মৌলভীবাজারে একটি সেতুর অপেক্ষায় ৯ গ্রামবাসী
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:২৪:২১,অপরাহ্ন ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
সুরমা নিউজ:
একপাড়ে পশ্চিমবাজারের পৌরসভার খেয়াঘাট ওপর পাড়ে সাবিয়া খেয়াঘাট। এই পাড়ে মৌলভীবাজার জেলা শহর, ওই পাড়ে চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের অনেকগুলো গ্রাম। একটি নদের দূরত্বে একটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ শহরের নাগরিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
ওই নদের নাম মনু। মৌলভীবাজার শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে মনু নদটি। শহরের সাথে যোগাযোগ রক্ষার জন্য ওই পাড়ের মানুষ চায় ছোট একটি সেতু। যানবাহন চলাচলের জন্য নয়। কেবল হেঁটে চলাচলের জন্য। সেতুটি নির্মাণের দাবিতে ওই পাড়ের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে। তারা বিভিন্ন দপ্তরে একটার পর একটা আবেদন করেছেন। জেলা শহরে এসে কয়েকবার মানববন্ধনও করেছেন। কিন্তু কোনো কর্তৃপক্ষ তাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত করছেন না।
জানা গেছে, শীতে এই মনু নদের পানি কমে আসলে লোকজন খেয়া নৌকা ছাড়াই হেঁটে পারাপার করতে পারেন। বাঁশের সাঁকো দেওয়া হয়। যুবকরা সাকোঁ দিয়ে এপার ওপার করেন। তবে বর্ষায় নদটি যখন টইটম্বুর থাকে তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া নৌকায় পারাপার করতে হয়। অতীতে অনেকবার খেয়া নৌকা ডুবেছে। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।
সেতুর দাবিতে গত চার বছর ধরে আন্দোলনে লেগে থাকা বাবুল দেব বলেন, সেতু হলে সাবিয়া, বলিয়ারভাগ, গুজারাই, বালিকান্দি, ঢেউপাশা, গদাধর মমরুজপুর, আটাশপাইকা, মাহতাবপুর ও আশিয়া গ্রাম শহরের রূপ পাবে। মৌলভীবাজার পযর্টন জেলা শহরে অনেক যানযট নিরসন হবে। কয়েকটি গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল-কলেজ যাতায়াত হবে নিরাপদ। মা ও শিশু, বয়স্ক মানুষ রাতের বেলা চিকিৎসা সেবার জন্য দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে পারবে। কম সময়ে ও কম টাকা খরচে গ্রামগুলোর মানুষ শহরে আসতে পারবে।
ঢেউপাশা গ্রামের রজত কান্তি গোস্বামী জেলা শহরে বসবাস করেন। তিনি একটি সরকারি কলেজে অধ্যাপক। তারও দাবি, মৌলভীবাজারের পশ্চিমবাজারের পৌর খেয়াঘাটের স্থানে একটি সেতু হোক। কিন্তু তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, মৌলভীবাজারের মানুষ বা ভোটারদের মূল্য নাই। মৌলভীবাজার হচ্ছে সাইফুর রহমানের (বিএনপির সরকারের প্রয়াত অর্থমন্ত্রী) জেলা। ব্রিজ বা উন্নয়ন তো দূরের কথা, মৌলভীবাজার প্রথম শ্রেণির জেলা হলেও দ্বিতীয় শ্রেণির সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কাজেই উন্নয়নের দাবি করে লাভ হবে না। ২০০৯ থেকে গত ১০ বছরে সব জেলা সব পেয়েছে, মৌলভীবাজার জেলা কিছু পায়নি। আমাদের ভোটের কোনো মূল্য নাই। আমাদের ৫ এমপি, এক মন্ত্রী। সবাই উন্নয়ন প্রশ্নে শিথিল।
গুজারাই গ্রামের আবদুল কাইয়ুম বললেন, সরকার তো দেশে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করছে। আমাদের একটি সেতু করে দেওয়া তাদের কোনো ব্যাপারই না। কিন্তু এতো বার আমরা মানববন্ধন করলাম, স্মারকরিপি দিলাম। তারপরও কেউ আমাদের কথা শুনছে না কেনো?
মরুজপুরের সেকুল আহমদ জেলা শহরে ব্যবসা করেন। তিনি জানালেন, যদি একটি সেতু হতো তা হলে ৮-১০ গ্রামের মানুষ উপকৃত হতেন। কিন্তু সেতু হবার তো কোনো আলামত দেখছি না। আমরা বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করছি, মানববন্ধনে দাঁড়াচ্ছি। কেউ আমাদের এই আন্দোলন দেখছে বলে তো মনে হয় না।