শমশেরনগরে চা-শ্রমিক সংঘের সমাবেশ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ মে ২০১৯, ৫:৫৬ অপরাহ্ণ
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস ‘মহান মে দিবস’ উদযাপনের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির উদ্যোগে কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগরে সমাবেশ করেছেন চা শ্রমিকরা। রোববার সকাল সাড়ে ১১ টায় সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয় সম্মুখে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বাঁচার মতো মজুরি, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন ও অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারের দাবি জানানো হয়।
শমসেরনগরে চা-শ্রমিক সংঘের প্রবীণ চা শ্রমিক নেতা স্যামুয়েল বেগম্যান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি কবি শহীদ সাগ্নিক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি মো. নুরুল মোহাইমীন মিল্টন ও ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা। সমাবেশের শুরুতে সিলেট আইন মহাবিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যক্ষ, বিশিষ্ট আইনজীবী, ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক, পূর্ব-পাকিস্তান চা-শ্রমিক সংঘের কোষাধ্যক্ষ ও আইন উপদেষ্ঠা রাজনীতিবিদ এডভোকেট মনির উদ্দিন আহমদ এর মৃত্যুতে তাঁর অসমাপ্ত কাজকে অগ্রসর করার প্রত্যয়ে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চা-শ্রমিক সংঘের যুগ্ম -আহবায়ক হরিনারায়ন হাজরা প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৮৮৬ সালে রক্তঝরা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণি সামাজিক স্বীকৃতি এবং বিশ্বব্যাপী ৮ ঘন্টা শ্রম, ৮ ঘন্টা বিশ্রাম ও ৮ ঘন্টা বিনোদনের দাবি প্রতিষ্ঠিত করে। ৮ ঘন্টা শ্রম দিবস এবং মহান মে দিবসে ছুটি কারো দান নয় বরং শ্রমিক শ্রেণীর রক্তস্নাত পথে অর্জিত অধিকার। প্রয়াত চা-শ্রমিকনেতা মফিজ আলীসহ তৎকালীন চা-শ্রমিক নেতৃবৃন্দের ভ‚মিকায় ১৯৬৪ সালে ৩ মে শমসেরনগরে পূর্ব-পাকিস্তান চা-শ্রমিক সংঘের উদ্যোগে প্রথম মহান মে দিবস পালন করে। সেই সময় মে দিবসে চা-শ্রমিকদের ছুটি ছিল না। পূর্ব-পাকিস্তান চা-শ্রমিক সংঘের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে চা-শ্রমিকরা মে দিবসে আজও ছুটি ভোগ করছেন। দেড়শ বছরের বেশি সময় চা-শ্রমিকদের ছুটির দিনের মজুরি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছিল, চা-শ্রমিক সংঘের আইনী ও প্রচার আন্দোলনের কারণে ২০১৬ সাল থেকে চা-শ্রমিকরা ছুটির দিনের মজুরি পাচ্ছেন, যদিও সে ক্ষেত্রেও রয়েছে বে-আইনী শর্ত।
সমাবেশ থেকে বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে মাসিক ২০ হাজার টাকা মূল মজুরি হিসেবে দৈনিক ৬৭০ টাকা মজুরি, চা-শিল্পে নৈমিত্তিক ছুটি(বছরে ১০ দিন) কার্যকর ও অর্জিত ছুটি প্রদানে বৈষম্যসহ শ্রম আইনের বৈষম্য নিরসন করে গণতান্ত্রিক শ্রমআইন প্রণয়ন এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মজুরি ও উৎসব বোনাস প্রদানে সকল অনিয়ম বন্ধ করে শ্রমআইন মোতাবেক নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুক প্রদান এবং ৯০ দিন কাজ করলেই সকল শ্রমিককে স্থায়ী(পাক্কা দফা) করার দাবি জানানো হয়।