শিশু এবং একজন কিশোর। শিশুটি ছিলো রসূলুল্লাহ স.-এর বড় মেয়ে জয়নাব রা.-এর শিশু পুত্র আলী রা. ও কিশোরটি ছিল উসামা রা.। নবী নন্দীনী ফাতিমা রা.-এর শিশু পুত্র হাসান ও হুসাইন রা.-কে রসূলুল্লাহ স. যে কত গভীর ভালবাসতেন ইতিহাসে এর বহু ঘটনা উল্লেখিত আছে। রসূলুল্লাহ স.-এর এ শিশু প্রীতি কেবল নিজ পরিবারের বা অতি প্রিয় সাহাবীদের শিশুর মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিল না সকল শিশুর ব্যাপারেই তাঁর ছিল সমান দরদ। নবী স/ শিশুদের কান্না শুনতে পেলে সালাত সংক্ষিপ্ত করে দিতেন এবং বলতেন- ‘‘আমি সালাত দীর্ঘায়িত করার ইচ্ছায় দাঁড়াতাম, কিন্তু যখন কোনো শিশুর কান্না শোনতাম তখন সালাত সংক্ষিপ্ত করতাম যাতে মায়ের কষ্ট না হয়।’
ইহকালীন জীবনের জন্য যেমন শিশু সন্তানের গুরুত্ব হয়েছে, ঠিক পরকালীন জীবনের জন্যও শিশুদের গুরুত্ব কোন অংশে কম নয়। নিম্নোক্ত কুরআন ও হাদীসের উদ্বৃতি থেকে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠে। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে- ‘‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাঁদের সন্তানরাও ঈমানের পথে তাদের অনুসরণ করেছে, তাঁদের সে সন্তানদের আমরা তাঁদের সঙ্গে জান্নাতে একত্র করব।’’
এতে শিশু সন্তানকে সুসন্তান ও ঈমানের অনুসারী হিসাবে গড়ে তোলার গুরুত্ব বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ তাআলা এতে শিশু সন্তানকে সুসন্তান ও ঈমানের অনুসারী হিসেবে গড়ে তোলার গুরুত্ব বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ তাআলা আরো বলেন- ‘‘সদা প্রস্তুত জান্নাতে তারা প্রবেশ করবে, আর তাদের পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রী এবং তাদের সন্তানদের মধ্যে যারা পুণ্যবান হবে তারাও।’’
এদের জন্য ফিরিশতাদের একটি প্রার্থনা উল্লেখ করে কুরআনে এসেছে- ‘‘ওহে আমাদের রব! তুমি তাদেরকে সদা প্রস্তুত জান্নাতে প্রবেশ করাও, যার প্রতিশ্রæতি তুমি তাদের দিয়েছ। আর তাদেরকেও যারা তাদের পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্য থেকে নেককার হবে।
আল্লাহ নিজেই যখন নেককার সন্তানদেরকে জান্নাতী পিতা-মাতার সঙ্গে পরকালে একত্রে বসবাস করার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন, তখন সন্তানদেরকে নেককার হিসেবে গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা পিতা-মাতার অন্যতম দায়িত্ব। উপরিউক্ত বর্ণনা থেকে শিমু-সন্তানের গুরুত্বের বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। জাতিসংঘ ঘোষিত শিশু অধিকার সনদের মূলনীতিসমূহে শিশুর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিধৃত হয়েছে। সনদে বলা হয়েছে, শিশু বিষয়ক যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণে শিশুর মা-বাবা, দেশের সংসদ, আদালত এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও কর্তৃপক্ষসমূহ শিশুর সর্বত্তোম স্বার্থ রক্ষার নীতি দ্বারা পরিচালিত হবে।’’
বস্তুত মানব শিশু তথা সকল প্রাণীর বাচ্চা এমনকি উদ্ভিদ জগতের জন্ম ও সৃষ্টি কৌশল আল্লাহর এক সীমাহীন কুদরত। মানবীয় প্রচেষ্টা এখানে অকার্যকর। পৃথিবীতে মানব প্রজন্মের ধারা এবং নারী ও পুরুষের ভারসাম্য রক্ষার্থে আল্লাহ তাআলার কুদরতের অন্যতম সৃষ্টি এ মানব প্রজন্ম তথা মানব শিশু। মানব শিশুর জন্মদান মানুষের ইচ্ছায় হয় না, এটা সম্পূর্ণ আল্লাহর ইচ্ছায় হয়ে থাকে।
মানব শিশুর গুরুত্বের কথা বিবেচনায় রেখে তাদের প্রতি যথার্থ আচরণ ও ব্যবহার করা সকলের দায়িত্ব। আধুনিক ভোগবাদী চিন্তাধারায় মানুষের সুখ-শান্তি ও ভোগের আকাঙ্খায় মানব শিশুর প্রতি নানা রকম নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ করা যায়। অনেক দম্পতি স্বাস্থ্যহানি ও ভোগের সুযোগ কমে যাবে মনে করে সন্তান গ্রহণ করতে চায় না। অনেকে তো বিয়ে করতেও রাজি নয়। তারা চায় বিবাহ বন্ধনহীন উচ্ছৃঙ্খল জীবন। বিয়ের বন্ধন ছাড়াই তারা যৌন জীবন আগ্রহী। জন্ম নিয়ন্ত্রণের কলাকৌশলের কারণে এসব অবৈধ কাজ অনেক সহজ ও নিরাপদ হয়ে গেছে। একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ ও মুসলমানের সুসন্তান কামনাই স্বাভাবিক। একজন ভাল মানুষ অবশ্য শিশু-সন্তানের উজ্জ্বল সমৃদ্ধ জীবন কামনা করে। কাজেই একজন ভাল মানুষের কাছে মানব শিশু গুরুত্ব অপরিসীম।
মানব শিশুর সঙ্গে পিতা-মাতার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর স্নেহ-মমতা ও ভক্তি-শ্রদ্ধার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। পাশ্চাত্যে পিতা-মাতা ও সন্তান-সন্ততির মাঝে যে সম্পর্কের চিত্র লক্ষ করা যায় তা অন্যান্য প্রজাতির সঙ্গে তুলনা করা যায়। সন্তান সে ছেলে বা মেয়ে যাই হোক প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পিতা-মাতা তাদের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে নেয়, তাদের কোনো দায়িত্বই বহন করতে চায় না। ঘর থেকে তাদের বের করে দেয়। এমনকি তখন সন্তান যদি পিতার ঘরের কোনো কিছু ব্যবহার করে, তা হলে তাকে সে জন্য দস্তুরমত ভাড়া দিতে হয় এবং একজন ভাড়াটের মতই তাকে সেখানে থাকতে হয়। এমনকি বিবাহ শাদীর ব্যাপারেও পিতা-মাতা কোনো দায়িত্ব বহন করতে রাজি হয় না। সন্তান যাকে ইচ্ছা বিবাহ করুক এ ব্যাপারে পিতা-মাতার কোনো মাথা ব্যাথা বা দায়-দায়িত্ব নেই। কিন্তু ইসলামী সমাজ ব্যবস্থায় মানব শিশুর সাথে আচরণ সম্পূর্ণ মানবিক। সন্তান-সন্ততিকে পূর্ণ প্রতিষ্ঠা করা এবং কন্যা-শিশু হলে সৎ পাত্রে পাত্রস্থ করা পিতা-মাতার অপরিহার্য কর্তব্য। এমনকি সারা জীবন পিতা-মাতা ও সন্তান-সন্ততি এক গভীর স্নেহ-মমতা, ভক্তিশ্রদ্ধা এবং আর্থিক প্রয়োজন পূরণে পরস্পর ওৎপ্রোতভাবে জড়িত থাকে। কাজেই ইসলামের দৃষ্টিতে মানব শিশুই সভ্যতার রক্ষাকবচ।
লেখক : কলামিস্ট-গবেষক মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান, পাঠান পাড়া, (খান বাড়ী) কদমতলী, সদর, সিলেট-৩১১১