সংকট নেই, চক্রের ফাঁদে পেঁয়াজ
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক :: দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ মজুদকালে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ঘাটতি থেকে যায়। এ ঘাটতি পূরণ হয় আমদানি করা পেঁয়াজে। এক্ষেত্রে আমদানির বড় একটি অংশ আসে পাশের দেশ ভারত থেকে। ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, গত শুক্রবার ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় দেশের বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজ ফুরিয়ে এসেছে। নতুন পেঁয়াজ উঠলেও তা চাহিদার তুলনায় কম। ফলে দাম বেড়ে গেছে।
শ্যামবাজার পেঁয়াজ পাইকার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মাজেদ বলেন, ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় দেশের বাজারে বড় প্রভাব পড়েছে। তাছাড়া গত কয়েক দিনের বৃষ্টির প্রভাবও রয়েছে। তবে কেউ কেউ আরও বেশি দাম বাড়িয়েছে।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, প্রতিবছর পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ছে। দেশে পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে ২৬ থেকে ২৮ লাখ মে. টন। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন ছিল ৩৪ দশমিক ৬০ লাখ মে. টন। মজুদকালে নষ্ট হওয়া ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ বাদ দিয়েও তা দাঁড়ায় ২৪ দশমিক ২২ লাখ মে. টন। এ সময় আমদানি অনুমতি দেওয়া হয় ২৪ দশমিক ৮৩ লাখ মে. টন এবং আমদানি হয় ৭ দশমিক ৪৩ লাখ মে. টন। অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশি ও আমদানিকৃত মিলিয়ে দেশে পেঁয়াজের প্রাপ্যতা ছিল ৩১ দশমিক ৬৫ লাখ মে. টন। অর্থাৎ চাহিদার চেয়ে ৩ দশমিক ৬৫ লাখ মে. টন বেশি ছিল। শুধু তাই নয়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আবাদ বেড়েছে। তাই এবার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৭৩ লাখ মে. টন। নতুন পেঁয়াজ এরই মধ্যে বাজারে উঠছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যও বলছে, প্রতি বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয় প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয় প্রায় ৮ লাখ মে. টন। এছাড়া এ বছর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে আরও প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে। এখান থেকে উৎপাদন হবে প্রায় ৫০ হাজার মে. টন। এই মুড়িকাটা ও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু হয়েছে এবং বাজারে থাকবে আগামী তিন থেকে সাড়ে তিন মাস। এর পর মূল পেঁয়াজ আসা শুরু হবে।
জানা গেছে, গত শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ২৬টি ট্রাকে করে ৭৪৩ টন ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে ঢুকেছে। আরও বেশকিছু ট্রাক বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে। একই দিন সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ২০টি ট্রাকে প্রায় ৬০০ মে. টন পেঁয়াজ এসেছে। অর্থাৎ ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও এখনই বাজারে এত দাম বাড়ার কথা নয়।