কমলগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে জোটেনি সরকারি ঘর, জরাজীর্ণে বসবাস
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ৫:৫৫ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে অনেক স্বচ্ছলদের নামে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি ঘর বরাদ্ধ হলেও জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করা মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আজিরুন বেগমের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি ঘর। সরকারি দপ্তরে আবেদন করেও লাভ হচ্ছে না। পরিবার পরিজন নিয়ে অসহায় অবস্থায় মুক্তিযোদ্বা পরিবারটি জীবনযাপন করছে।
রহিমপুর ইউনিয়নের কালেঙ্গা গ্রামের মৃত সফিক মিয়ার বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এ করুণ দর্শার চিত্র দেখা যায়। মানবিক জীবন যাপন করা মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আজরিুন বেগম সরকারি ঘর বরাদ্ধ পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
জানা যায়, উপজেলা রহিমপুর ইউনিয়নের কালেঙ্গা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত শফিক মিয়ার স্ত্রী আজিরুন বেগম ২ ছেলে ৪ মেয়েসহ ১২ জনের সংসার। বড় ছেলে জয়নাল মিয়া ১২ বছর আগে নিখোঁজ হন। দ্বিতীয় ছেলে কামাল মিয়া বিবাহিত ও স্ত্রী ছেলেমেয়ে রয়েছে। রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। ৪ মেয়ের মধ্যে ২ জনের বিয়ে হয়েছে আর ২ জন অবিবাহিত। ২০০৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা শফিক মিয়া মারা যান। আজিরুন বেগেমের দ্বিতীয় ছেলে কামাল মিয়ার উপার্জিত টাকা এবং স্বামীর মাসিক ভাতা হিসেবে ১০০০০ টাকা দিয়ে ১২ সদস্যের অভাবের সংসার চলছে। পরিবার বড় হওয়ায় নিজের বসবাসকৃত ঘরটি জীর্ণদশায় পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধার পরিবারটি যে ঘরে বসবাস করছে তার অবস্থা করুণ। শোয়ার ঘর বলতে কিছু নেই। যে ঘরটিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি রাত কাটান, সেই ঘরটি ভাঙা ও টিনের চাল, টিনের বেড়া এবং রান্না ঘরটিও একই অবস্থা। অথচ ‘যার জমি আছে, ঘর নাই’ প্রকল্প মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে কমলগঞ্জে ৩ শতাধিক ঘর নির্মিত হয়েছে। কিন্তু প্রধানমনস্ত্রীর একটি ঘরও তার ভাগ্যে জোটেনি।
মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আজিরুন বেগম জানান, হঠাৎ বাতাস বইলে ও বৃষ্টি পড়লে ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে। এক ঘরে ১২ জন সদস্য গাদাগাদি করে রাত্রীযাপন করতে হয়। জরাজীর্ণ এই ঘরটি মেরামতের অর্থও তাদের কাছে নেই। যদিও তিনি নিজেই একাধিকবার একটি ঘরের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করলেও কোনো সুফল পাননি।
স্থানীয় এলাকার আব্দুল বাছিত জানান, একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বেহালদশায় অবস্থায় বসবাস করছেন দেখে কষ্ট হয়। এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। জনপ্রতিনিধিদের কোনো নজর নেই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মুজিবুর রহমান জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্ধকৃত ঘর সর্ম্পকে জানেন না। তবে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারটি ঘর নিয়ে চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করবেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্ঝামান বলেন, আজিরুন বেগেমের বিষয়টি এখন কিছু বলতে পারবেন না। ঘরে তালিকা দেখে বলতে পারবেন।