শেরপুরে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে শিক্ষার্থী হত্যা : সেই চালকের পক্ষে ধর্মঘটের ডাক!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ এপ্রিল ২০১৯, ৮:০৭ অপরাহ্ণ
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :
বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবি শিক্ষার্থী ঘোরী মো. ওয়াসিম আব্বাস হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া উদার পরিবহনের চালক ও সহকারীর পক্ষে আন্দোলনে নামছে পরিবহন শ্রমিকরা। চালক ও সহকারীকে হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানসহ ৭ দফা দাবিতে ২৯ এপ্রিল সকাল-সন্ধ্যা সিলেট বিভাগে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।
সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক ধর্মঘট আহ্বানের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুর্ঘটনার কারণে বাস চালক ও হেলপারের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু মামলার এজাহারে ৩০২ ধারা যুক্ত করা নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করেছি। এই ধারা বাতিল, পুলিশী হয়রানি বন্ধসহ ৭ দাবিতে আ্মরা ২৯ এপ্রিল কর্মবিরতি পালন করবো। বাংলাদেশের আইনে ৩০২ ধারায় উল্লেখ রয়েছে- যে ব্যক্তি খুন করে সেই ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থদন্ডেও দন্ডিত হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ মার্চ সন্ধ্যার দিকে নবীগঞ্জের টোলপ্লাজা থেকে সিলেটে আসার উদ্দেশে উদার পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-১৪:১২৮০) বাসে ওঠেন সিকৃবির কয়েকজন ছাত্র। এ সময় ওই বাসের চালকের সহকারী (হেলপার) মাসুক মিয়া তাদের কাছে ১০০ টাকা করে ভাড়া দাবি করেন। এতে ওয়াসিম ও তার বন্ধুরা ছাত্র পরিচয় দিয়ে ভাড়া কম দিতে চান। এতে মাসুক মিয়া ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান।
এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে নেমে যান। নামার সময় পেছন থেকে সহকারী মাসুক মিয়া তাদের গালি দেন। গালি শুনে ওয়াসিম বাসের সিঁড়িতে উঠে হাতল ধরে কেন গালি দিলেন তা জিজ্ঞেস করতেই চালক গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন। আর ঠিক তখনই মাসুক মিয়া ওয়াসিমকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে বাসের পেছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ওয়াসিম গুরুতর আহত হন। পরে তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক ওয়াসিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
২৫ মার্চ সিকৃবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় কুণ্ডু বাদী হয়ে মৌলভীবাজার সদর থানায় বাসের চালক, সহকারী ও সুপারভাইজার সেফুল মিয়াকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-২২)।
এ ঘটনায় পুলিশ চালক ও সহকারীকে আটক করলে তারা আদালতে শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দিও প্রদান করে।