কারাগারে থেকেই সিলেট অঞ্চলের ডাকাতদের সামলাতেন সর্দার লিটন
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৫৯:৪২,অপরাহ্ন ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
সুরমা নিউজ:
সিলেটের বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর বাইপাস সড়কের মরমপুর-সুরিরখাল এলাকায় শুক্রবার দিবাগত রাতে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় পুলিশ-ডাকাতের গুলি বিনিময়ে ফটিক ওরফে লিটন নিহত হয়। তিনি উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের নওধার (উত্তরপাড়া) মৃত ইদ্রিছ আলীর ছেলে। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বসেই সিলেট অঞ্চলের ডাকাতদের সামলাতেন ফটিক ওরফে লিটন, এমনটাই বলছে পুলিশ। একই সাথে পুলিশ মনে করছে, লিটন সিলেট অঞ্চলের ডাকাতদের সর্দারও ছিলেন। জেলে থাকা অন্যান্য ডাকাতদের সাথে পরামর্শ করে তারা অন্য ডাকাতদের দিয়ে ডাকাতি করাতো। আর ডাকাতির বেশির ভাগ অর্থই পেতো লিটন।
পুলিশ আরও জানায়, লিটনের বিরুদ্ধে সিলেটের বিভিন্ন থানায় ১৮টি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে বেশির ভাগ মামলা অর্থাৎ ১১ মামলাই ডাকাতির আর ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা রয়েছে দুটি। এছাড়াও ৩ টি অস্ত্র মামলা, ১ টি ছিনতাই মামলাসহ অন্য আরেকটি অপরাধে আরো একটি মামলা রয়েছে। এসব মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
এসময় বিশ্বনাথ থানার তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন, এসআই মিজানুর রহমান, কনস্টেবল চন্দন গৌর ও কনস্টেবল রাসেল দাস। আহত অবস্থায় তাদেরকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
পুলিশ জানায়, একদল ডাকাত ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন খবর পেয়ে পুলিশ অভিযানে নামে। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ পালটা গুলি চালালে এক ডাকাত নিহত হয়।
তবে নিহত ডাকাত সর্দারের স্ত্রী হালিমা বেগম বলেন, আমার স্ত্রী ১৮ তারিখ আমার স্বামী জেল থেকে জামিনে মুক্ত হন। তবে জেল গেইট থেকেই আবার তাকে ‘সাদা পোশাকে’ একদল লোক তাকে নিয়ে যায়। এসময় আমার স্বামী আমাদেরকে বলেছিলেন, এরা ডিবির লোক আমাকে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর থেকে আর আমার স্বামীর সাথে করতে পারিনি। আজ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার স্বামীর ছবি দেখে তাকে সনাক্ত করি।
আর সিলেট জেলার পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম বলেন, সে কখন জামিন পেয়েছে বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। কারণ এটি আদালতের বিষয়। আর সে আমাদের কোন সদস্যর হেফাজতেও ছিল না। শুক্রবার দিবাগত রাতে একদল ডাকাত ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে শুনে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এসময় ডাকাতরা আমাদের পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি করলে পুলিশও নিজেদের রক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়ে। এতে লিটন নিহত হন।
লিটনের বিরুদ্ধে ১৮ মামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তের পরিবার বিভিন্ন রকম কথা বলতে পারে। তবে আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী লিটন জেলে বসেই ডাকাতদের নিয়ন্ত্রণ করতো। এছাড়া সে হয়তো জামিন পেয়েই আবার অন্যান্য ডাকাতদের সাথে আন্ডারগ্রাউন্ডে লুকিয়ে ছিল। সেজন্য পরিবারের কেউ তাকে খুঁজে পায়নি। কারণ ডাকাতির সাথে জড়িতরা বেশির ভাগ সময়ই আত্মগোপনে থাকে।
সিলেট ডাকাত প্রবণ এলাকা উল্লেখ করে পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ডাকাতদের বিরুদ্ধে পুলিশ জিরো টলারেন্সে আছে। আমরা প্রতিনিয়ত ডাকাতদেরকে গ্রেপ্তার করছি। একই সাথে ডাকাতি রোধে পুলিশের টহল বাড়ানোসহ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।