মৌলভীবাজারে বঙ্গবন্ধুর নামে হবে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:১৪:০৮,অপরাহ্ন ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০
সুরমা নিউজ:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া ও জুড়ীতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র স্থাপন হচ্ছে।
সূত্র জানায়, কুলাউড়া উপজেলার সিঙ্গুর পুঞ্জির পাশে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র’-০১ ও জুড়ী উপজেলার পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের ছোট ধামাই এলাকায় এক কোটি দুই লক্ষ টাকা ব্যয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র’ -০২ স্থাপনের জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই প্রকল্পের সম্ভাবতা যাচাইয়ের জন্য কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলার দুই ইউএনওকে নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিকভাবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সম্প্রদায়ের লোকজনদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এ লক্ষে আজ সোমবার উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও ফোর্থ আই আর এগ্রো ইনোভেশনস্ অ্যান্ড টেকনোলজিস্ লি. এর সহযোগিতায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায় সমূহের জীবনমান উন্নয়ন, নিরাপদ কৃষিপণ্য উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়নে উৎপাদক ও ব্যবসায়ীদের দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপজেলার সিঙ্গুর, ইছলাছড়া আমছড়ি পুঞ্জির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৪০ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেন।
এর আগে রবিবার জুড়ী উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে ইউএনও অসীম চন্দ্র বণিকের সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে উপজেলার বিভিন্ন পুঞ্জির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের ৬০ জনসহ কমলাচাষীরা অংশ নেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ এ কে এম সফি আহমদ সলমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জগলুল হায়দার, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিনা ইয়াসমিন, সিরাজ নগর চা-বাগান ব্যবস্থাপক শামীম আহমদ চৌধুরী।
সভায় বক্তারা বলেন, নিরাপদ খাদ্য এখন আর বিলাসিতা নয়, নিরাপদ খাদ্য আপনার অধিকার। সচেতন থেকে সকল কৃষিজাত পণ্যে উৎপাদন করতে হবে। আনারস, পান, আম, লিচু, কাঁঠাল, কমলা, ফুলকপি, বাধাকপি, মিষ্টি কুমড়া, কলা, পেঁপে, সাতকরা, লালশাক, কচুশাক, বেগুনসহ বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্যে নিয়ে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও বিপণনে কুলাউড়া ও জুড়ীতে প্রস্তাবিত কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র স্থাপনের সফলতা কামনা করে উক্ত প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উপজেলা পর্যায়ের প্রতিটি পুঞ্জির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের গ্রাম/পুঞ্জিকে কেন্দ্র করে একটি গ্রাম/পুঞ্জিতে এই প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদান করেন ফোর্থ আই আর এগ্রো ইনোভেশনস্ অ্যান্ড টেকনোলজিস্ লি. ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এগ্রো ইকোসিস্টেম উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ আহমদ ওয়াসিমুল বারী, ফোর্থ আই আর এগ্রো ইনোভেশনস্ অ্যান্ড টেকনোলজিস্ লি. এর চেয়ারপার্সন ও বাপমা’র সহ-সভাপতি কাজী গোলাম আলী সুমন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের সহকারী সমন্বয়ক কাজী মো. আনিসুর রহমান খান। এ সময় প্রশিক্ষণর্থীরা বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্যের ব্যবহার নিয়ে বিস্তর আলোচনা করে উদাহরণ তুলে ধরেন।
জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অসীম চন্দ্র বণিক ও কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি জুড়ী ও কুলাউড়া উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। উক্ত প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে কৃষিপণ্যের বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধি, বাজারজাতকরণ ও ন্যাযমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ ও নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত সম্ভব হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দুই উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজন অনেক লাভবান হবে।