সিলেটে গেজেটের ৭ দিন পর ভোট কারচুপির তথ্য দিলেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ মে ২০২৪, ৮:১১ অপরাহ্ণ
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোট হয় সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়। সেই ভোটের ফল প্রকাশের পর গেজেটও প্রকাশ হয়ে গেছে। এর ৭ দিন পর নির্বাচনে টেবিল কাস্টিংয়ের (ভোট কারচুপি) তথ্য জানালেন এক কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনকারী এক সহকারী প্রধান শিক্ষক।
সম্প্রতি উপজেলার দেওকলস দ্বিপাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক বিল্লাল হোসেনের টেবিল কাস্টিংয়ের তথ্য সংবলিত একটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। মঙ্গলবার এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমকাল প্রতিবেদকের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।
৮ মে ভোটের পর ১৪ মে প্রকাশিত গেজেট বিশ্বনাথ উপজেলায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান পদে বিএনপি নেতা (বহিষ্কৃত) সুহেল আহমদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান পদে যুবলীগ নেতা মুহিবুর রহমান সুইট ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে করিমা বেগমের নাম রয়েছে। তবে বিজয়ী প্রার্থীদের নামে গেজেট প্রকাশ হলেও ফলাফল প্রকাশের ৭ দিন পর হঠাৎ নোয়ারাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রধারীদের ব্যালটে সিল মারার বর্ণনা দিয়ে ভাইরাল হয়েছেন ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা বিল্লাল হোসেন।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ মে নির্বাচনের দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফল ঘোষণাকালে খাজাঞ্চী ইউনিয়নের নোয়ারাই ভোটকেন্দ্রের ফল নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এ সময় উপজেলা পরিষদ মাঠে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন ও দোয়াত-কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী সেবুল মিয়ার সমর্থকরা বিক্ষোভ করেন। এতে প্রায় ৪ ঘণ্টা বিলম্বিত হয় ফল প্রকাশ। এ নিয়ে ওই দুই প্রার্থী ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন এবং ফল প্রত্যাখ্যান করেন। সেখানে ওই প্রিসাইডং কর্মকর্তা উপস্থিত থাকলেও কিছুই বলেননি।
নির্বাচনের ৭ দিনের মাথায় ১৫ মে ওই প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেনের বর্ণনায় অস্ত্রধারীদের জোর করে ব্যালটে সিল মারা-সংক্রান্ত বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। পরবর্তী কয়েকদিনে তা ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিও বার্তায় বিল্লাল হোসেন বলেন, ভোটের দিন নোয়ারাই কেন্দ্রে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি অস্ত্রধারী দল তাঁর কক্ষে ঢুকে তাঁর মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের তিন ধরনের ব্যালটে ৫০০ করে দেড় হাজার সিল মারে। বেরিয়ে যাওয়ার সময় কাউকে কিছু বললে ক্ষতি করার হুমকি দেয়। পরে উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা স্বর্ণালী চক্রবর্তীর নির্দেশে তিনি ওই দেড় হাজার ব্যালট বাতিল রেখে ভোট গণনা করেন। আতঙ্কে তিনি সে সময় কিছুই বলতে পারেননি।
তবে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা স্বর্ণালী চক্রবর্তী বলেছেন, ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রধারীরা ঢুকে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে অস্ত্রের মুখে বন্দি করে ভোট দিয়েছে– এমন কোনো বিষয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ পাননি।
আর ইউএনও শাহীনা আক্তার জানান, নোয়ারাই কেন্দ্রের ওই ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।