বালাগঞ্জে উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধ করে বিয়ের আপ্যায়নে প্রধান শিক্ষক
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:২৯:২৩,অপরাহ্ন ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
জাগির হোসেন, বালাগঞ্জ:
সিলেটের বালাগঞ্জের পূর্বপৈলনপুর ইউনিয়নের গালিমপুর হুরুন্নেচ্ছা খানম উচ্চ বিদ্যালয়। দুপুরে ঝুঁলছে দরজায় তালা। নেই কোনো স্টাফ ও শিক্ষার্থী। জানা যায়, হুরুন্নেচ্ছা খানম উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল আওয়ালকে বিদ্যালয় পরিদর্শনে যাওয়ার বিষয়টি পূর্বে নিশ্চিত করেই দুপুরে আড়াইটায় যান বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর। এসময় সঙ্গে ছিলেন বালাগঞ্জ সরকারি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ও সিনিয়র সাংবাদিক মো. লিয়াকত শাহ ফরিদি, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রবাসী মো. কামাল উদ্দিন, সাপ্তাহিক বালাগঞ্জ বার্তার সম্পাদক শাহাব উদ্দিন শাহিন প্রমুখ। তাঁরা যাওয়ার পর দেখতে পান- শিক্ষক, স্টাফ ও শিক্ষার্থী শূণ্য বিদ্যালয়। ঝুঁলছে দরজা গুলোতে তালা। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কে মুঠোফোনে অবগত করে বিদ্যালয় মাঠ ত্যাগ করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গালিমপুর হুরুন্নেচ্ছা খানম উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কে পরিচালনা করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মো. রোকন উদ্দিন। খুশিমতো বিদ্যালয় খুলেন এবং বন্ধ করেন। বিয়ে খেতে যান। প্রতিদিন দুপুর ১টায় প্রতিষ্ঠানে তালা দেয়া হয়।
এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রোকন উদ্দিন বলেন, আমার সংরক্ষিত ছুটি আছে আমি দিতে পারি। সেই ছুটি দিয়ে একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছি। পূর্বের অবগত করার বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কে অবগত করা হয়েছি কি না জানিনা, ওনি আমাকে জানায় নাই। আমাকে অবগত করে উপজেলা চেয়ারম্যান আসেন নি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে দুপুর ১টায় অবগত করলে ১টা ১৩মিনিটে প্রধান শিক্ষক কে জানাই। ৪টা পর্যন্ত স্কুল। প্রধান শিক্ষক কোন আইনে সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে গেলেন। এবিষয়টি নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলবেো এবং ম্যানেজিং কমিটির সভা ডেকে রেজুলেশন করে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পূবপৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, বিষয়টি খুবই লজ্জাজনক। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যা করেছে তা কাম্য নয়। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
বিষয়টির নিন্দা জানিয়ে বালাগঞ্জ বার্তার সম্পাদক শাহাব উদ্দিন শাহিন বলেন, এটি কাম্য নয় এবং নিন্দনীয় ঘটনা। উল্লেখ করে তিনি জানান, এবিষয়ে বিভাগীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার আফরোজা আতিক বলেন, পূর্বঅবগত করে- বিদ্যালয়ে কারো যাওয়ার কথা থাকলে তিনি সংরক্ষিত ছুটি নিতে পারেন না। বিয়ে খাবার বা যেকোনো কারণেই প্রধান শিক্ষক ঐচ্ছুক ছুটি নিতে পারেন।
বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কে তাঁদের আইন মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছি।