মামলা না নেয়া ও অভিযোগ দীর্ঘদিন ফেলে রাখা সম্পূর্ণ বে-আইনী: সিজেএম
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ৭:০৭ অপরাহ্ণ
মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এক অফিস আদেশে বলেন থানায় মামলা না নেয়া ও অভিযোগ দীর্ঘদিন ফেলে রাখা সম্পূর্ণ বে-আইনী। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৮৯৮ এর ২৫ ধারার ক্ষমতাবলে মৌলভীবাজার জেলার জাস্টিস অব দি পিস হিসেবে অত্র আদেশ জারী করা হয়। আদেশে আরও বলা হয় উক্ত আদেশের কোনো ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রোববার ২৭ ফেব্রæয়ারি স্মারক নং-সিজেএম/মৌল/প্রশা-২০২২/৯৬(২১) মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মুহম্মদ আলী আহসান স্বাক্ষরিত উক্ত আদেশ জারি করেছেন।
আদেশে উল্লেখ করা হয় ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, মৌলভীবাজার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির আমল গ্রহণকারী আদালতসমূহে মামলা দায়ের করতে আসা অভিযোগকারীদের জবানবন্দি গ্রহণকালে তারা অভিযোগ করেন যে, সংশ্লিষ্ট থানায় আমলযোগ্য অভিযোগ দায়ের করতে গেলে নানা ভাবে মামলা এজাহার হিসেবে নেয়া হচ্ছে না। থানায় অভিযোগ/এজাহার দীর্ঘদিন ফেলে রাখা হয় যা সম্পূর্ণ বে-আইনী।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান-এর ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদে যথাক্রমে উল্লেখ আছে যে, সকল নাগরিক আইনের সামনে সমান এবং আইনের সমান সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী। আইনের সুরক্ষা উপভোগ করা, এবং আইন অনুসারে শুধুমাত্র আইন অনুসারে আচরণ করা, প্রত্যেক নাগরিক সে যেখানেই থাকুক না কেন এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অন্য প্রতিটি ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার, বেআইনী ভাবে কোন ব্যক্তির জীবনের স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির জন্য ক্ষতিকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না।
ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৫৪ ধারায় উল্লেখ আছে যে, সংবাদদাতা বা এজাহারকারী কোন আমলযোগ্য অপরাধের সংবাদ মৌখিকভাবে দিলে থানার অফিসার ইনচার্জ তা লিখে নিবেন অথবা তার নির্দেশিত অন্য একজন লিখে নিবেন এবং তা সংবাদদাতা বা এজাহারকারীকে পড়িয়ে শুনাবেন এবং উক্তভাবে লিখিত বা দাখিলকৃত (লিখিত) এজহারে অবশ্যই সংবাদদাতা বা এজাহারকারীর স্বাক্ষর নিতে হবে এবং তার সারমর্ম সরকার নির্ধারিত ফরমে লিখে থানায় বই আকারে সংরক্ষণ করতে হবে।
আরও লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনার সময় ওজন পরিমাপক যন্ত্র না থাকায় কি পরিমাণ মাদক জব্দ হয়েছে তা এজাহারে সুর্নিদিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয় না। যার ফলে স্বাভাবিক বিচার প্রক্রিয়া পরিচালনায় বিঘœ ঘটে। এমতাবস্থায় ভূক্তভোগী বা অভিযোগকারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমলযোগ্য অপরাধের মৌখিক বা লিখিত অভিযোগ এজাহার হিসেবে গণ্য করে এফআইআর রুজু করা এবং মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনার সময় ওজন পরিমাপক যন্ত্র সাথে নিয়ে জব্দকৃত মাদকের সঠিক পরিমাণ উল্লেখ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেয়া হলো।
এ বিষয়ে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, মাদ্রকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও জেলা আইনজীবী সমিতিকে অবগতি কার্যাথে জন্য অফিস আদেশের অনুলিপি দেয়া হয়। উক্ত আদেশের কোনো ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।