টুকেরবাজারে চোখ মেয়র আরিফের
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:০০:৪৬,অপরাহ্ন ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
সুরমা নিউজ ডেস্কঃ
হাতে খুব কম সময়। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এরপর নতুন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী দায়িত্ব পালন শুরু করবেন। বিদায়ের আগে নগরের বর্ধিত অংশে নজর দিয়েছেন আরিফুল হক চৌধুরী। বিশেষ করে শহরতলীর টুকেরবাজারে
চোখ দিয়েছেন তিনি। টুকেরবাজার বছর খানেক আগেও ছিল ইউনিয়নের অধীনে। এবার সিলেটের প্রবেশমুখ মানুষের কাছে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুনামগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্র, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাইপাস সড়ক অবস্থিত হওয়ার কারণে সব সময় ব্যস্ত থাকে এই এলাকা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ওই এলাকায় যানজটে আটকা থাকতে হয়।
যানজটের মূল কারণ হচ্ছে; সড়ক ও জনপথের ভূমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করার কারণে রাস্তা সরু হয়ে গেছে। পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থাও নাজুক।
একটু বৃষ্টি হলে গোটা কুমারগাঁও পানিতে তলিয়ে যায়। প্রায় দুই মাস আগে প্রবল বর্ষণে এই এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ওই সময় সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ড্রেন ও ছড়া উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রায় ২০ বছর আগে টুকেরবাজারে ড্রেনেজ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ড্রেনগুলো ভরাট হয়ে যায়। এ কারণে গোটা টুকেরবাজার এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে ড্রেনের উপর স্থাপনা ভেঙে দিয়ে, আবার কোথাও ড্রেন ভেঙে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলররা জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ রোডের প্রবেশ মুখ আম্বরখানা থেকে টুকেরবাজার পর্যন্ত যানজট কমাতে রাস্তা প্রশস্তকরণ করা হচ্ছে। মদিনা মার্কেট পর্যন্ত কাজ শুরু হয়েছে। এখন টুকেরবাজারে কাজ শুরু হবে। কিন্তু ৬ মাস আগে সওজ বিভাগ ও সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সরকারি জমি ছেড়ে দিতে ভবন ও মার্কেটের মালিকদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নোটিশ দেয়া হয়েছিল। এরপর মাইকিং ছাড়াও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। কিন্তু কয়েকশ’ দখলদার তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়নি। অবশেষে গতকাল সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়েছে। এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নিজেই। সকালে বাইপাস ব্রিজের মুখ থেকে অভিযান শুরু হয়। ওই ব্রিজের পাশেই মেসার্স রাজা মিয়া স্টোর। দোকানের মালিক সরকারি জায়গা দখল করে দোকানের সামনের অংশ নির্মাণ করেন। সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা সামনের অংশ ভেঙে দেন। অভিযান শেষে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, টুকেরবাজার থেকে ভার্সিটি গেইট থেকে এই অভিযান চালানো হবে। একই সঙ্গে রাস্তা নির্মাণ করা হবে। গতকাল শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।
তিনি বলেন- ড্রেনেজ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হওয়ার পাশাপাশি রাস্তায় উভয় অংশে বর্ধিত করা হবে। বর্তমানে মদিনা মার্কেট, পাঠানটুলা এলাকায় এই কাজ চলছে বলে জানান তিনি। অভিযানকালে ওই এলাকার কাউন্সিলর আলতাফ হোসেন সুমন জানিয়েছেন, এই অভিযান হঠাৎ করে হয়নি। আগেই নোটিশ দেয়া হয়েছিল। কয়েক সপ্তাহ আগে মাইকিং করা হয়েছে। এরপরও কেউ সরে যাননি। এ কারণে এখন অভিযান চালানো হচ্ছে। স্থানীয় আরেক কাউন্সিলর হাজী উদ্দিন জানিয়েছেন, টুকেরবাজারে অভিযান চালানোর বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গোটা বাজার এলাকাকে পরিকল্পিতভাবে সাজাতে হলে আগে মূল সড়কের ড্রেনেজ ব্যবস্থা স্বাভাবিক ও রাস্তা প্রশস্তকরণ করা প্রয়োজন। এটি করা হলে পরবর্তীতে বাজারের ভেতরেও কাজ করা হবে। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, আগে ইউনিয়নে থাকার সময় কাজ হয়নি। এখন নগর হওয়ার কারণে কাজ হচ্ছে। এতে করে ওই এলাকার যানজট দূর হবে বলে জানান তারা। এদিকে অভিযানে সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমান খান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বজিৎ দেব উপস্থিত ছিলেন।